২০২৩-০৬-০৪ ২২:৩৩:০৯ / Print
আজ বিশ্ব পরিবেশ দিবস। এবছর দিবসের প্রতিপাদ্য ‘প্লাস্টিক দূষণ সমাধানে সামিল হই সকলে’। ১৯৭৪ সালে সম্মেলনের প্রথম দিন ৫ জুনকে জাতিসংঘ ‘বিশ্ব পরিবেশ দিবস’ হিসেবে ঘোষণা দেয়।
সেই থেকে প্রতিবছর বিভিন্ন দেশে ভিন্ন ভিন্ন প্রতিপাদ্যে দিবসটি পালিত হচ্ছে। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো: সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
বিশে^র অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন সংগঠন নানা ধরনের কর্মসূচি পালন করবে। এমন এক সময় বিশ^ পরিবেশ দিবস পালিত হচ্ছে যখন জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বৈশি^ক উষ্ণায়ন বৃদ্ধি পেয়ে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ছে।
একই সঙ্গে বৃদ্ধি পাচ্ছে ঘূর্ণিঝড়। বৃদ্ধি পাচ্ছে বন্যা ও খরার প্রবণতা। বাড়ছে তাপপ্রবাহ ও উষ্ণতা। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশ বিশে^র শীর্ষ ঝুঁকিপূর্ণ একটি দেশ।
বৈশি^ক মাত্র শূন্য দশমিক ৫৬ শতাংশ গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের জন্য দায়ী হলেও জলবায়ু পরিবর্তনে বাংলাদেশ বিশে^র অন্যতম শীর্ষ ক্ষতিগ্রস্ত দেশ। শুধু দেশ নয়, ভালো নেই সিলেটের পরবিশে-প্রকৃতিও। পু
কুর-জলাশয় ভরাট, পাহাড়-টিলা কাটা, নদীর নাব্যতা সংকট, শব্দ দূষণ, পানি দূষণ, পাথর রাজ্যে যন্ত্র দানবের তান্ডব, নদীগুলোকে ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত করাসহ নানা পরিবেশের বহুমাত্রিক সংকটে সিলেট। সিলেট মহানগরীর প্রতিটি খাল বা ছড়ায়ও আবর্জনার স্তূপ।
ছড়াগুলোতে পচা-বাসী গৃহস্থালি আবর্জনা থেকে শুরু করে পলিথিন, প্লাস্টিক বোতল, রাবার, কাচ-এর মতো অপচনশীল দ্রব্য ফেলা স্বাভাবিক বিষয়। এসব ময়লা ছড়া থেকে প্রবেশ করে সুরমা নদীতে।
অথচ সুরমা নদী সিলেটের প্রাণ। সিলেট নগরী সুরমা নদীকে কেন্দ্র করেই গড়ে ওঠেছে। সুরমার মতো কুশিয়ারা, খোয়াই, মনূ সহ অন্যান্য নদীও দূষণের শিকার। সংশ্লিষ্টদের মতে, গত ৩০ বছরে সিলেটের ৫০ ভাগ পরিবেশ নষ্ট হয়ে গেছে। পাহাড়-টিলা ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে।
সিলেট মহানগরে ও আশপাশ উপজেলায় প্রায় ৭০ ভাগ জলাভূমি, পুকুর ও দীঘি ভরাট। এ কারণে ধ্বংস হচ্ছে জীববৈচিত্রও। পরিবেশবিদরা বলেন, প্রায় দুই কোটি মানুষের সিলেট বিভাগে ভূমির সংকট আছে।
কিন্তু সেই সংকট সমাধানে প্রাকৃতিক পরিবেশকে গুরুত্ব না দিয়ে গত তিন দশকে নদী-বিল-হাওড় ভরাট ও দখল করে কৃষিকাজ, বনভূমি উজাড় করে বসতি নির্মাণ, পাহাড়-টিলা কেটে নগরায়ন, কৃষিজমিতে
শিল্পাঞ্চল প্রতিষ্ঠা যেভাবে চলছে তা সিলেটের প্রাকৃতিক রুপ-বৈচিত্র্যকে ক্রমান্বয়ে নিঃশেষ করে ফেলেছে। এদিকে, দূষণরোধে দশ বছর মেয়াদি কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন।
তিনি বলেছেন, বন সম্প্রসারণ এবং বন উজাড় ও অবক্ষয় রোধে ২০০৯-১০ হতে ২০২১-২২ আর্থিক সাল পর্যন্ত দেশে ১০ কোটি ৮৬ লাখ গাছের চারা বিতরণ ও রোপণ করা হয়েছে।
তিনি জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় যেকোনো দেশে শতকরা ২৫ ভাগ বনভূমি থাকা প্রয়োজন। বাংলাদেশে আছে মাত্র ১৫ দশমিক ৫৮ ভাগ।
১৯৬৮ সালের ২০ মে জাতিসংঘের অর্থনীতি ও সামাজিক পরিষদের কাছে একটি চিঠি পাঠায় সুইডেন সরকার। চিঠির বিষয়বস্তু ছিল প্রকৃতি ও পরিবেশ দূষণ সম্পর্কে তাদের গভীর উদ্বেগের কথা।
সে বছরই জাতিসংঘের পক্ষ থেকে পরিবেশ রক্ষার বিষয়টি সাধারণ অধিবেশনের আলোচ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। পরের বছর জাতিসংঘের পক্ষ থেকে পরিবেশ রক্ষার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা এবং সমাধানের উপায় খুঁজতে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সম্মতিতে সুইডেনের রাজধানী
স্টকহোমে ১৯৭২ সালের ৫ থেকে ১৬ জুন জাতিসংঘ মানব পরিবেশ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনটি ইতিহাসের প্রথম পরিবেশ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে স্বীকৃতি পায়।