২০২৪-০৩-১৯ ১৩:০৭:২৪ / Print
সিলেটে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সাথে আসামীকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার দুপুরে সিলেট বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মো: শাহাদৎ হোসেন প্রামানিক এ রায় দেন। রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের পেশকার (বেঞ্চ সহকারী) মো: আহম্মদ আলী।
দন্ডপ্রাপ্ত আসামীর আজিজ মিয়া উরফে আইজুল। তিনি বি-বাড়ীয়া জেলার নাসিরনগর থানার কোয়রপুর কদমতলীপাড়ার দিলু মিয়া ওরফে দিল্লুর রহমানের ছেলে। তিনি সিলেট নগরীর বাগবাড়ী এলাকার সোহেল মিয়ার কলোনীতে ভাড়া থাকতেন। রায় ঘোষনার সময় আসামী আজিজ মিয়া পলাতক ছিলেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা গেছে, সুনামগঞ্জ জেলার বিশ্বম্ভরপুর থানার বাঘবেড় গ্রামের মো.ছিদ্দিকের সাথে মোছা: সুফিয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের সংসারে হাসিনার জন্ম হয়।
পূর্বের স্বামী সুফিয়াকে তালাক দিলে পরে আজিজ মিয়ার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন সুফিয়া। ঘটনার ৩ দিন পূর্বে তার মা সুফিয়াকে দেখতে সিলেট নগরীর বাগবাড়ী এলাকার সোহেল মিয়ার কলোনীতে আসে হাসিনা (১২)।
সেখানে থাকা অবস্থায় হাসিনাকে দেখে আজিজ মিয়া তার স্ত্রী সুফিয়ার কাছে হাসিনাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। কিন্তু সুফিয়া সেই প্রস্তাব প্রত্যাখান করেন।
এর জের ধরে এক পর্যায়ে ২০০০ সালের ১৭ মে রাত ৯ টার দিকে আজিজ মিয়া তার স্ত্রী সুফিয়াকে টানা-হেচড়া করে বাগবাড়ী কলোনীর পাশ্ববর্তী ক্ষেতের জমিতে নিয়ে চাকু দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে উপর্যুপরি কুপিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করেন।
এসময় হাসিনার শোর চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে জীবিত মনে করে সুফিয়াকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।
সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার সুফিয়াকে মৃত ঘোষনা করেন। এ ঘটনায় হাসিনা বাদি হয়ে কোতোয়ালী থানায় আজিজ মিয়াকে একমাত্র আসামী করে হত্যা মামলা করেন।
দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০০১ সালের ২১ ফেব্রুয়ারী তৎকালীন কোতোয়ালী থানার এসআই এনামুল হক একমাত্র আজিজ মিয়াকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। এরপর ২০০৪ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারী তার বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে আদালত এ মামলার বিচারকার্য্য শুরু করেন।
দীর্ঘ শুনানী ও ১০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে মঙ্গলবার আদালত আসামী আজিজ মিয়া ওরফে আইজুলকে ৩০২ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ৬ মাসের বিনাশ্রমে কারাদন্ডে দন্ডিত করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট মো: ফখরুল ইসলাম ও আসামীপক্ষে ষ্টেইট ডিফেন্স অ্যাডভোকেট মো.আমিনুল ইসলাম মামলাটি পরিচালনা করেন।