২০২৩-০২-২২ ২১:৫৮:১৯ / Print
মধুমাসের স্বাদ নিতে বাকি আর মাত্র কয়েক মাস। তবে সুখের ঘ্রাণ বইতে শুরু করেছে। গাছে গাছে ফুটছে আমের মুকুল।
চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে এই মুকুলের পাগল করা ঘ্রাণ। বাতাসে মিশে সৃষ্টি করছে মৌ মৌ গন্ধ। যে গন্ধ মানুষের মনকে বিমোহিত করে। পাশাপাশি মধুমাসের আগমনী বার্তা শোনাচ্ছে আমের মুকুল।
সুনামগঞ্জ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় সরেজমিনে দেখা যায়, গ্রামগুলোর মধ্যে খালি জায়গা, পুকুর পাড়, রাস্তার ধারে ও বাড়ির আঙ্গিনার গাছগুলোতে শোভা পাচ্ছে কেবলই আমের মুকুল।
মুকুলে মুকুলে ছেঁয়ে আছে গাছের প্রতিটি ডালপালা। চারদিকে ছড়াচ্ছে সেই মুকুলের সুবাসিত পাগল করা ঘ্রাণ। তবে আমের ফলন নির্ভর করছে আবহাওয়ার ওপর।
আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর আমের বাম্পার ফলনের আশা করছেন বাগান মালিকরা। এদিকে, মৌসুমের শুরুতে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় মুকুলে ভরে গেছে বাগানসহ ব্যক্তি উদ্যোগে লাগানো আম গাছগুলোতে।
তবে বড় আকারের চেয়ে ছোট ও মাঝারি আকারের গাছে বেশি মুকুল ফুটেছে। সেই মুকুলের মৌ মৌ গন্ধে বাগান মালিকদের চোখে ভাসছে স্বপ্ন। আম্রপালি, ফজলি অন্যতম।
ইতিমধ্যে এসব গাছে মুকুল আসা শুরু হয়েছে। গাছের পুরো মুকুল ফুটতে আরও কয়েক সপ্তাহ লাগবে। বাগান মালিকরা জানান, মুকুল আসার পর থেকেই তারা গাছের প্রাথমিক পরিচর্যা শুরু করেছেন।
মুকুল রোগ বালাইয়ের আক্রমন থেকে রক্ষা করতে স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ওষুধ স্প্রে করছেন তারা।
‘মামার বাড়ি’ কবিতায় পল্লীকবি জসীম উদ্দিন যথার্থই লিখেছেন,,,আয় ছেলেরা, আয় মেয়েরা ফুল তুলিতে যাই, ফুলের মালা গলায় দিয়ে মামার বাড়ে যাই।
ঝড়ের দিনে মামার দেশে আম কুড়াতে সুখ, পাকা জামের মধুর রসে রঙিন করি মুখ। এই কবিতার পঙক্তি মালা গুলোর বাস্তব রূপ পেতে অপেক্ষা করতে হবে আরও কয়েক মাস।
তবে সুখের ঘ্রাণ বইতে শুরু করেছে। সেই ঘ্রাণ শহরের চার দেয়ালের মধ্যে থাকা মানুষগুলো না পেলেও হাওরাঞ্চলে মানুষ জন তা উপভোগ করেছেন।
জেলার বিভিন্ন এলাকার খোঁজ নিয়ে জানা যায়,এবার আম গাছের প্রতিটি ডালপালা মুকুলে ছেয়ে গেছে। সেই মুকুলের সুবাসিত পাগল করা ঘ্রাণ চারদিকে ছড়াচ্ছে।
জেলার বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার চিনাকান্দি এলাকার ৫ বিঘা জমিতে ফজলী, আমরোপালীসহ নানা জাতের আমের চাষ করেছেন আক্তারুজ্জামান মিরাজ।
বাগান মালিক জানান,বর্তমানে আবহাওয়া অনুকূলে রয়েছে আর আমের মুকুল রোগ বালাইয়ের আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ওষুধ স্প্রে করছেন।
আর মুকুল আসার পর থেকেই গাছের প্রাথমিক পরিচর্যা শুরু করেছেন। এ বছর ভাল পরিমাণে আম পাওয়া যাবে বলেও আশা প্রকাশ করেন। তাহিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ হাসান উদ দোলা বলেন,চাষী নেই তবে সব বাড়িতেই আমগাছ রয়েছে।
আমাদের পক্ষ থেকে সবাইকে আমের উৎপাদন বৃদ্ধি ও পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য পরামর্শ দিচ্ছি আমিসহ আমাদের বিভিন্ন ব্লকে থাকা উপসহকারী কৃষি অফিসাররা।
সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিমল চন্দ্র সোম বলেন,এ অঞ্চলে বাণিজ্যিক আম বাগানের পরিমাণ খুবই কম। বানিজ্যিকভাবে এখনো চাষে আসেনি অনক এলাকা।
তবে আম চাষে আগ্রহ বাড়ছে উপজেলাগুলোতে। তবে গ্রামের প্রতিটি বাড়িতেই গাছে আমের গুটি আসার পরেই পরপর দুই বার ছত্রাক নাশক স্প্রে করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
এতে গুটি আম ঝড়ে পড়া বন্ধের পাশাপাশি গাছের আম পোকামুক্ত থাকবে। ফলের আশানুরূপ ফলনও পাওয়া যাবে।