২০২২-০৭-০১ ১৪:২৭:৫৩ / Print
দুর্ভোগ যেন কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না সুনামগঞ্জবাসীর। বন্যা মোকাবিলা শেষে এখন পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন জেলার হাওরাঞ্চলের মানুষ। সুনামগঞ্জে ডায়রিয়া, কলেরা, আমাশয়সহ বিভিন্ন ধরনের পানিবাহিত রোগের প্রকোপ বেড়েই চলেছে।
শিশু থেকে বৃদ্ধ সবাই এসব রোগে আক্রান্ত হয়ে সুনামগঞ্জ ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি আছে। হাসপাতাল গুলোতে পর্যাপ্ত শয্যার অভাবে গুরুতর অসুস্থদের হাসপাতালের বারান্দা ও মেঝেতে শুয়ে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়,গত দুই দিন ধরে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী ভর্তির সংখ্যা বাড়ছে।
ফলে পর্যাপ্ত শয্যার অভাবে অধিকাংশ রোগী মেঝেতে শুয়েই চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে,গত ২৪ ঘণ্টায় ডায়রিয়া,কলেরা,আমাশয় নিয়ে ১৮৭জন রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। রোগীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় সামাল দিতে হিমসীম খেতে হচ্ছে হাসপাতালের ডাক্তার ও নার্সদের। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন,সম্প্রতি বন্যার সময় পানি না ফুটিয়ে পান করার ফলে বেড়েছে পানিবাহিত রোগের প্রকোপ।
সম্প্রতি উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হয় সুনামগঞ্জের পৌর শহরসহ ১২ উপজেলা। ঘর বাড়ির পাশাপাশি ডুবে যায় এই জেলার সকল টিউবওয়েল। দেখা দেয় নিরাপদ পানির সংকট।
সেই সময় নিরাপদ পানি না পেয়ে ময়লা আবর্জনাযুক্ত ও দূষিত অনিরাপদ পানি পান করায় জেলাজুড়ে দেখা দিয়েছে পানিবাহিত ডায়রিয়া, কলেরা, আমাশয় ও চর্মরোগ। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীর স্বজনরা জানিয়েছেন,বন্যার পর থেকেই প্রতিটি গ্রামেই ডায়রিয়া দেখা দেয়ায় শিশুদের নিয়ে হাসপাতালে ছুটছেন তারা।
এমনকি এক সিটে দুজন,তিনজন করে রোগীকেও জায়গা দিতে হচ্ছে। অনেকে জায়গা না পেয়ে মেঝেতেও থাকছেন। চিকিৎসাধীন রোগীর স্বজন শাপলা বেগম বলেন,বন্যার পানি কমার পর থেকেই ছেলে মেয়েরা অসুস্থ হয়ে পড়েছে। দুই দিন ধরে হাসপাতালে বাচ্চাকে নিয়ে ভর্তি আছি।
বন্যায় পানির কারনে চরম দূর্ভোগে পরেছিলাম এখন রোগ নিয়ে। চিকিৎসাধীন রোগীর স্বজন হালিমা বেগম বলেন,বন্যার পানিতে টিউবওয়েল ডুবে গিয়েছিল।
পরে পচা পানি খেয়ে আজ শিশুরা অসুস্থ হয়ে পড়েছে। বন্যায় কষ্ট শুধু বাড়িয়ে দিচ্ছেই।
জেলার হাওর বেষ্টিত তাহিরপুর উপজেলার দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলী আহমদ মোরাদ জানান,হাওর পাড়ের মানুষের দূর্ভোগের শেষ নাই। বন্যায় বিশুদ্ধ পানির সংকটে অনেক পরিবারের শিশুরা পানি বাহিত রোগে আক্রান্ত হয়ে পরেছে।
বন্যায় বিশুদ্ধ পানির সংকট দুর করতে হাওর এলাকায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা সুনামগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. আহম্মদ হোসেন বলেন, গত দুইদিনে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ১৮৭জন পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে।
সম্প্রতি ভয়াবহ বন্যায় বেশিরভাগ পানি দূষিত হয়ে গেছে। যার কারণে পানিবাহিত রোগ দেখা দিয়েছে। আমরা আমাদের সবোচ্ছ সেবা দিয়ে যাচ্ছি।