রবিবার, ১২ মে ২০২৪ইংরেজী, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১ বাংলা ENG

শাবিপ্রবি উপাচার্যের বিষয়টি রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করব: শিক্ষামন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার::

২০২২-০২-১১ ০৯:৩১:০৭ /

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের অপসারণে শিক্ষার্থীদের দাবি রাষ্ট্রপতির কাছে তুলে ধরা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি সন্ধায় শাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থদের উদ্দেশ্য এ কথা বলেন।


তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতিই উপাচার্যের নিয়োগ বা অপসারণের সিদ্ধান্ত দেন। এ কারণে শাবি উপাচার্যের অপসারণ বিষয়ে শিক্ষার্থীদের সব বক্তব্য রাষ্ট্রপতির কাছেই তিনি তুলে ধরবেন।


তিনি বলেন সব বিশ্ববিদ্যালয়ের একই সমস্যা। শিক্ষার্থীরা যেসব দাবি উথ্থাপন করেছে সবগুলোই যৌক্তিক।  তাদের এসব দাবি পূরন করার সব প্রক্রিয়া নেওয়া হয়েছে।  ইতিমধ্যে অধিকাংশ দাবি পূরন করা হয়েছে।

তিনি জানান, শিক্ষার্থীদের সব দাবি বিবেচনা নিয়ে যত দ্রুত সম্ভব বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতিও দ্রুত স্বাভাবিক করার পদক্ষেপ নেওয়া হবে।


হল খোলা আছে। এখন শিক্ষা কার্যক্রম কিভাবে স্বাভাবিক করা যায় সেটি নিয়ে আলোচনা করতে হবে।
মন্ত্রী সন্ধায় শাবিতে স্থাপিত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
পরে মন্ত্রী একাডেমিক ভবনে শিক্ষক প্রতিনিধিদের সঙ্গে রুদ্ধ দার বৈঠক করেন। বৈঠক শুরুর   ৫ মিনিট পরে ভিসি প্রফেসর ফরিদ উদ্দিন এসে যোগ দেন।


প্রায় ১০ মিনিট চলে এ বৈঠক। বৈঠক শেষে রেজিস্টার ইশফাকুল হোসেন সাংবাদিকদের জানান, মন্ত্রী একই কথা সেখানে বলেছেন। তিনি শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য জোর দেন।  ভিসির বিষয়টা মহামান্য আচার্য দেখবেন বলে বৈঠকে জানিয়েছেন মন্ত্রী ।

এর আগে সিলেট সার্কিট  হাউসে দুপুরে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে শিক্ষার্থীরা মোট আটটি দাবি তুলে ধরেন। পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র শাহরিয়ার আবেদীন বৈঠকে বসার আগে তাদের আট দফা দাবির কথা জানান।


পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র শাহরিয়ার আবেদীন বৈঠকে বসার আগে তাদের আট দফা দাবির কথা জানান। সেগুলো হলো—উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগ, ক্লাস-পরীক্ষা চালু, শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে হওয়া মামলা প্রত্যাহার, আড়াই শতাধিক শিক্ষার্থীর বন্ধ থাকা মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট চালু করা, পুলিশের গুলিতে আহত শিক্ষার্থী সজল কুণ্ডকে এককালীন আর্থিক সহযোগিতা দেয়া ও তার জন্য নবম গ্রেডের চাকরি নিশ্চিত করা, মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও ইয়াসমিন হককে ইমেরিটাস অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ দেয়া, সব বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা খাতে বাজেট বাড়ানো, পরীক্ষা পদ্ধতিতে কোডিং সিস্টেম কার্যকর করা, শিক্ষক নিয়োগে পিএইচডি এবং ডেমো ক্লাসের ভিত্তিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু করা।

উল্লেখ্য, শাবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের শুরু ১৩ জানুয়ারি। রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদ লিজার বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে তার পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন হলের কয়েক শ ছাত্রী। ১৬ জানুয়ারি বিকেলে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি ভবনে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেন। তখন শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা করে উপাচার্যকে মুক্ত করে পুলিশ। এরপর পুলিশ ৩০০ জনকে আসামি করে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা করে। সেদিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ। শিক্ষার্থীরা তা উপেক্ষা করে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে তার পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনে নামেন।

বাসভবনের সামনে অবস্থানের কারণে গত ১৭ জানুয়ারি থেকে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন ফরিদ উদ্দিন আহমদ। ১৯ জানুয়ারি দুপুর আড়াইটা থেকে উপাচার্যের পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আমরণ অনশনে বসেন ২৪ শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে একজনের বাবা হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ায় তিনি অনশন শুরুর পরদিনই বাড়ি চলে যান। ২৩ জানুয়ারি আরও চারজন ও ২৪ জানুয়ারি একজন শিক্ষার্থী অনশনে যোগ দেন। ২৩ জানুয়ারি রাত ৮টার দিকে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনের পানি ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। অবরুদ্ধ উপাচার্যের জন্য প্রক্টর, শিক্ষক সমিতির নেতা ও দুজন কাউন্সিলর খাবার নিয়ে গেলে শিক্ষার্থীদের বাধায় তারা বাসভবনে ঢুকতে পারেননি। ২৮ ঘণ্টা পর ২৪ জানুয়ারি রাত সাড়ে ১২টার দিকে বিদ্যুৎ সংযোগ চালু করেন তারা।

২৬ জানুয়ারি অনশন ভাঙার পর জাফর ইকবাল ও ইয়াসমিন হকের হাতে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগসহ পাঁচটি দাবি সরকারের উচ্চপর্যায়ে পৌঁছে দেয়ার জন্য তুলে দেন। এরপর ৬ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক পদ থেকে অধ্যাপক জহির উদ্দিন আহমদকে সরিয়ে দেয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে জানানো হয়, অসুস্থতার কারণে তাকে অপসারণ করা হয়েছে। ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কারণ দেখিয়ে প্রক্টরের পদ থেকে বৃহস্পতিবার আলমগীর কবীরকে অব্যাহতি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। শিক্ষার্থীদের পাঁচ দাবির মধ্যে জহির উদ্দিন আহমদ ও আলমগীর কবীরের অপসারণও ছিল।

 

সিলেটসানডটকম/এসএ

এ জাতীয় আরো খবর

এসএসসির ফল প্রকাশ ১২ মে

এসএসসির ফল প্রকাশ ১২ মে

তীব্র তাপপ্রবাহ:  স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা সাত দিন বন্ধ

তীব্র তাপপ্রবাহ: স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা সাত দিন বন্ধ

হাইকোর্টের আদেশ: রোজায় বিদ্যালয় বন্ধ

হাইকোর্টের আদেশ: রোজায় বিদ্যালয় বন্ধ

সিলেট ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন

সিলেট ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন

ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস থেকেও বঙ্গবন্ধুকে মুছে ফেলার চেষ্টা হয়েছিল: নাসির উদ্দিন খান

ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস থেকেও বঙ্গবন্ধুকে মুছে ফেলার চেষ্টা হয়েছিল: নাসির উদ্দিন খান

জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজে  আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন

জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন