২০২৪-০৪-০৮ ১৯:২৭:৩৯ / Print
'বাজেরে বাজে ঢোল আর ঢাক
এলো রে পহেলা বৈশাখ
আজ কৃষ্ণচূড়ার ডালে ঢেকেছে
লালে লালে সেই রঙ হৃদয়ে ছড়াক...’
গানের মতো করেই আর মাত্র কয়েকদিন বাদেই আসছে বাঙালির সার্বজনীন উৎসব পহেলা বৈশাখ। উৎসবপ্রিয় বাঙালি এর মধ্য দিয়ে জানান দেয় শত বছরের লোকজ ঐতিহ্যের।
প্রভাতী অনুষ্ঠানমালা আর বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা বাড়তি মাত্রা যোগ করে বর্ষবরণের এই আয়োজনে। তাই নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে রংপেন্সিল একাডেমি।
প্রতি বছরের মত এবারও মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করতে যাচ্ছে রংপেন্সিল একাডেমী। বাঙালীর সবচেয়ে বড় এই উৎসবকে বরণ করতে চলছে নানা আয়োজন। আবহমান বাংলা সংস্কৃতির বিভিন্ন রূপ ফুটিয়ে তুলতে দিনরাত কাজ করছেন প্রতিষ্ঠানের চারু শিক্ষার্থীরা।
সরেজমিন ধোপাদিঘীরপাড় রংপেন্সিল একাডেমিতে গিয়ে দেখা যায় শিক্ষার্থী আর শিক্ষকরা মিলে বৈশাখ বরণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। শিক্ষার্থীরা তৈরি করছেন লোকজ ঐতিহ্যের টাট্টু ঘোড়া, পালকি, নৌকা, টোপর, মঙ্গল সরা, মুকুট, রাখী ও পাখাসহ নানা উপকরণ।
এছাড়া বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের ধারক ডালা, কোলা, মাথাল, ঘোড়ার গাড়ি, লাঙ্গল-জোয়াল, পলো, কলসি, পাখি, ফেস্টুন, পাখা ইত্যাদি তৈরির কাজ করতেও দেখা যায় অনেককে।
একাডেমির শিক্ষার্থী পারমিতা দাস পৌষী, সুষ্মিতা দাশ, স্বর্নালী বিশ্বাস, রোহিত সরকার, সুনন্দন দাস, অরুনাভ কর অভ্র, মুগ্ধ আরও অনেকে দেখা গেল জাতীয় পশু বাঘ তৈরীতে ব্যস্ত।
কেউ বানাচ্ছেন পা, কেউ মুখ। নিখুঁতভাবে বাঘ তৈরী করছেন তারা। তাদের তৈরী বাঘ দেখে যে কেউ মনে করবে বনের বাঘ যেন চলে এসেছে লোকালয়ে।শিক্ষার্থী মুগ্ধ জানায়, তারা দীর্ঘ দিন ধরে কাজ করছেন।
পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে তারা বাঘের মুখোশ, পেঁচার মুখোশ, হাতির মুখোশ, রাজা রানির মুখোশ তৈরী করছে। শিক্ষার্থীরা প্রত্যেকেই জানান শেষ পর্যায়ে নিয়ে এসেছেন সব কাজ।
পহেলা বৈশাখ সকালে নগরীর ধোপাদিঘীরপার একাডেমীর সামনে থেকে বের হবে মঙ্গল শোভাযাত্রা। ওই দিন প্রদর্শিত হবে তাদের বানানো বৈশাখের অনুষঙ্গ। টানা তিনদিন চলবে তাদের অনুষ্ঠানমালা।
আগামী ২,৩ ও ৪ মে হবে চিত্র প্রদর্শনী। বৈশাখের প্রথম দিন সকাল ৯ টায় মঙ্গল শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে শুরু হবে উৎসবের। সমাপণী দিনে পুরষ্কার বিতরণ ও আলোচনা সভা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে একাডেমীর প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক পিংকু বৈদ্য জানান, ২০১১ সালে যাত্রা করে রংপেন্সিল একাডেমী। এরপর থেকেই নানাভাবে প্রতিষ্ঠানটি জাতীয় সব দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করে আসছে।
প্রতিষ্ঠার ৮ বছর পর নগরীর মিরের ময়দানে ২০১৮ সালে একাডেমির দ্বিতীয় শাখা প্রতিষ্ঠা করা হয়। তাদের প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা জাতীয় ও বিভাগীয় পর্যায়ে বিভিন্ন পদকে ভূষিত হয়েছে।
তিনি জানান, রংপেন্সিল একাডেমী সব সময় ব্যতিক্রম চিন্তা করে। একাডেমীতে যে কারুকাজ তৈরি করা হয়েছে সেগুলো সবই তার প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও নিজে মিলে তৈরি করেছেন।
তিনি বলেন জীবন সংগ্রামের দীক্ষা লাভের নানা রূপের সংমিশ্রণ ঘটে নববর্ষের সূচনালগ্নে। পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনেও বৈশাখের চেতনায় উজ্জীবিত হোক সবাই। নতুন ভবিষ্যৎ গড়ার প্রত্যয়ে সবাই হোক উদ্দীপ্ত এই প্রত্যাশা ব্যাক্ত করেন।