সিলেটে বিএনপির সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেছেন, খালেদা জিয়া মানুষের কথা বলেন। তাই তাকে জেলে রেখে শ্লো পয়জনিং করে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। তাই রাজপথকে প্রকম্পিত করে আমাদের নেত্রীকে মুক্ত করতে হবে। গুলি খেতে হবে। রাজপথ রঞ্জিত করতে হবে। খালেদা জিয়া মুক্তির আন্দোলনে যদি আমার দেশের মানুষের গুলি আমার শরীরে লাগে তবে আমি গর্বিত। আসল কাফনের কাপড় পরে জেলের তালা ভেঙে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে এবং দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে।
তিনি আরো বলেন, প্রতীকী কাফনের কাপড় পরলে চলবেনা, প্রকৃত কাফনের কাপড় পরতে হবে। আন্দোলন করতে হবে, গুলি খেতে হবে। আমরা সামনের সারিতে থাকব আপনারা পেছনে থাকবেন তবেই মুক্তি মিলবে খালেদা জিয়ার। বুধবার বিকালে (১২ –জানুয়ারি) সিলেট শহরতলীর টুকেরবাজারে খালেদা জিয়ার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার সুযোগ দেওয়ার দাবিতে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথাগুলো বলেন। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসাবে এ কর্মসূচি পালন করে জেলা ও নগর বিএনপি।
জেলা বিএনপির আহবায়ক কামরুল হুদা জায়গীরদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির।
বিশেষ অতিতির বক্তব্য দেন স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা সুলতান সালাহ উদ্দিন টুকু, সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র (সিসিক) আরিফুল হক চৌধূরী, ঢাকা দক্ষিন সিটি করপোরেশনের মেয়র ইশরাক হোসেন। অন্যানের মধ্যে বক্তব্য দেন, কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. শাখাওয়াত হোসেন জীবন, কেন্দ্রীয় সদস্য কলিম উদ্দিন মিলন, খালেদা জিয়ার উপদেষ্ঠা ড. এনামুল হক, কেন্দ্রীয় ছাত্রদল নেতা ওমর ফারুক শাহীন, নিখোঁজ বিএনপি নেতা ইলিয়াস পত্নী তাহসীনা রুশদীর লুনা, বিএনপি নেতা ফরহাদ চৌধুরী শামীম, আবদুল আহাদ খান জামাল, তারেক কালাম প্রমুখ।
খালেদা জিয়াকে গণতন্ত্রের কান্ডারি আখ্যায়িত করে ইকবাল,হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, খালেদা জিয়া জনগণের ভাষা বুঝেন। তিনি আজ পর্যন্ত যত জায়গা থেকে যত নির্বাচন করেছেন সবগুলো নির্বাচনে তিনি জয়লাভ করেছেন। আর খালেদা জিয়াকে যিনি বন্দী করে রেখেছেন তিনি নির্বাচনে সাদেক হোসেন খোকা ও মেজর মান্নানের কাছে পর্যন্ত পরাজিত হয়েছেন। আর পরাজিত হওয়ার পরে ঢাকায় আর নির্বাচন করেননি।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়া জনগণের ভাষা বুঝতে পেরে সংসদীয় গণতন্ত্র উপহার দিয়েছেন। তিনি কেয়াটেকার সরকার দিয়েছিলেন এবং পরের নির্বাচনে পরাজিত হয়ে তিনি বিরোধী দলীয় নেত্রী হয়েছিলেন। একেই বলে গণতন্ত্র। তিনি চাইলে সেদিন আন্দোলন দমিয়ে ক্ষমতায় থাকতে পারতেন। কিন্তু তা করেননি খালেদা জিয়া, কারণ তিনি গণতন্ত্রে বিশ্বাসী।
ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু আরও বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশের ইতিহাস পাল্টিয়ে দিয়েছে। আজকে ইতিহাসে একটামাত্র পাতা আছে, যে ওরা ছাড়া স্বাধীনতাযুদ্ধে আর কেউ যায় নাই। তাহলে আমি কিভাবে যুদ্ধে গেলাম। সাদেক হোসেন খোকা কিভাবে যুদ্ধে গেল? মূলত এ দেশের খেঁটে খাওয়া মানুষ, লুঙ্গি পরে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছে।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে খন্দকার মুক্তাদীর বলেন, খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিন। নতুবা তার মৃত্যুর দায় আপনাকে নিতে হবে। ওই মামলায় আপনি আসামী হবেন না । তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের মন্ত্রীরা আনফিট। তারা দেশকেও আনফিট করে ফেলছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুলতান সালাদ্দিন টুকু বলেন, বর্তমান সরকার নিশি রাতের সরকার হিসাবে পরিচিতি পেয়েছে। তাদের অপকর্মের জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ভিসা বাতিল করছে। আমাদের জেগে উঠতে হবে। আমরা রক্ত না দিলে মুক্তি মিলবে না খালেদা জিয়ার। আমরা না জাগলে দেশের স্বাধীনতা ঠিকবে না।
বিএনপির সমাবেশকে ঘিরে সতর্ক অবস্থানে ছিল অঅইনশৃ্খংলা বাহিনী। বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে ছিল পুলিশি টহল। এছাড়া সবধরণের বিশৃঙ্খলা এড়াতে সমাবেশস্থলে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
সিলেটসান.কম/এফবি