শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ইংরেজী, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বাংলা ENG

সিলেটে আমন ধানের লক্ষমাত্র ১০ লক্ষ ৭৪ হাজার মেট্রিকটন

সুলতান সুমন ::

২০২২-১১-৩০ ০৪:১৮:২৬ /

সীমান্তের ওপার থেকে আসা পাহাড়ি ঢল। আর ঘন পরিমাণে অতি বৃষ্টির কারণে প্লাবিত হয়েছিল সিলেট। বন্যার পানিতে তলিয়ে যায় আমনের বীজতলা। ডুবতে থাকে কৃষকের স্বপ্ন। তবে বন্যা পরবর্তী সময়ে সব দুঃখ চাপিয়ে মাঠে ফুঠেছে সোনালী ফসলের হাঁসি। জেগেছে কৃষকের স্বপ্ন। আমন ধানের বাম্পার ফলনে বন্যার কষ্ট বুকে চেপে আনন্দে মেতেছে কৃষক। ইতোমধ্যে আমন ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ শুরু করেছেন কৃষকেরা। সিলেটে ২৬ শতাংশ আমন ধান কাটা হয়েছে। আর লক্ষমাত্রার চেয়েও বেশি ফলন হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিলেট বিভাগীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

 

সিলেট বিভাগীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, আমনের চারা রোপনের পর থেকে আগষ্ট,সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে সিলেট টানা বৃষ্টি হয়েছে। ফলে লক্ষ মাত্রার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি ফলন হয়েছে। ধানের মাঠ দেখা যাচ্ছে চমৎকার, চারিদিকের দৃশ্য সোনালী। এবার সিলেট বিভাগে আমন আবাদের লক্ষমাত্রা ছিল ৪ লক্ষ ৩ হাজার ২’শ ৮০ হেক্টর।

 

কিন্তু অর্জন হয়েছে ৪ লক্ষ ১৫ হাজার ৫’শ ৪৬ হেক্টর। আবাদ বেশি হওয়ার কারণে লক্ষমাত্রা পূরণ হবে বলে জানায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। বিভাগীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, আমনের ৯৫ জাতের ধান প্রতি হেক্টরে ৩.৬ মেট্রিক টন উৎপন্ন হয়েছে। তাছাড়া অল্প ভালো বা অন্যান্য জাতের আমন প্রতি হেক্টরে ২.৭ মেট্রিক টন উৎপন্ন হয়েছে। যার ফলে এবার আমন ধানের লক্ষমাত্র ১০ লক্ষ ৭৪ হাজার মেট্রিকটন ধরা হয়েছে।

 

সরেজমিনে দেখা যায়, যেসব ক্ষেতের ধান কাটার জন্য উপযুক্ত হয়েছে, সেসব জমিতে শ্রমিক নিয়ে ধান কেটে তা মাঠে শুকানোর জন্য ফেলে রেখেছেন কৃষকরা। শুকানো হলে সেগুলো আঁটি বেঁধে গৃহস্থের গোলায় তুলতে সেগুলো মাড়াই করছেন।

 

এবার সন্তোষজনক ফলন পাবেন বলে কৃষকদের আশা। এছাড়া বিভাগের সুনামগঞ্জে এখন আমন ধান কাটায় ব্যস্ত কৃষকেরা।

 

জেলার বিভিন্ন উপজেলায় কৃষকেরা নতুন ধান কেটে গোলায় তুলছেন। তবে জেলার যেসব উপজেলায় উঁচু জমি আছে, সেসব উপজেলায় আমনের আবাদ হয় বেশি। ভাটি এলাকায় আমনের আবাদ হয় কম।

 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সুনামগঞ্জের প্রধান ফসল বোরো ধান হলেও আমন আবাদ বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। এবার গত বছরের চেয়ে এক হাজার হেক্টর জমিতে আমন আবাদ বেশি হয়েছে।

 

বন্যার পর জেলায় আমন আবাদে ১০ হাজার কৃষককে ৫ কেজি করে বীজ এবং ১০ কেজি করে ডিএপি ও এমওপি সার বিনা মূল্যে দেওয় হয়েছে। এবার সুনামগঞ্জে আমন ধানের আবাদ হয়েছে ৮২ হাজার ২১৫ হেক্টর জমিতে। ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন। এ পর্যন্ত ১৩ হাজার ১৫৫ হেক্টর জমির ধান কাটা হয়েছে।

 

সিলেট বিভাগের বিভিন্ন জেলার কৃষকদের সাথে আলোচনা করে জানা যায়, বন্যায় বীজতলা নষ্ট হওয়ার কারণে ১০ দিন পিছিয়েছে । তবে বর্তমানে তা পুষিয়ে নেয়া হয়েছে। মাঠে ধান কাটা হচ্ছে।

