২০২২-০৮-০৯ ০০:২৯:১৪ / Print
ইতালি যাওয়ার পথে সুনামগঞ্জের যুবকের মৃত্যুর,পরিবারে শোকের মাতম ষ্টাফরিপোটার সুনামগঞ্জ গ্রিস থেকে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ইতালি যাওয়ার পথে প্রচণ্ড গরমে তাপস সরকার নামে সুনামগঞ্জের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।
তিনি জেলার ধর্মপাশা উপজেলার জয়শ্রী ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের বাগউচা গ্রামের মৃত সতীশ চন্দ্র সরকার ও জোছনা রানী তালুকদারের বড় ছেলে। সম্প্রতি তাপস সরকারের মৃত্যুর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়।
এর পর থেকে পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পরিবারে চলছে শোকের মাতম। সুমন সরকার নামে তার একজন ছোট ভাই জানায়,নিহত তাপস সরকার এসএসসি পর্যন্ত পড়ালেখা করেছে।
স্বপ্নের দেশ আর উন্নত জীবনের আশায় তার ভাই তাপস গ্রিস থেকে ইতালি যেতে চেয়েছিল কিন্তু প্রচণ্ড গরমে সে মারা যায়। ফেসবুকে ভিডিও দেখে মৃত্যু বিষয় নিশ্চিত হন স্বজনরা। তিনি আরও জানান,আনুমানিক আড়াই বছর আগে সে বিদেশে যায়। ৭আগস্ট তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিহত তাপসের ছবি দেখে মৃত্যুর বিষয়ে নিশ্চিত হন।
জয়শ্রী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সঞ্জয় রায় চৌধুরী জানান, এলাকার একজন ছেলে গ্রিস যাওয়ার পথে মারা গেছে এমন খবর তিনি শুনেছেন। তবে এর বেশি জানেন না তিনি।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়,তাপস ছাতকে তার এক স্বজনের মুদি দোকানের পরিচালক হিসেবে কাজ করতো। ছাতক শহরের মন্ডলীভোগ এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করতেন। কোভিড মহামারির ৬ মাস আগে বন্ধুদের সঙ্গে অবৈধভাবে তুরস্ক হয়ে গ্রিসে চলে যায়।
সেখান থেকে গ্রিসে বসবাসকারী বাংলাদেশি এক দালালের মাধ্যমে চুক্তি করেন। চুক্তি অনুযায়ী গ্রিস থেকে সার্বিয়া যাওয়ার কথা ছিল পরে সার্বিয়া থেকে অন্য দালালের মাধ্যমে যাওয়ার কথা ছিল ইতালি। এ রুটে দালালরা প্রথমে গ্রিসের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে আলবেনিয়া প্রবেশ করায়। পরে আলবেনিয়ায় ২ থেকে ৩ দিন রেখে সুযোগ বুঝে মন্টিনিগ্রো নিয়ে যায়।
মন্টিনিগ্রো নিয়েই আটকে রেখে চুক্তি করা অর্থ আদায় করেন। টাকা পরিশোধ হলে নিয়ে যায় সার্বিয়া অথবা বসনিয়ায়। পরে সেখান থেকে বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে স্লোভেনিয়া হয়ে ইতালি পৌঁছানো হয়ে থাকে।
এদিকে সেই চুক্তি অনুযায়ী গত ৩ আগস্ট গ্রিস থেকে তাপসসহ প্রায় ৩০জনের একটি ‘গেইম’ দলকে আলবেনিয়া পৌঁছায় দালাল চক্র। আলবেনিয়া স্থল সীমান্ত থেকে তীব্র গরমের মাঝে ৮ ঘণ্টায় উঁচু পাহাড় পাড়ি দিয়ে মন্টিনিগ্রো প্রবেশের সময় হঠাৎ পাহাড়ের মাঝে লুটিয়ে পড়েন তাপস।
এ সময় তার মৃত্যু নিশ্চিত ভেবে দালালসহ অন্যান্য যাত্রীরা তাকে রেখেই চলে যান। তার সঙ্গে থাকা পরিচিত দুইজন অনেক চেষ্টা করে তার কোনো সাড়া না পেয়ে তারাও চলে যান। তবে তারা ওই ঘটনার একটি ভিডিও করে গ্রিসে থাকা স্বজনদের কাছে পাঠিয়ে দেয়। sylhetsun.com