শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ইংরেজী, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বাংলা ENG

২৬ মে দেশে আসবে আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর মরদেহ

দেওয়ান বেলাল আহমদ চৌধুরী, ইংল্যান্ড প্রতিনিধি

২০২২-০৫-২১ ২১:২১:১৭ /

আগামী ২৬ মে (বৃহস্পতিবার) ঢাকায় পৌঁছাতে পারে বিশিষ্ট সাংবাদিক, গীতিকার, কলামিস্ট ও সাহিত্যিক আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর মরদেহ। শনিবার (২১ মে) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছেঃ। আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী বৃহস্পতিবার (১৯ মে) ভোর ৬টা ৪০ মিনিটে লন্ডনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বার্নেট হাসপাতালে মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর। তিনি বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন। এদিকে, শুক্রবার আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর প্রথম জানাজা পূর্ব লন্ডনের ব্রিকলেন মসজিদে অনুষ্ঠিত হয়। পরে লন্ডনের আলতাব আলী পার্কের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে তার মরদেহ রাখা হয়। সেখানে সর্বস্তরের মানুষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এর আগে মরহুমের পরিবারের সদস্যদের বরাত দিয়ে যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাঈদা মুনা তাসনিম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছিলেন। তিনি জানান, ‘আমরা ওনার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা জানিয়েছেন, আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর অন্তিম ইচ্ছা ছিলো, তাকে যেন স্ত্রীর কবরের পাশে দাফন করা হয়। পরিবারের সদস্যরা চাইছেন, ওনার শেষ ইচ্ছেটা পূরণ হোক।’ তিনি বলেন, আমরাও সেভাবে ব্যবস্থা করছি। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। যতো দ্রুত সম্ভব তার পরিবারের সদস্যরা মরদেহ নিয়ে দেশে ফিরবেন। ১৯৩৪ সালের ১২ ডিসেম্বর বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জের উলানিয়ার চৌধুরীবাড়ি জন্মগ্রহণ করেন আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী। তার বাবা হাজি ওয়াহিদ রেজা চৌধুরী ও মা জহুরা খাতুন। ১৯৫০ সালে গাফ্ফার চৌধুরী পরিপূর্ণভাবে কর্মজীবন শুরু করেন। এ সময় তিনি ‘দৈনিক ইনসাফ’ পত্রিকায় সাংবাদিক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। মহিউদ্দিন আহমদ ও কাজী আফসার উদ্দিন আহমদ তখন ‘দৈনিক ইনসাফ’ পরিচালনা করতেন। ১৯৫১ সালে ‘দৈনিক সংবাদ’ প্রকাশ হলে গাফ্ফার চৌধুরী সেখানে অনুবাদকের কাজ নেন। এরপর তিনি বহু পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত হন।মাসিক সওগাত, দিলরুবা, মেঘনা, ইত্তেফাক, আজাদ, জেহাদ ও পূর্বদেশসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করেন বরেণ্য এই সাংবাদিক। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে সপরিবারে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে আগরতলা হয়ে কলকাতা পৌঁছান। সেখানে মুজিবনগর সরকারের মুখপত্র সাপ্তাহিক জয়বাংলায় লেখালেখি করেন। এ সময় তিনি কলকাতায় দৈনিক আনন্দবাজার ও যুগান্তর পত্রিকায় কলামিস্ট হিসেবেও কাজ করেন। ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর দৈনিক জনপদ বের করেন। ১৯৭৩ সালে তিনি বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আলজিয়ার্সে ৭২ জাতি জোট নিরপেক্ষ সম্মেলনে যান। দেশে ফেরার পর তার স্ত্রী গুরুতর অসুস্থ হলে তাকে চিকিৎসার জন্য প্রথমে কলকাতা নিয়ে যান। সেখানে সুস্থ না হওয়ায় তাকে নিয়ে ১৯৭৪ সালের অক্টোবরে লন্ডনে যান। এরপর তার প্রবাসজীবনের ইতিহাস শুরু হয়। সাংবাদিকতার পাশাপাশি গল্প, উপন্যাস, স্মৃতিকথা, ছোটদের উপন্যাসও লিখেছেন তিনি। ‘চন্দ্রদ্বীপের উপাখ্যান’, ‘সম্রাটের ছবি’, ‘ধীরে বহে বুড়িগঙ্গা’, ‘বাঙালি না বাংলাদেশী’সহ তার প্রকাশিত গ্রন্থ সংখ্যা প্রায় ৩০। এছাড়া তিনি কয়েকটি পূর্ণাঙ্গ নাটক লিখেছেন। এর মধ্যে আছে ‘পলাশী থেকে ধানমন্ডি’, ‘একজন তাহমিনা’ ও ‘রক্তাক্ত আগস্ট’। কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ বহু পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন গাফ্ফার চৌধুরী। ১৯৬৩ সালে ইউনেস্কো পুরস্কার পান তিনি। এছাড়া রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা স্বাধীনতা পুরস্কার, বাংলা একাডেমি পদক, একুশে পদক, শেরেবাংলা পদক, বঙ্গবন্ধু পদকসহ আরো অনেক পদকে ভূষিত হয়েছেন।

এ জাতীয় আরো খবর

নিউজার্সিতে স্বামীর হাতে খুন হওয়া শাপলার দাফন সম্পন্ন, বিশ্বনাথে শোকের ছায়া

নিউজার্সিতে স্বামীর হাতে খুন হওয়া শাপলার দাফন সম্পন্ন, বিশ্বনাথে শোকের ছায়া

কানাডার ইতিহাসে দ্বিতীয় বারের মত এমপিপি হলেন মৌলভীবাজারের ডলি

কানাডার ইতিহাসে দ্বিতীয় বারের মত এমপিপি হলেন মৌলভীবাজারের ডলি

বাংলাদেশি আরিফ আমিরাতে লটারিতে জিতলেন ৪৮ কোটি টাকা

বাংলাদেশি আরিফ আমিরাতে লটারিতে জিতলেন ৪৮ কোটি টাকা

২৬ মে দেশে আসবে আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর মরদেহ

২৬ মে দেশে আসবে আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর মরদেহ

 বিদায় কিংবদন্তি আবদুল গাফফার চৌধুরী

বিদায় কিংবদন্তি আবদুল গাফফার চৌধুরী

দেশের মাটিতে স্ত্রীর কবরের পাশেই সমাহিত হবেন আবদুল গাফফার

দেশের মাটিতে স্ত্রীর কবরের পাশেই সমাহিত হবেন আবদুল গাফফার