২০২৪-০১-১০ ১০:৪৭:৩৪ / Print
সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ঘুষ লেনদেনের সময় নগদ টাকাসহ দুই নার্সকে (ব্রাদার) আটকের ঘটনায় মামলা হয়েছে। এ ঘটনার মূলহোতা ইসরাইল আলী সাদেক পলাতক রয়েছেন।.
হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ হানিফ মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) রাতে সিলেট কোতোয়ালি থানায় মামলাটি করেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স (ব্রাদার) ইসরাইল আলী সাদেক।
এছাড়াও মামলার অপর দুই আসামি হলেন- সিনিয়র স্টাফ নার্স মো. আমিনুল ইসলাম (৪৫) ও সিনিয়র স্টাফ নার্স সুমন চন্দ্র দেব (৪১)। মামলার এজহার সূত্রে জানা যায়, এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স ইসরাইল আলী সাদেকসহ বেশ কয়েকজন মিলে দীর্ঘদিন চাকরি দেওয়া,
বদলি করানো, আউট সোর্সিং নিয়োগ দেওয়া, সরকারি ওষুধ বাহিরে পাচারসহ পাওনা টাকা আদায় করে দেওয়ার কথা বলে নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করে প্রতারণা পূর্বক বহু টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
সম্প্রতি সাদেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্মরত সিনিয়র স্টাফ গীতা রানী হালদারের গত আট বছরের প্রাপ্য ৩৪ লাখ টাকা বকেয়া বিল করে দেওয়ার বিনিময়ে ১০ লাখ টাকা দাবি করেন। পরবর্তীতে তাকে ভয়ভীতি প্রদর্শন ও চাপ সৃষ্টি করে ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা দিতে বাধ্য করেন।
পরে সাদেক বিল করে বিলের চেক মামলার ৩নং আসামি সিনিয়র স্টাফ নার্স সুমন চন্দ্র দেবের মাধ্যমে গীতা রানী হালদারকে হস্তান্তর করেন। গত ৯ জানুয়ারি দুপুর ১২টার দিকে সাদেকের দাবিকৃত অবশিষ্ট ৬ লাখ টাকা তার কথা মতো জরুরি বিভাগে কর্মরত সিনিয়র স্টাফ নার্স মো. আমিনুল ইসলামের কাছে জমা দেন গীতা রানী।
তখন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে মো. আমিনুল ইসলামকে অবশিষ্ট নগদ ৬ লাখ টাকাসহ হাতেনাতে আটক করে। এরপর আমিনুলের দেওয়া তথ্যমতে মামলার ৩নং আসামি সুমন চন্দ্র দেবকে আটক করা হয়।
আটককৃতদের পুলিশের নিকট সোপর্দ করা হলে তারা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানান- ইসরাইল আলী সাদেকের নির্দেশনায় ও অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনের যোগসাজসে দীর্ঘদিন যাবত তারা এসব অবৈধ কাজ করে আসছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত তিনজনের বিরুদ্ধে চাকরি দেওয়া, বদলি করানো, আউট সোর্সিং নিয়োগ দেওয়া, সরকারি ওষুধ বাহিরে পাচারসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করে মামলা দায়ের করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ হানিফ বলেন, সিনিয়র স্টাফ নার্স ইসরাইল আলী সাদেক এ যাবত বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি, দালালি, অর্থ আত্মসাৎ করে বিপুল অর্থ সম্পদ অর্জন করেছেন বলে আমরা জেনেছি।
দুর্নীতি দমন কমিশনসহ অন্যান্য দপ্তরে তার বিরুদ্ধে একাধিক তদন্ত চলমান রয়েছে। ঘুষ লেনদেনের ঘটনায় হাসপাতালের কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেছি।
কোতোয়ালি থানার ওসি মোহাম্মদ মঈন উদ্দিন জানান, এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স ইসরাইল আলী সাদেকসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এর আগে গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্সদেরকে অর্থসহ আটক করে কোতোয়ালি মডেল থানায় হস্তান্তর করেন। মামলার প্রধান আসামি ইসরাইল আলী সাদেক পলাতক আছে। তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।