শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪ইংরেজী, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বাংলা ENG

শিরোনাম : সিলেটে আজ থেকে শুরু হচ্ছে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা সপ্তাহ ইসি আনিছুর রহমান: নির্বাচনে কোনো পক্ষপাতমূলক আচরণ সহ্য করা হবে না ব্রিটিশ-বাংলাদেশিদের বৈধ পথে রেমিটেন্স পাঠানোর আহবান জানালেন প্রবাসী কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী আব্দুস সামাদ আজাদের ১৯তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ এপিবিএন সিলেট এর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের উদ্বোধন বাংলাদেশী কর্মীদের ভিসা সহজ করতে যুক্তরাজ্য সরকারের প্রতি আহ্বান প্রবাসী প্রতিমন্ত্রীর উত্তরপূর্ব পত্রিকার কম্পিউটার ইনচার্জ অমিত দাস শিবুর রহস্যজনক মৃত্যু কোম্পানীগঞ্জে বাস সিএনজি সংঘর্ষে নিহত ২ সুনামগঞ্জে ট্রাক সিএনজি সংঘর্ষে একজন নিহত দেবাশীষ দেবুর মায়ের মৃত্যুতে ইমজা শোক

রমজানে শাহজালাল মাজারে এখনো বাজে ঐতিহ্যের ‘ডমখা’

মাসুদুর রহমান মাসুদ::

২০২৩-০৪-০৭ ০৬:১১:০৯ /

আগে প্রযুক্তির ব্যবহার ছিলনা। ছিলনা কারো হাতে মোবাইল ফোন কিংবা ‘এলার্ম ক্লক’। পরবর্তীতে সাইরেন ব্যবহার শুরু হলেও তা ছিল শুধুূ শহরকেন্দ্রীক। আগে পুরো সিলেট জুড়ে ছিল ‘ডমখার রেওয়াজ’। হযরত শাহজালাল (রহ.) সিলেটে আগমনের পর এই রেওয়াজ শুরু হয়।

এরপর প্রযুক্তি এসে ডমখার স্থান দখল করে নেয়। তারপরও এখনো সিলেটে ‘বাজে ডমখা’। তবে এটি পুরো এলাকা জুড়ে নয়। শুধুমাত্র মাজার কেন্দ্রীক হয়ে পড়েছে ঐতিহ্যের এই ডমখা বাজার প্রক্রিয়া। বৃহস্পতিবার রাত ২ টা।

হযরত শাহজালাল (রহ.) প্রধান ফটকের সামনে ঢাকের শব্দ। শব্দ শুনে লোকজন জড়ো হতে থাকেন। বেশ কিছু সময় ডমখাবাদকরা ফটকের সামনে অবস্থান করেন। একজনের পিঠে থাকে ‘ডমখা’।

আর অপরজন পিঠে থাকা ডমখায় দুই হাতে থাকা কাটি দিয়ে জোরে আঘাত করতে থাকেন। প্রচন্ড শব্দে ঘুম থেকে জেগে ওঠেন লোকজন। ধারাবাহিকভাবে চারজন মিলে এটি পেঠাতে থাকেন। রাত ২ টা থেকে প্রায় তিনটা পর্যন্ত বাজে ডমখা। পুরো দরগাহ এলাকা ঘুরে ফের প্রধান ফটকের সামনে গিয়ে শেষ হয় এই কার্যক্রম। এই কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত আছেন মাজারের ভক্ত ও কর্মচারীরা।

যখন যে সুযোগ পান তখনই ডমখা বাজাতে আসেন বলে জানালেন প্রবীন ডমখাবাদক হীরা মিয়া। তিনি জানান, এটি দেখতে ঢোলের মত। তবে তারা এটিকে ডমখা বলে থাকেন বলে জানান তিনি। তিনি জানান, ১৯৭১ সাল থেকে এই ডমখা বাজাচ্ছেন। তার আগে মুকিত মিয়া নামে একজন বাজাতেন।

তার কাছ থেকে তিনি সেটি রপ্ত করেন। প্রয়াত মুকিত মিয়া তাকে জানিয়েছেন ধারাবাহিকভাবে এটি চলে আসছে। তিনিও এই ডমখা বাজাচ্ছেন ৫২ বছর ধরে। তিনি জানান, এটি ধরে রেখেছেন মাজারের মোতায়াল্লি ও খাদেমরা।

