২০২৪-০২-২১ ১০:১৮:৪৯ / Print
‘প্রভাতফেরী, প্রভাতফেরী
আমায় নেবে সঙ্গে,
বাংলা আমার বচন,
আমি জন্মেছি এই বঙ্গে।’
আজ ২১ ফেব্রুয়ারি (বুধবার) বিনম্র শ্রদ্ধা ও গভীর কৃতজ্ঞতায় মাতৃভাষার জন্য আত্মদানকারী শহীদদের স্মরণের মধ্য দিয়ে সিলেট ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়েছে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০২৪।
মহান শহীদ দিবসের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানকে সুসজ্জিত করা হয়। দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে প্রভাতফেরী, ভাষা শহিদদের প্রতি পুষ্প অর্পণ, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন এবং হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ মুক্তিযুদ্ধের সকল শহিদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুরু হয়। অনুষ্ঠানে অধ্যক্ষ লে. কর্নেল মো. রোকনুজ্জামান খাঁন, পিএইচডি, এইসি; উপাধ্যক্ষ, শিক্ষকমণ্ডলী, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের কার্যক্রম শুরু হয়। আলোচনা সভায় মহান ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন নির্বাচিত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। এরপর শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে একক ও দলীয় সংগীত, নৃত্য, অভিনয় এবং আবৃত্তিতে ভাষা আন্দোলনের তাৎপর্য ফুটিয়ে তোলা হয় যা উপস্থিত সকলকে মোহিত করে। মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত রচনা, আবৃত্তি, ছড়া পাঠ ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ।
প্রধান অতিথির তার বক্তব্যে স্মরণ করেন বাঙালির মহাজাগরণের পথিকৃৎ, স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা ও মহান স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে।
তিনি বলেন, একুশে ফেব্রুয়ারির চেতনাই বাঙালি জাতীয়তাবাদের মূল উৎস। একুশে ফেব্রুয়ারিকে আমরা কেবল ভাষার অধিকার রক্ষার লড়াই ভাবলে ভুল করব। একুশ মানে মাথা নত না করা। একুশ হলো শোষকের বিরুদ্ধে শোষিতের, অসুন্দরের বিরুদ্ধে সুন্দরের ও অন্ধকারের বিরুদ্ধে আলোর চিরন্তন সংগ্রামের স্মারক।
ভাষা শহিদরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। এই দিনে আমাদের সব রকম অন্যায়, অত্যাচার শোষণ ও নিপীড়ণের বিরুদ্ধে মাথা উচু করে দাঁড়ানোর শপথ নিতে হবে। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের সূত্র ধরেই পরবর্তীতে বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলন ও ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান ঘটে।
এরই ফলশ্রুতিতে মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র লাভ করতে সক্ষম হই। তিনি সকলকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ থেকে ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হৃদয়ে লালন করে নিজেদের সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠার মাধ্যমে দেশগঠনে ভূমিকা রাখার আহবান জানান।
এর মাধ্যমেই সার্থক হবে ভাষা শহিদদের আত্মত্যাগ আর অগণিত মানুষের অবর্ণনীয় ত্যাগ-তিতিক্ষা। পরিশেষে তিনি অনুষ্ঠান আয়োজনে নিয়োজিত সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। অনুষ্ঠানের শেষে ভাষা আন্দোলনে শহীদের আত্মার শান্তি কামনা করে দোয়া করা হয়।