২০২২-০২-১০ ১০:২৭:৫৯ / Print
উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করতে শুক্রবার সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে যাচ্ছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। ক্যাম্পাসে পৌঁছে তিনি আলোচনা করবেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে।
বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন মন্ত্রীর একান্ত সচিব আবু আলী মো. সাজ্জাদ হোসেন।
তিনি বলেন, ‘মন্ত্রী মহোদয় শুক্রবার সকাল ৮টার দিকে রওনা হবেন। শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছে তিনি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলবেন।’
সিলেটের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মজিবর রহমানও শিক্ষামন্ত্রীর সফরের বিষয়টি জানিয়েছেন।
অন্যদিকে, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মুখপাত্র মোহাইমিনুল বাশার রাজ জানান, অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবালের মাধ্যমে তারা তথ্যটি জেনেছেন।
মন্ত্রীর এই সফরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিতর্কিত উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের অপসারণের ইস্যু নিয়ে আলোচনা হবে বলে আশা করছেন শিক্ষার্থীরা।
মোহাইমিনুল রাজ বলেন, ‘কাল (শুক্রবার) শিক্ষামন্ত্রী আমাদের ক্যাম্পাসে আসবেন। জাফর ইকবাল স্যারের মাধ্যমে এ তথ্য আমরা জেনেছি। এছাড়া প্রশাসনের পক্ষ থেকেও মন্ত্রীর আসার কথা জানানো হয়েছে।
শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার প্রস্তুতি নিতে বৃহস্পতিবার রাতে ক্যাম্পাসে বৈঠকে বসছেন আন্দোলনকারীরা।
মোহাইমিনুল রাজ বলেন, ‘আমরা সংবাদ সম্মেলন করে আলোচনার জন্য শিক্ষামন্ত্রীকে শাবিতে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম।আমরাও তার অপেক্ষায় আছি। তিনি এলে উপচার্যের পদত্যাগসহ আমাদের দাবিগুলো পুরণ হবে বলে আশা করছি।’
অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবালের আশ্বাসে গত ২৬ জানুয়ারি অনশন ভেঙেছিলেন উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনরত সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সরকারের উচ্চমহল থেকে শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেয়া হবে- এমন আশ্বাস দেয়া হয়েছে বলে সেদিন জানিয়েছিলেন জাফর ইকবাল।
ওই দিন বিকেলেই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে তাদের দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।
উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে প্রায় প্রতিদিনই ক্যাম্পাসে নানা কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার দাবি আদায়ে ক্যাম্পাসে আলোক প্রজ্জ্বলন করেন তারা। বুধবার বিকেলে তারা ‘দাবি আদায়ের মিছিল’ করেন।
শাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সূত্রপাত হয় গত ১৩ জানুয়ারি। ওই দিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদে লিজার বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ এনে তার পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলনে নামেন হলের ছাত্রীরা।
এই দাবিতে আন্দোলন চলাকালে গত ১৬ জানুয়ারি উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করে রাখেন তারা। ওই দিন সন্ধ্যায় পুলিশ শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিচার্জ করে।
লাঠিচার্জের পর দুই পক্ষে সংঘর্ষ বেধে যায়। এরপর রাবার বুলেট এবং সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে উপাচার্যকে মুক্ত করে বাসায় নিয়ে আসে পুলিশ।
ওই রাতে জরুরি সিন্ডিকেট সভা ডেকে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা ও শিক্ষার্থীদের পরদিন দুপুরের মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ দেন উপাচার্য। এই নির্দেশনা উপেক্ষা করে ওই রাত থেকেই শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন।
পরদিন থেকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে টানা অবস্থান নেন তারা। সেখানে অনশনও শুরু করেন ২৮ শিক্ষার্থী। ২০ জানুয়ারি উপাচার্য ভবনের ফটকে ব্যারিকেড দিয়ে বাইরের কারও প্রবেশ বন্ধ করে দেন শিক্ষার্থীরা।
গত ২৬ জানুয়ারি সকালে শাবির অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও তার স্ত্রী অধ্যাপক ইয়াসমিন হকের আশ্বাসে শিক্ষার্থীরা অনশন ভেঙে উপাচার্যের বাসভবনের ফটকের ব্যারিকেড তুলে নেন।
সিলেটসানডটকম/এসএ