চারিদিকে হলুদের সমারোহ। কাচা ফুলের গন্ধ। তারমধ্যে বিভিন্ন প্রজাতির বিভিন্ন রঙ্গেঁর প্রজাপতি আনাগোনা। এমন মনোমূগ্ধকর দৃশ্য সিলেটের গোলাপগঞ্জের হাকালুকির হাওরে।
বিশাল এ হাওরে যেদিকে চোখ যায় শুধু হলুদ আর হলুদের সমারোহ। এ যেন 'হলুদের গালিচা' বিছিয়ে রাখা হয়েছে হাওরজুড়ে। এমন দৃশ্য দেখলে যে কারোর মন জুড়িয়ে যায়। উপরে সাদা আর নীচে হলুদের সাথে প্রাকৃতি যেন সেজেছে নবরূপে।
বিশাল এ হাওর এলাকায় এবার চাষ হয়েছে আশানুরূপ সরিষা ক্ষেত। প্রাকৃতিক আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এবার বাম্পার ফলন হয়েছে সরিষার।
জানাযায়, সর্ববৃহত্ত হাকালুকির হাওর ছাড়াও উপজেলার শরীফগঞ্জ,
বাদেপাশা, বুধবারীবাজার, ঢাকাদক্ষিণ, ভাদেশর, আমুড়া, লক্ষণাবন্দ, লক্ষীপাশা, ফুলবাড়ীসহ পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় এবার সরিষা চাষ হচ্ছে ব্যাপকভাবে। শ্রম ও পুজিঁ সল্প হওয়ায় এ চাষের দিকে ঝুকছে কৃষকরা। উপজেলারয় এবার সাড়ে ৮শত হেক্টর লক্ষমাত্রা থাকলেও ফলন হয়েছে সাড়ে ৬শ হেক্টর (স্থানীয় ভাষার ৫হাজার কিয়ার)।
ভাল ফলন হওয়ায় কৃষকদের চোখেমূখে এখন হাসির ঝিলিক। প্রাকৃতিক কোন দুর্যোগ না হওয়ায় দ্রুত বেড়ে উঠেছে সরিষার গাছগুলো। হয়ত কয়েকদিন পরেই কৃষকরা জমি থেকে সরিষা তোলার কাজ শুরু করবে।
সরেজমিন হাকালুকির হাওর ঘুরে দেখা গেছে, শষ্যভাণ্ডার হিসেব খ্যাত এ হাওরের দু’ধারে এখন সারি সারি শুধু সরিষা আর সরিষা। মাঠের পর মাঠজুড়ে হলুদ ফুলে ভরা। চোখ জুড়িয়ে যাওয়া এমন দৃশ্য কৃষকের সারা বছরের পরিশ্রমের প্রমাণ দেয়।
এতে স্থানীয় কৃষকরা দারুন খুশি। তারা বলছেন, প্রাকৃতিক কোন দুর্যোগ দেখা না দিলে আমরা অনেক লাভমান হতে পারবো। অন্যান্য ফসলের চেয়ে সরিষা অনেক লাভজনক। সরিষার ফুল ফুটার পাশাপাশি হাসি ফুটিয়েছে কৃষকের মুখেও।
এদিকে, সরিষা খেত থেকে মৌ চাষ করে মধু আহরণের মাধ্যমে বাড়তি আয়ের পাশাপাশি ফসল ফলাতে সহায়তা পাবেন বলে তাদের প্রত্যাশা। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে,
গত কয়েক বছরে ফলন ও বাজারে ভালো দাম পাওয়ায় এ বছর সরিষার আবাদ বেশি হয়েছে। এবার সাড়ে ৮শ হেক্টর জমিতে চাষের লক্ষমাত্রা থাকলেও সরিষা চাষ হয়েছে সাড়ে ৬শ হেক্টর।
উচ্চ ফলনশীল ও লাভজনক সরিষা চাষে কৃষককে সর্বক্ষণিক কৃষি বিভাগ পরামর্শ ও সহযোগিতা করে আসছে।
শরীফগঞ্জ ইউনিয়নের কৃষকরা জানান, সরিষা চাষ করে অনেকেই লাভবান হচ্ছে। ফলে কৃষকরা সরিষা চাষের দিকে ঝুকছে। হাকালুকির হাওরে সরিষা ক্ষেত পরিদর্শন করেছেন সিলেটের কৃষি সম্প্রসারণ
অধিদপ্তরেরর উপ মহাপরিচালক খায়ের উদ্দিন মোল্লা ও সিলেট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর অতিরিক্ত উপপরিচালক (উদ্বিদ সংরক্ষণ) মোহাম্মদ আনিছুজ্জামান। বৃহস্পতিবার তারা পরিদর্শন করে কৃষকদের বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দেন তারা।
এবং সন্তষ প্রকাশ করেন। জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাশরেফুল আলম যুগান্তরকে বলেন, আমরা সরিষা চাষের বিষয়ে কৃষকদের সব সময় পরামর্শ দিয়ে আসছি। তাদেরকে বীজ দিচ্ছি।
সবসময় পরামর্শ দিচ্ছি তাদের। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা গৌতম পাল যুগান্তরকে বলেন, এবার আমাদের লক্ষমাত্রা ছিল সাড়ে ৮শ হেক্টর।
কিন্ত সরিষা চাষ হয়েছে সাড়ে ৬শ হেক্টর (স্থানীয় ভাবে ৫হাজার কিয়ার) চাষ হয়েছে। দিনদিন সরিষা চাষের দিকে কৃষকরা ঝুঁকছে বলে জানান তিনি।