তাই তিনিও এখনো রমজান এলে এটি বাজাতে কার্পণ্য করেন না। তার সঙ্গে তারা কারা এমন প্রশ্নের জবাবে হীরা মিয়া বলেন, তারা এই দরগার ভক্তও আশেকান। এটি বাজাতে তারা তার সঙ্গে এসে সামিল হয়েছেন। হীরা মিয়া বলেন, এই ডমখাটাও অনেক পুরনো। তিনি প্রায় ৫২ বছর ধরে এটি বাজাচ্ছেন।

এর আগে মুকিত মিয়াও সেটি বাজিয়েছেন। তবে এটির বয়স তার সঠিক জানা নেই। শাহজালাল মাজার থেকে শুরু হয়ে পুরো দরগাহ এলাকা প্রদক্ষিন করে ডমখা। ডমখার আওয়াজে সেহরী খাওয়ার জন্য ঘুম থেকে জেগে ওঠেন লোকজন।

মাজার এলাকার বাসিন্দা ব্যাংকার আবু সায়েম বলেন, তিনি দরগাহ এলাকায় ভাড়া থাকেন বছর তিনেক ধরে। এই তিন বছর ধরে ডমখার আওয়াজে তার এবং তার পরিবারের সদস্যদের ঘুম ভাঙ্গে। তিনি বলেন এর শব্দ শুনতে ভালই লাগে। তিনি এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখার জন্য মাজার কতৃপক্ষের কাছে আহবান জানান।

এ ব্যাপারে শাহজালার (রহ.) মাজারের মোতোয়াল্লি সরেউকম ফতেহ উল্লাহ আল আমান , বলেন আমি ছোটবেলা থেকে দেখে আসছি। বাবার কাছ থেকে শুনেছি তিনিও ছোটবেলা থেকে দেখে আসছেন। এভাবেই সেই সাড়ে ৭ শ বছর ধরে চলছে ডমখা বাজানোর রেওয়াজ।

তিনি বলেন, আগে সাইরেন বা অন্য কিছু ছিলনা। একারনে পুরো সিলেট জুড়ে ডমখা বাজানো হত। প্রযুক্তির ব্যবহারে ছোট হয়ে এসেছে পরিধি। এখন তারা শুধু সেই ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন। তিনি জানান যারা এটি বাজায় তারা সকলেই দরগাহর কর্মচারী কেউ কেউ দীঘদিন ধরে আছেন বলেও জানান মোতাওয়াল্লি।

 

তিনি বলেন, এখন তেমন প্রয়োজন না থাকলেও শুধু তারা এটি টিকিয়ে রেখেছেন ঐতিহ্য ধরে রাখতে। তিনি বলেন, এটি শেষ হবে ঈদের দিন সকালে। ঈদের জামাত শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শেষবারের মত বাজানো হবে। ওইদিন তাদেরকে মহল্লাবাসী যে যারমত করে সহযোগিতাও করে থাকেন।

এ জাতীয় আরো খবর

ফুটপাত দখল করে ব্যবসা, সিসিকের জরিমানা

ফুটপাত দখল করে ব্যবসা, সিসিকের জরিমানা

 পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সস্ত্রীক দেখা করলেন আনোয়ারুজ্জামান

পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সস্ত্রীক দেখা করলেন আনোয়ারুজ্জামান

 পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সস্ত্রীক দেখা করলেন আনোয়ারুজ্জামান

পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সস্ত্রীক দেখা করলেন আনোয়ারুজ্জামান

দায়িত্বগ্রহণের পর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত, মেয়র'র কৃতজ্ঞতা

দায়িত্বগ্রহণের পর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত, মেয়র'র কৃতজ্ঞতা

কয়েল, মশারি কিছুই মানছে না মশা

কয়েল, মশারি কিছুই মানছে না মশা

শুরুতেই সুসংবাদ: প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ মেয়র আনোয়ারুজ্জামানের

শুরুতেই সুসংবাদ: প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ মেয়র আনোয়ারুজ্জামানের