২০২৩-০৬-১০ ১৫:১৯:৪০ / Print
নয়ন মিয়া (২০)। সে সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার আবদুল জলিলের ছেলে। পেশায় নির্মাণ শ্রমিক। গরীব পরিবারের সন্তান হওয়ায় জীবন-জীবিকার তাগিদে কিশোর বয়সে নামতে হয়েছিলো জীবনযুদ্ধে।
মাত্র একদিন আগে এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ক্যানসার ইউনিটের নির্মাণাধীন ভবনে নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজে যোগ দেয় নয়ন।
কিন্তু চুরির অপবাদে নেমে আসলে নির্যাতনে ছটফট করতে করতে ত্যাগ করতে হলো শেষ নিঃশ্বাস। আর মৃত্যুর আগে, নির্যাতনের সময় কাতরাতে কাতরাতে পানি চেয়েছিলেন, কিন্তু তাকে পানি দেয়নি নির্যাতনকারীরা।
জানা যায়, শুক্রবার সকাল সাড়ে ৬ টার দিকে ওসমানী হাসপাতালের ক্যানসার ইউনিটের নির্মাণাধীন ভবনে কর্মরত নয়ন মিয়া ও আইয়ুব আলী নামের দুই শ্রমিককে চুরির অভিযোগে একটি রুমে নিয়ে ব্যাপক মারধর করেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন।
এ সময় কাতরাতে কাতরাতে নয়ন পানি চাললে তাকে পানি দেয়নি নির্যাতনকারীরা। পরে আহত অবস্থায় সকাল সোয়া ৯টার দিকে নয়নকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পরে ঘটনাস্থল থেকে হাত-পা বাধা অবস্থায় আরো এক শ্রমিককে উদ্ধার করে পুলিশ। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত আইয়ুব আলী বলেন, ‘নয়ন মারা যাওয়ার আগে পানি চেয়েছিল, কিন্তু নির্যাতনকারীরা তাকে পানি পর্যন্ত পান করতে দেয়নি।’
এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে নয়নের বাবা বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরো তিন-চারজনকে আসামি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় এপর্যন্ত ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলো- কুড়িগ্রামের কচাকাঁটা থানার নারায়ণপুর গ্রামের আমিনুল ইসলাম, আয়নাল, সাবান আলী, দিনাজপুরের বিরল উপজেলার তেঘরা গ্রামের রুবেল মিয়া ও বগুড়া শিবগঞ্জের আবদুর রাজ্জাক।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহম্মদ আলী মাহমুদ জানান- নিহতের লাশ ময়না তদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।