২০২২-০৮-০৭ ১১:২৫:৪৬ / Print
খানাখন্দে ভরা সড়কে ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন ও মানুষ। রৌমারী উপজেলা সড়কের ইসলামী ব্যাংকের সামনে থেকে রোববারের তোলা ছবি খানাখন্দে ভরা সড়কে ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন ও মানুষ।
রৌমারী উপজেলা সড়কের ইসলামী ব্যাংকের সামনে থেকে রোববারের তোলা ছবি খানাখন্দে ভরা সড়ক। সামান্য বৃষ্টিতেই তলিয়ে যায়। যান চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে পরিবহন যাত্রী ও পথচারীদের। এতে প্রায় ঘটছে নানা ধরনের দুর্ঘটনা।
এমন এক দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন শেফালী খাতুন (২৮) নামের এক প্রসূতি। শনিবার রাতে ওই প্রসূতির প্রসবব্যথা ওঠে। পরে ভ্যানে করে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হন স্বজনরা। খানাখন্দে ভরা সড়কে গাড়ির ঝাঁকিতে এক কন্যাসন্তানের জন্ম দেন তিনি।
প্রসূতি শেফালী খাতুন ফরিজল হকের স্ত্রী। তার বাড়ি রৌমারী সদর ইউনিয়নের উত্তরপাড়া গ্রামে। শনিবার রাত ১টার দিকে জামালপুর (নন্দীবাজার)-ধানুয়া কামালপুর-রৌমারী-দাঁতভাঙা সড়কের কুড়িগ্রাম অংশের রৌমারী উপজেলা শহরের ইসলামী ব্যাংকের সামনে পৌঁছলে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযোগ রয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে এ সড়কটির সংস্কার ও সম্প্রসারণের কাজ বন্ধ থাকলেও নজরদারি নেই কারও। শেফালী খাতুনের শ্বশুর আজিমুদ্দিন জানান, প্রসবব্যথা উঠলে শেফালী খাতুনকে অটোভ্যানে করে হাসপাতালে নেওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়া হয়। উপজেলা শহরের ইসলামী ব্যাংকের সামনে সড়ক ভাঙাচোড়া হওয়ায় গাড়িতে প্রচণ্ড ঝাঁকি লাগে।
এ সময় কন্যা সন্তানের জন্ম দেন শেফালী খাতুন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে উপজেলার প্রাণকেন্দ্রে সড়কটি বেহাল অবস্থায় পড়ে থাকলেও কারও নজর নেই। সড়কটি ভালো থাকলে আজ আমার নাতির জন্ম সড়কে হতো না। আমার ছেলের বউ এখন অসুস্থ।
রৌমারী উপজেলা বাস ও মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি সেলিম মিয়া বলেন, ২০১৮ সালে সাড়ে ৩১ কিলোমিটার সড়ক সংস্কার ও সম্প্রসারণের জন্য সরকার ৩৩২ কোটি ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ দিলেও জনগণ এর কোনো সুফল পাচ্ছেন না। দুর্ভোগ আরও বেড়ে গেছে।
বিশেষ করে উপজেলা পরিষদ গেইট থেকে থানা মোড় পর্যন্ত এই সড়কটির অবস্থা খুবই খারাপ। অটোভ্যান চালক আব্দুল খালেক বলেন, ‘এ রাস্তায় গাড়ি চালাবার গেলেই প্রত্যেক দিন গাড়ি নষ্ট হয়। দিনে যা আয় হয়, গাড়ি হারতেই (মেরামত) তা শ্যাষ হয়। আমরা গরিব মানুষ। রাস্তা ভালো না।
বাঁচুম কিবা কইরা।’ সড়কের পাশে কয়েকজন দোকানদার বলেন, ‘সামান্য বৃষ্টি হলেই সড়কটি কাদা আর পানিতে তলিয়ে যায়। এসময় যানবাহন থেকে ছিটকে আসা কাদা দোকানের মালামাল নষ্ট হয়ে যায়। এতে অনেক ক্ষতি হয়।’ রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আশরাফুল আলম রাসেল বলেন, রাস্তার মাঝে সন্তান প্রসবের বিষয়টি জেনেছি।
সড়ক বেহালের বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকসহ (সার্বিক) প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রীকে জানানো হয়েছে। এছাড়াও কুড়িগ্রাম সড়ক ও জনপদের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলীকেও অনেকবার বলা হয়েছে।
সড়ক ও জনপদের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম বলেন, মাটি না পাওয়ার কারণে রাস্তার কাজ বন্ধ রয়েছে। ঠিকাদারকে তাগিদ দেওয়া হয়েছে। তারা জানিয়েছেন, চলতি মাসের ১৫ তারিখ থেকে কাজ শুরু করবেন।