২০২৪-০৮-১৪ ২৩:১৯:৪৭ / Print
সিলেটে বিদ্যুতের যন্ত্রণা আগের মতোই রয়ে গেছে। গত দুইদিন ধরে গরম বাড়ার সাথে সাথে সিলেটে লোডশেডিংয়ের মাত্রা মারাত্মকহারে বেড়েছে। এতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
ঘণ্টায় ঘণ্টায় হচ্ছে লোডশেডিং। দিনরাত কোনো বিরতি নেই। সন্ধ্যা থেকে ভোররাত, সকাল থেকে বিকাল একঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকলে একঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে।
নাওয়া খাওয়া ঘুম থেকে শুরু করে ব্যবসা-বাণিজ্য কোনো কিছুতেই স্বস্তি মিলছে না। এই অবস্থা আবহাওয়ার উপর নির্ভর করা ছাড়া আর কোনো আশার কথা শুনাতে পারেনি বিদ্যুৎ বিভাগ। বৃষ্টিতে আবহাওয়া শীতল হলে কমবে চাহিদা, কমবে লোডশেডিংয়ের মাত্রা।
বিদ্যুৎ বিভাগ বলেছে গরমে চাহিদা বেড়েছে কিন্তু সেই আলোকে উৎপাদন বাড়েনি। তাই সরবরাহ কম থাকায় লোডশেডিং বেড়েছে। সিলেট বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সিলেট অঞ্চলে বিদ্যুতের ২১০ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ মিলছে ১৫৪ মেগাওয়াট। ফলে ঘাটতি ছিল ৫৬ মেগাওয়ার্ট।
এরমধ্যে সিলেট জেলায় ১৪৩ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ মিলছে ১০৩ মেগাওয়াট। জেলায় বিদ্যুতের ঘাটতি রয়েছে ৪০ মেগাওয়াট। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সিলেট বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবদুল কাদির জানান, গরম বাড়ায় চাহিদা বেড়েছে।
চাহিদার তুলনায় উৎপাদন বাড়েনি, ফলে সরবরাহ কম থাকায় ঘাটতি দেখা দিয়েছে। তাই লোডশেডিং করতে হচ্ছে। কাল বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। বৃষ্টিপাত বাড়লে চাহিদা কমবে, তখন লোডশেডিং কমে আসবে।
এদিকে গত দুইদিন থেকে বিদ্যুৎ না থাকায় গরমে মানুষের নাভিশ্বৃস উঠেছে। এমনকি নামাজের সময়ও থাকছেনা বিদুৎ। অনেকে অভিযোগ করেছেন প্রযুক্তির উৎকর্ষের সাথে এখন বেশিরভাগ মসজিদে শীতাতপ নিয়ন্ত্রনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
এটা করতে গিয়ে আগের মতো আলোবাতাস ঢুকার পথ বন্ধ করা হয়েছে। এসব মসজিদে নামাজের সময় বিদ্যুৎ না থাকলে চরম বিড়ম্বনাময় অবস্থা তৈরি হয়। লোডশেডিংয়ের মাত্রা চরম পর্যায়ে পৌঁছায় ঘরে বাইরে কোথাও একটু স্বস্তি মিলছেনা।
সারারাত থেমে থেমে লোডশেডিংয়ের পর সকালে যে একটু ঘুমাবেন তারও উপায় থাকছে না। ৬/৭টার সময় চলে যায় বিদ্যুৎ। একঘণ্টা পর এসে একঘণ্টা থেকে আবার চলে যাচ্ছে। গরমের কারণে এই দুর্ভোগ বেড়েছে অনেক। বুধবার সিলেটের তাপমাত্র ছিল ৩৪ ডিগ্রি।
তীব্র এই গরমে বিদ্যুৎ না থাকায় সেই মাত্রা বেড়েছে আরও কয়েকগুণ। তীব্র গরমে ঘেমে নেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন বেশিরভাগ মানুষ। অফিস-আদালতে কাজে নেমে এসেছে স্থবিরতা। ব্যবসা-বাণিজ্যে দেখা দিয়েছে মন্দাভাব। ব্যবসায়ীরা বলছেন জেনারেটর দিয়ে বিকল্প অবস্থায় বিদ্যুৎ চালাতেও এখন হিমশিম খেতে হচ্ছে।
দীর্ঘ সময় চলার কারনে জেনারেটর বিকল হয়ে যায়, তাছাড়া তেলে খরচ দিতে গিয়ে ব্যবসায় লাভের চেয়ে খরচ মেটানোই দায় হয়ে পড়েছে। এর উপর গত একমাসে আন্দোলনের সময় সবকিছুতে স্থবিরতা নেমে এসেছিল।
তাই এবার দেশে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তারা মনে করেছিলেন সবকিছুতে একটা গতি আসবে। কিন্তু বিদ্যুতের এই চিরাচরিত চরিত্র সব ম্লান করে দিচ্ছে।
তাই ব্যবসায়ীসহ সিলেটবাসী মনে করেন নতুন সরকার দ্রুত পুরানো জঞ্জাল মুক্ত করে অন্যান্য সেক্টরের মতো বিদ্যুৎ সেক্টরেও উন্নয়নের ছোঁয়া দিয়ে সংকট উত্তরণে পদক্ষেপ নেবেন। তারা বর্তমান এই সংকট মোকাবিলা ত্বরিৎ সিদ্ধান্ত নিয়ে বিকল্প পথে হলেও সিলেটবাসীকে স্বস্তি দেবেন।