২০২২-১১-০৭ ০৬:৩০:৩৩ / Print
একটি সেতু, বাস্তবায়নের স্বপ্ন ছিল দীর্ঘ দিনের। অবশেষে খুলল দক্ষিণের দুয়ার। সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার রাণীগঞ্জ সেতু উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে সুনামগঞ্জের ২৫ লাখ মানুষের স্বপ্ন বাস্তবায়ন হলো। ১৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুটি নির্মাণকাজ শেষে সোমবার (৭ নভেম্বর) বুদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
২০১৭ সালে কুশিয়ারা নদীর ওপর নির্মাণকাজ শুরু হওয়া সিলেট বিভাগের সবচেয়ে বড় রাণীগঞ্জ সেতু সোমবার (৭ নভেম্বর) ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
স্থানীয়রা বলছেন, তাদের দীর্ঘ দিনের দাবি পূরণ হয়েছে । এই সেতুর মাধ্যমে তাদের অর্থ, সময় বাঁচবে। আগে ফেরির জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হতো। শিক্ষার্থীরা ঠিক সময়ে স্কুল-কলেজে পৌঁছাতে পারত না। রোগীকে হাসপাতালে নিতে ভোগান্তি পোহাতে হতো। এই সেতুর মাধ্যমে পুরোপুরি ভোগান্তি মুক্ত হবে তারা। পাশাপাশি রাজধানী যেতে এখন আর সিলেট ঘুরে যেতে হবে না। হবিগঞ্জ হয়ে সরাসরি ঢাকা পৌঁছাতে পারবে। রাণীগঞ্জ দিয়েই চলবে সুনামগঞ্জ থেকে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের যোগাযোগ রক্ষাকারী গণ ও পণ্য পরিবহন।
সূত্রমতে, দেশের উত্তর-পূর্ব প্রান্তের শেষ জেলা সুনামগঞ্জ থেকে রাজধানী ঢাকার সড়ক যোগাযোগ দীর্ঘদিন ধরে সিলেট নগরী হয়ে যেতে হয়। ১৯৯৮ সালে এ সড়ক যোগাযোগ সহজ করতে সুনামগঞ্জের পাগলা-জগন্নাথপুর-আউশকান্দি আঞ্চলিক মহাসড়কের কাজ শুরু হয়। প্রয়াত জাতীয় নেতা আব্দুস সামাদ আজাদের প্রচেষ্টায় কাজ শুরু হলেও ২০০১ সালে চারদলীয় জোট ক্ষমতায় এসে সড়কের কাজ বন্ধ করে দেয়। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় আসার পর স্থানীয় সংসদ সদস্য ও বর্তমান পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের প্রচেষ্টায় আবারও সড়কের কাজ শুরু হয়। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করে সড়কের ৫২ কিলোমিটার অংশের কাজ শেষ করা হয়।
জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান বিজন কুমার দেব জানান, রানীগঞ্জ সেতু সুনামগঞ্জের উন্নয়নের দুয়ার খুলে দেবে। এটি সুনামগঞ্জবাসীর কাছে পদ্মা সেতুর মতো। স্বপ্নের দৃশ্যমান এ সেতু এখন বাস্তবায়ন।
সুনামগঞ্জ সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ) সূত্র জানায়, ১৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে সেতু প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন করে এমএম বিল্ডার্স এন্ড কোম্পানি। ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে সেতুর কাজ শেষ করার কথা থাকলেও করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে কাজ বন্ধ ছিল কিছুদিন।
সেতুর কাজ বাস্তবায়নের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক হারুণ রশীদ জানান, চায়না কোম্পানি করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে কাজ বন্ধ করে চলে যাওয়ায় সময়মতো সেতুর কাজ শেষ করা যায়নি। পরে আমরা সেতুর কাজ বাস্তবায়ন করি। এই সেতুতে বক্স গার্ডারসহ ১৫টি স্প্যান ও ১২টি পিয়ার রয়েছে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল ইসলাম প্রামানিক বলেন, প্রধানমন্ত্রী সারা দেশের ১০০টি সেতু উদ্বোধন করেন। এর মধ্যে রাণীগঞ্জ সেতু উদ্বোধন হয়।
এস এস