২০২৩-০২-২১ ০৩:৫৯:৪৮ / Print
জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজে (জেসিপিএসসি) এর উদ্যোগে যথাযোগ্য মর্যাদায় ‘মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করা হয়েছে।
আজ ২১ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮ টায় প্রভাতফেরির মধ্য দিয়ে দিবসের সুচনা হয়।
প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও অধ্যক্ষের নেতৃত্বে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে প্রভাতফেরি প্রতিষ্ঠানের শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হয়।
ভাষা শহিদদের স্মরণে শহিদ মিনারে প্রথমে সভাপতির নেতৃত্বে জেসিপিএসসি পরিচালনা পর্ষদের সদস্যবৃন্দ, অধ্যক্ষের নেতৃত্বে কলেজ, মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শাখার শিক্ষকমণ্ডলী, জেসিপিএসসি অ্যালামনাই এসোসিয়েশন, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
সকাল ৯.টায় প্রতিষ্ঠানের মাল্টিপারপাস হলে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত ও মোনাজাত, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, কবিতা আবৃত্তি, আলোচনাসভা এবং বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেসিপিএসসির পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১১ পদাতিক ব্রিগেডের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহমুদ মাওলা ডন, এএফডব্লিউসি, পিএসসি।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সভাপতি রেজওয়ানা আহমেদ। আলোচনা অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী হাফেজ আব্দুল্লাহ আল মামুন ও ভাষা শহিদদের উদ্দেশ্যে মোনাজাত পরিচালনা করেন সহকারী শিক্ষক মো. আতাউর রহমান।
একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ইন্দ্রাণী ভৌমিক এর উপস্থাপনায় বক্তব্য রাখেন সহকারী শিক্ষক প্রিয়ম প্রীতম পাল, একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী মারজানা হেলাল, দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী মনোজিৎ পাল।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহমুদ মাওলা ডন ভাষা শহিদদের পাশাপাশি বাঙালির স্বাধীনতা ও স্বাধিকার আন্দোলনের সকল পর্যায়ে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালনকারী সবার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, 'কোনো কোনো মহৎ দিন কখনও কখনও নিয়ে আসে যুগান্তরের সম্ভাবনা ৷
বাঙালির জাতীয় জীবনে একুশে ফেব্রুয়ারি তেমনই একটি দিন। বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষার স্মৃতিবিজড়িত এই দিনটি সংগ্রামের জলন্ত অগ্নিশিখায় উজ্জ্বল এবং রক্তাক্ত আত্মত্যাগের মহিমায় ভাস্বর।
এই দিনটিকে কেন্দ্র করে ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলনের রক্তাক্ত সংগ্রামের ভেতর দিয়ে বাঙালির জাতিসত্তায় যে চেতনার জন্ম হয়েছিল, তা ছিল এক অবিনাশী চেতনা।
যা আমাদের জাতীয় জীবনে আত্মত্যাগের বীজমন্ত্র হিসেবে পরবর্তী প্রতিটি গণআন্দোলনের চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করেছে।' তিনি আরও বলেন, 'একুশের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়েই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আমরা ১৯৬৬, ১৯৬৯ ও ১৯৭১ এ দেশমাতৃকার মুক্তির জন্য লড়াই করেছি আমরা।
একুশের পথ ধরেই ৩০ লাখ শহিদের এক সাগর রক্তের বিনিময়ে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিশ্বের মানচিত্রে আপন মহিমায় প্রতিষ্ঠা লাভ করেছ স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ।
ভাষা আন্দোলনের অমর স্মতি বিজড়িত মহান একুশে ফেব্রুয়ারি এখন আর আমাদের ইতিহাসের একটি রক্ত রঙিন দিন নয়, এ দিন এখন পেয়েছে বিশ্বস্বীকৃতি। পেয়েছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মর্যাদা।'
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে প্রধান অতিথি বলেন, 'তোমাদেরকে শিক্ষা সংস্কৃতিসহ সকল ক্ষেত্রে মহান একুশের অন্তহীন প্রেরণাকে কাজে লাগাতে হবে।
তোমাদের ব্যবহারিক জীবনে শুদ্ধ বাংলা লেখা ও বলার প্রতি যত্নশীল হতে হবে। মাতৃভাষার শুদ্ধ চর্চার মাধ্যমে তোমাদের শিক্ষাকে ঐশ্বর্ষমণ্ডিত করতে হবে এবং তোমাদের বিবেকবোধসম্পন্ন রুচিশীল নাগরিক হিসেবে তৈরি হতে হবে।
তোমাদের মনে রাখতে হবে, মাতৃভাষাকে অবহেলা করে কোনো জাতি সমৃদ্ধ হতে পারে না।
' দিবস উপলক্ষে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভাষার গান, কবিতা আবৃত্তি, চিত্রাঙ্কন, হাতের সুন্দর লেখা এবং রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিশেষ অতিথি পুরস্কার বিতরণ করেন।
প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ লে. কর্নেল মো. কুদ্দুসুর রহমান, পিএসসি এর নির্দেশনায় ও উপাধ্যক্ষ মো. আবদুল হান্নান এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠানের আহবায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সহকারী অধ্যাপক এম ফজলে এলাহী ও সদস্য ছিলেন শিক্ষকবৃন্দ।