 

তবে কৃষকরা জানিয়েছেন ধানের যেন সঠিক মূল্য পায় তারা। সিলেট বিভাগীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছেন, বর্তমানে সিলেটের বিভিন্ন জায়গায় কাচা ধান বিক্রি হচ্ছে ৯’শ টাকা করে মন। এ ধান শুকানোরপর ১১’শ থেকে ১২’শ টাকা দরে বিক্রি হবে। অথচ গতবছর শুকনো ধানের মূল্য ছিল ৭’শ টাকা মন। এবার কাচা ধানের দাম যেমন বেড়েছে, তেমনই শুকনো ধানের দামও বাড়তে পারে। এতে করে কৃষকরা পাবে তাদের কাঙ্খিত মূল্য।

 

সিলেট বিভাগীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ কাজী মজিবুর রহমান জানান, আমন রোপনের সময় সিলেটে টানা বৃষ্টিপাত হয়েছে। তাই সিলেটে এবার আমনের টার্গেটের চেয়ে বেশি উৎপাদন হয়েছে। ফলে এবার আমনের লক্ষ মাত্রা ১০ লক্ষ ৭৪ হাজার মেট্রিক টন। তিনি আরো জানান, বন্যায় বীজতলা নষ্ট হওয়ায় ১০ দিন পিছিয়েছে। তবে ইতিপূর্বে ২৬ শাতাংশ ধান কাটা হয়ে গেছে। আর খুব শীঘ্রই কৃষকের ঘোলায় ধান উঠবে।

 

ধানের দামের ব্যাপারে এ কর্মকর্তা জানান, ইতিপূর্বে কাচা ধান বিক্রি হচ্ছে ৯’শ টাকা মণ। তাছাড়া শুকনো ধান ১১’শ থেকে ১২’শ টাকা দামে বিক্রি হবে।

 

সিলেট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানায়, সিলেট জেলায় এবার আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ৪০ হাজার ১৮৫ হেক্টর। তবে চাষাবাদ হয়েছে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে প্রায় ১ লাখ ৪৫ হাজার হেক্টর। সিলেট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক বিমল চন্দ্র সোম বলেন, সিলেটে এবার আমন আবাদে আবহাওয়া ভালো ছিল। তাই ভালো ফলন হয়েছে। পোকামাকড়ের আক্রমণও ছিল এবার খুবই কম। এখন ধানের দাম কম পাওয়া গেলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা আরও বৃদ্ধি পাবে।

 

সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, চলতি আমন মৌসুমে ১৬ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও তা ছাড়িয়ে কৃষক ১৬ হাজার ৮৫৩ হেক্টর জমিতে ধান চাষ করেছেন। আর ধান উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭৭ হাজার মেট্রিক টন।

 

উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ও কৃষকদের সাথে কথা বললে তারা জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সঠিক পরিচর্যা ও রোগবালাই কম হওয়ার চলতি আমন মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে।

 

এস এস 

এ জাতীয় আরো খবর

সিলেট প্রেসক্লাব সভাপতি ইকরামুল সম্পাদক সিরাজ

সিলেট প্রেসক্লাব সভাপতি ইকরামুল সম্পাদক সিরাজ

কণ্ঠশিল্পী পাগল হাসান আর নেই,  সড়ক দুর্ঘটনায় থেমে গেল একটি কন্ঠ

কণ্ঠশিল্পী পাগল হাসান আর নেই, সড়ক দুর্ঘটনায় থেমে গেল একটি কন্ঠ

মোঘলাবাজারে চেক প্রতারনা মামলায় লন্ডন প্রবাসী মনসুরুল কারাগারে

মোঘলাবাজারে চেক প্রতারনা মামলায় লন্ডন প্রবাসী মনসুরুল কারাগারে

মৌলভীবাজারে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে এক পরিবারের ৫ জনের মৃত্যু

মৌলভীবাজারে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে এক পরিবারের ৫ জনের মৃত্যু

 উপজেলা নির্বাচন ২০২৪: সিলেট বিভাগের ১১ টিতে নির্বাচন ৮ মে

উপজেলা নির্বাচন ২০২৪: সিলেট বিভাগের ১১ টিতে নির্বাচন ৮ মে

সিলেট জেলা ট্রাক পিকআপ  কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতির  নবনির্বাচিত কমিটির অনুমোদন

সিলেট জেলা ট্রাক পিকআপ কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতির নবনির্বাচিত কমিটির অনুমোদন