শনিবার, ১ এপ্রিল ২০২৩ইংরেজী, ১৮ চৈত্র ১৪২৯ বাংলা ENG

শিরোনাম : সিলেটে সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্স গড়ে তোলার সদিচ্ছার কথা জানালেন প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ বাবু জিলাপির কড়াইয়ে দগ্ধ জাপা নেতা লিমনকে বাচানো গেল না হবিগঞ্জে স্বামীর মোটরসাইকেল থেকে পড়ে স্ত্রীর মৃত্যু শাবিতে ‘বন্যপ্রাণি সংরক্ষণ, চ্যালেঞ্জ ও সমস্যা’ শীর্ষক কর্মশালা স্ত্রী হত্যায় স্বামীর মৃত্যুদন্ড,দুই ধর্ষণ মামলায় দুজনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড সুনামগঞ্জে দুর্যোগ বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত মা-বাবা খুন: ছেলের মৃত্যুদন্ড দিলেন আদালত সিলেট বিভাগ উন্নয়ন পরিষদ জেলা ও মহানগর শাখার ইফতার মাহফিল সম্পন্ন উপজেলা চেয়ারম্যানদের ওপর ইউএনওদের কতৃত্ব আর থাকল না ছাতকে মসজিদ পরিচালনা নিয়ে দ্বন্ধ : যুবলীগ নেতার হামলায় আরেক যুবলীগ নেতা নিহত

৭ শতাধিক ডাক কর্মচারীর জীবন গাড়ি চলছে ৪ হাজার টাকার বেতনে

স্টাফ রিপোর্ট ::

২০২৩-০১-২৭ ১৬:০৪:৫৩ /

রানার ছুটেছে তাই ঝুমঝুম ঘন্টা বাজছে রাতে, রানার চলেছে খবরের বোঝা হাতে, রানার চলেছে, রানার! কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের ডাকপিয়নদের নিয়ে আবেগময়ী কবিতা এটি।

আগে রানাররা এ-ই চিঠি এসেছে, চিঠি। এভাবেই ডেকে ডেকে বাড়ি বাড়ি ছুটে যেতেন তারা। হাসি, আনন্দ, বেদনার সকল সংবাদ নিয়ে তারা হাজির হতেন বাড়ি বাড়ি।

হাসিমুখে সেই চিঠি গ্রহণ করতেন বাড়ির কর্তা ব্যক্তিরা। চিঠি হাতে পেয়ে ডাকপিয়নকে মিষ্টিমুখ করাতেও ভুল করতেন না তারা। অনেক ডাক পিয়ন ছিল পূর্ব পরিচিত। কোন বাড়িতে কার চিঠি যাবে সেটিও জানা ছিল তাদের। এখন আর এসব ডাক পিয়নদের কেউ খোঁজ রাখেনা।

সেরকম ডাকও তাদের পড়েনা। প্রযুক্তির শক্তিশালী অবস্থানের কারনে তারা এখন হারিয়ে যাওয়ার পথে। সিলেটের ৭ শতাধিক ডাক কর্মচারীর জীবন কাটছে অর্থনেতিক দৈন্যতার মধ্য দিয়ে। মাত্র ৪ হাজার টাকার বেতনে (সম্মানী ভাতা) চলছে তাদের জীবন গাড়ি। 

 

সিলেট প্রধান ডাকঘর সূত্রে জানা গেছে, বিভাগে সাড়ে ৩শ’টি ‘এক্সট্রা ডিপার্টমেন্টাল ব্রাঞ্চ অফিস’ রয়েছে। এসব ডাকঘরে ৩ জন কর্মচারী থাকেন। পোস্ট মাস্টার পদমর্যাদার একজন ‘ইডিএ’ (এক্সট্রা ডিপার্টমেন্টাল এজেন্ট), পোস্টম্যান পদমর্যাদার ‘ইডিডিএ’ (এক্সট্রা ডিপার্টমেন্টাল

ডেলিভারি এজেন্ট) একজন এবং একজন রানার পদমর্যাদার ‘ইডিএমসি’ (এক্সট্রা ডিপার্টমেন্টাল মেইল ক্যারিয়ার)। এরমধ্যে ইডিএ’র মাসিক বেতন ৪ হাজার ৪৭৫, ইডিডিএ’র ৪ হাজার ৩৫০ এবং ইডিএমসি’র মাসিক বেতন মাত্র ৪ হাজার ৩০০ টাকা। 


সিলেট বিভাগের সাড়ে ৩ শ ডাকঘরে প্রায় ৭’শ ইডিএ, ইডিডিএ ও ইডিএমসি কর্মরত রয়েছেন। কোনো উৎসব বা আনন্দভাতা নেই তাদের, নেই কোনো পেনশন বা অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা। শিক্ষা, চিকিৎসা ও বাসস্থানের সামান্য নাগরিক সুবিধাবঞ্চিত হলেও তারা ডাকবিভাগের অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মতোই নিষ্টার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন। 


সিলেটের ‘এক্সট্রা ডিপার্টমেন্টাল ব্রাঞ্চ অফিসের কর্মরতদের সঙ্গে আলাপ করলে তারা অনেকটা আক্ষেপ করে জানান- এখন সবকিছুর দাম উর্ধমুখী। এক কেজি চাল কিনতে গেলে ৬০ থেকে ৭০ টাকার দরকার। আটা এক কেজি ৭৫ টাকা।

