২০২৩-১০-০৫ ১৭:৩৩:০৯ / Print
ভারত-বাংলাদেশ ভিসামুক্ত সম্পর্ক চাইলেব পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন। তিনি বলেন, এই ডায়লগে উভয় দেশের নানা প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণে খোলামেলা কথা হবে। উভয় দেশের সবচেয়ে 'ক্রিটিক্যাল' ইস্যুগুলো নিয়ে আলোচনা হবে।
বৃহস্পতিবার বিকালে বাংলাদেশ-ভারত ফ্রেন্ডশীপ ডায়ালগ ১১ তম রাউন্ডের প্রথম দিনের প্রথম অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। এরআগে একটি পাঁচ তারকা হোটেলে ৪ দিন ব্যাপী বাংলাদেশ-ভারত ১১ তম ফ্রেন্ডশিপ ডায়লগের উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, ভারতে বিভিন্ন সময় বাংলাদেশের প্রায় ২৮ লাখ লোক বেড়াতে ও চিকিৎসার জন্য যান। ভারতেরও প্রায় ৫ লাখের বেশি লোক বাংলাদেশে আছেন, তারা চাকরী ও ব্যবসা করে আমাদের উন্নয়নে সহযোগিতা করছেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন সম্মেলনের প্রথম দিনে বাংলাদেশের ৫ টি প্রত্যাশার কথা তুলে ধরেছি। এই ৫টির একটি ইকোনোমিক, আরো আরো বিনিয়োগ। আমরা ভারত থেকে ১৫ বিলিয়নের জিনিস আনি, দিতে পারি না। এজন্য বলেছি, তারা এখানে বিনিয়োগ করে ব্র্যাঞ্চ করতে পারেন, যাতে 'বাই ব্যাক' করা যায়।
এছাড়া বিদ্যুৎ সমন্বয়ের কথা বলেছি উল্লেখ করে ড. মোমেন বলেন, আমরা ভারত থেকে ১১২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কিনি, আরো কিনতে চাই। নেপাল থেকেও এনার্জি কিনতে ভারত আমাদের সাহায্য করবে। তাছাড়া দেশের নদীগুলোর কথা বলেছি। যাতে উভয় দেশের সম্পর্ক আরো ভাল হয়। তিনি বলেন, আমাদের সম্পক অনন্য উচ্চতায় রয়েছে।
আমাদের সুসম্পর্কের কারনে দুই দেশের প্রতিরক্ষা ব্যায় অনেকটা কমে গেছে। তিস্তার পানি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নীতিগতভাবে আমরা এক, তবে তিস্তার পানি বন্টন হবে। কিন্তু কোনো কারণে এটা আটকে আছে, সেটা অজানা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন এমপি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্পীকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে সম্পর্ক অত্যন্ত চমৎকার। ঐতিহাসিক এই সম্পর্ক অনেক সুদৃঢ় ।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের মহান নেতা
জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে ভারত আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছিল। বাংলাদেশের মানুষ ভারতের এই ত্যাগের কথা কখনো ভুলবে না।’ স্পিকার বলেন, ‘বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ফ্রেন্ডশিপ সংলাপ দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরো জোরদার হবে।
বাণিজ্যিক সহযোগিতা বাড়াবে।’ স্পীকার বলেন, দুই দেশের সরকার সন্ত্রাসবাদ দমনে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে। আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এই নীতি বিশ্বব্যাপী প্রশংসা পেয়েছে। স্পিকার বাংলাদেশ ভারতের মধ্যে সংসদীয় সহযোগিতা বাড়ানোর উপরও গুরুত্ব দেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন সাবেক মন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক। ভারত পার্লামেন্টের সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ভিনসেন পালা, ভারতের সাবেক সংসদ সদস্য স্বপন দাস গুপ্ত, বাংলাদেশে ভারতের হাই কমিশনার প্রণয় ভার্মা।
ভারতের সাবেক মন্ত্রী ভিনসেন পালা বলেন, ‘বাংলাদেশ ‘গুড গভর্নেস’ তৈরিতে অন্যন্য নজির স্থাপন করেছে। দুর্নীতি এবং সন্ত্রাসবাদ দমনে বর্তমান সরকার অসাধারণ সাফল্য দেখিয়েছে। যা বিশ্বব্যাপী প্রশংসা পেয়েছে।’
সভাপতির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন- জঙ্গিবাদ সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধে বাংলাদেশ ও ভারত অভিন্ন নীতিতে কাজ করছে। আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দুই দেশ আগামীতে আরো সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়ে কাজ করবে। তিনি বলেন, দুই দেশের সম্পক অনন্য উচ্চতায় পৌছেছে।
সম্পর্ক ভাল থাকায় দুই দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা ব্যয় অনেকটা কমে গেছে। এবারের সংলাপে একটাই চাওয়া ভারত বাংলাদেশের কোন জটিলতা যেন না থাকে। বিশেষ করে ভারত বাংলাদেশের সম্পর্ক যেন ভিসাবীহিন হয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আইসিটি অনুবিভাগের মহা পরিচালক ড. সৈয়দ মুনতাসীর মামুনের পরিচালনায় আরো বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এ এস এম শামছুল আরেফিন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় আয়োজিত এ সংলাপের প্রথম দিনে আলোচনা সভায় সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসকসহ প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।