এ অবস্থায় দুর্মূল্যের এই বাজারে হাতখরচ চালানোও কঠিন। একটা সম্মানজনক জীবনের আশায় দীর্ঘদিন ধরে তিনগুণ ভাতা বৃদ্ধির দাবি জানিয়ে আসছি। দাবি আদায়ের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ পোস্টাল ইডি কর্মচারী ইউনিয়নের ব্যানারে সারা দেশে বিভিন্ন সময়ে মানববন্ধন,

কর্মবিরতি ও স্মারকলিপি প্রদান করেছেন তারা। কিন্তু কোনো কিছুতেই তাদের দাবি বাস্তবায়িত হচ্ছে না। ফলে পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে তাদের।


নাম প্রকাশ না করে সিলেট পোস্ট অফিসের এক ইডিএ বলেন, আগে নামমাত্র স্বল্প মূল্যে তেল আটা তারা পেয়েছিলেন। সেটি জিয়া সরকারের আমলে কেড়ে নেওয়া হয়।

বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় ৪ হাজার টাকা বেতন পেলেও বর্তমান বাজার ব্যবস্থাপনায় এটা অনেক কম। তিনি বলেন, এক বেলা কামলা খাটলে ৫০০ টাকা উপার্জন করা যায়। অথচ আমাদের দৈনিক মজুরী ১৩৩ টাকা। এটা কোনভাবে মেনে নেওয়া যায় না। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি।


তিনি বলেন, চাকরির বয়স দুই যুগেরও বেশি হয়ে গেছে। প্রথমে ১২’শ টাকা ছিল মাসিক বেতন, পরে করা হয় ২২’শ টাকা। এখন মাসে পাই চার হাজার ৪৭৫ টাকা। এই বেতনের কথা কাউকে লজ্জায় বলতে পারি না। 


সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার লক্ষণাবন্দ ইউনিয়নের কৈলাস শাখা ডাকঘরের ইডিএ মো. জিল্লুর রহমান বলেন- টিনের ডাক বক্সের জায়গায় উন্নত (পজ) মেশিন, উন্নয়নের নতুন মাত্রা নিয়ে ডিজিটাল পোষ্ট-ই সেন্টার যোগ হলেও, পরিবর্তন হয়নি পোস্ট ইডিএ কর্মচারীদের ভাগ্যের।


সিলেটের দক্ষিণ সুরমার লালাবাজার ইউনিয়নের পশ্চিমভাগ শাখা ডাকঘরের ইডিডিএ জগদিশ চন্দ্র নাথ বলেন- আমাদের যে সম্মানীভাতা দেওয়া হয়, তা খুবই অসম্মানজনক। আমরা এই বঞ্চনার অবসান চাই। ধার-কর্জ করে দিনে দিনে নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছি। কিন্তু আমরা আর পারছি না। আমরা সম্মানজনক একটা জীবন চাই।


বাংলাদেশ পোস্টাল ইডি কর্মচারী ইউনিয়ন সিলেট জেলা শাখার (একাংশ) সভাপতি, বিশ্বনাথ উপজেলার পনাউল্লাহ শাখা ডাকঘরের ইডিএ আশরাফ আলী জানান, দাবি-দাওয়া আদায়ে তারা নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন চালিয়ে আসছেন।

সময়ে সময়ে ভাতা কিছুটা বাড়লেও সেটি কোনোভাবেই সম্মানজনক পর্যায়ে আসেনি। এছাড়াও দুই মাসের ভাতার সমান দু’টি উৎসবভাতা প্রদান করার দাবি জানান তিনি। 


এ ব্যাপারে সিলেটের প্রধান ডাকঘরের সহকারী পোস্ট মাস্টার জেনারেল (ট্রেজারি) মো. মুজিবুর রহমান বলেন- আমরা তাদের সম্মানী বাড়ার ব্যাপারে কাজ করছি।

এতে অনেক প্রক্রিয়া অবলম্বন করতে হয়। তিনি বলেন- ইডি ব্রাঞ্চে কর্মচারীদের বেতনবৈষম্য দূর করতে বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে ইডি কর্মচারীরা কিছুটা লাভবান হচ্ছেন। আশা করি তাদের সম্মানী বৃদ্ধির দাবিও প্রধানমন্ত্রী সুনজরে নেবেন। 

এ জাতীয় আরো খবর

৭ শতাধিক ডাক কর্মচারীর জীবন গাড়ি  চলছে ৪ হাজার টাকার বেতনে

৭ শতাধিক ডাক কর্মচারীর জীবন গাড়ি চলছে ৪ হাজার টাকার বেতনে

জুড়ীতে শত বছরের রথযাত্রায় হাজারো লোকের সমাগম

জুড়ীতে শত বছরের রথযাত্রায় হাজারো লোকের সমাগম

ইতিহাস গড়লেন ট্রান্স জেন্ডার অংকিতা

ইতিহাস গড়লেন ট্রান্স জেন্ডার অংকিতা

স্বপ্নের দেশ যুক্তরাজ্যে ‘শিক্ষা ভিসা’য  গিয়ে বিপাকে শিক্ষার্থীরা

স্বপ্নের দেশ যুক্তরাজ্যে ‘শিক্ষা ভিসা’য গিয়ে বিপাকে শিক্ষার্থীরা

আজ থেকে কার্যকর: রাত আটটার পর দোকান, বিপণিবিতান বন্ধ

আজ থেকে কার্যকর: রাত আটটার পর দোকান, বিপণিবিতান বন্ধ

বাংলাদেশে বিয়ের প্রতি আগ্রহ কমছে, ঝুঁকছে লিভটুগেদারে

বাংলাদেশে বিয়ের প্রতি আগ্রহ কমছে, ঝুঁকছে লিভটুগেদারে