২০২২-০৮-০২ ১৬:১৩:৩৬ / Print
সিলেট ওসমানী মেডিকেলের দুই শিক্ষার্থীর ওপর হামলার প্রতিবাদে ডাকা ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি ও শিক্ষার্থীদের ধর্মঘট চলছে। এরই মধ্যে মঙ্গলবার রাতে আরও কঠোর কর্মসূচির হুমকি দিয়েছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।
তারা বুধবার সকাল ১১টার মধ্যে অভিযুক্ত ৫ আসামির মধ্যে একজনকে হলেও যদি গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন। অন্যথায় জরুরি ও কার্ডিওলজি বিভাগসহ সকল বিভাগে তাদের (ইন্টার্ন চিকিৎসকদের) কার্যক্রম বন্ধ রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ডা. মতিউর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, হামলাকারী সকল আসামি গ্রেপ্তার এবং শিক্ষার্থী ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের নিরাপত্তায় দৃশ্যমান উদ্যোগ নেওয়ার পূর্ব পর্যন্ত আমরা ধর্মঘট চালিয়ে যাবো।দুই শিক্ষার্থীর উপর হামলার প্রতিবাদে সোমবার রাত থেকে সড়ক অবরোধ কেেরা বিক্ষোভ শুরু করেন ওসমানী মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থীরা।
রাতেই কর্মবিরতির ডাক দিয়ে আন্দোলনকারীদের সাথে যোগ দেন এ্ই হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।তবে প্রশাসনের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে সোমবার ভোর রাত ৩টায় পরদিন দুপুর ২টা পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেন তারা।
নির্ধারিত সময় সীমা শেষে মঙ্গলবার বেলা আড়াইটায় কলেজের মিলনায়তনে কলেজ ও হাসপাতাল প্রশাসন, পুলিশ ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠকে বসেন শিক্ষার্থীরা।বৈঠকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ঘটনায় ইতোমধ্যে দুজনকে আটচক করা হয়েছে।
বাকীদের আটকের চেষ্টা চলছে। কলেজ ও হাসপাতহাল প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুটি মামলা করা হয়েছে। এছাড়া শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানিয়ে প্রশাসনের কর্তারা শিক্ষার্থীদের আন্দোলন থেকে সরে আসার আহ্বান জানান।তবে ইন্টার্ন চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীরা হামলাকারী সকলকে গ্রেপ্তারের পূর্ব পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়ে বৈঠক থেকে চলে আসেন।
প্রশাসনের সাথে বৈঠক শেষে মঙ্গলবার বিবেল ৫টায় এ ঘোষণা দেন তারা। এসময় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভও শুরু করেন তারা। এদিকে, দাবি আদায়ে ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করেছে মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থীরা।দাবি পুরণ না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মেডিক্যাল কলেজের পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থী অমিত হাসান সানি।
এদিকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এক নারী ইন্টার্ন চিকিৎসককে লাঞ্ছিত ও দুই শিক্ষার্থীর উপর হামলার ঘটনায় মঙ্গলবার দুটি মামলা হয়েছে। কলেজ প্রশাসন ও হাসপাতাল প্রশাসনের দায়ের করা দুই মামলায় ৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।দুটি মামলায়ই প্রথান অভিযুক্ত করা হয়েছে মো. আব্দুল্লাহ নামের এক যুবককে।
তিনি সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সাবেক সিটি কাউন্সিলর আব্দুল খালিকের ভাতিজা। ওসমানী হাসপাতালের পাশেই তাদের বাসা।আব্দুল্লাহ ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত বলে জানা গেছে।
তবে দলে তার কোন পদ নেই। মহানগর ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতাদের সাথে তার ছবি ফেসবুকে ঘুরতে দেখা গেছে। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার হওয়া দুজনের মধ্যে একজনও ছাত্রলীগের পদদধারী নেতা।নারী ইন্টার্ন চিকিৎসককে লাঞ্ছিতের ঘটনায় মঙ্গলবার কতোয়ালি থানায় মামলা করেন হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ হানিফ।
মামলায় মো. আব্দুল্লাহর নাম উল্লেখ করে আরও ৩/৪ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।এছাড়া শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ঘটনায় মামলার বাদি হয়েছেন কলেজ অধ্যক্ষের সচিব মো. মাহমুদুর রশিদ। এই মামলায়ও প্রধান আসামি মো. আব্দুল্লাহ।
অপর আসামিরা হলেন- ৩ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোহিদ হাসান রাব্বি, এহসান আহম্মদ, মামুন, সাজন, সুজন ও সামি।কলেজ শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, আব্দুল্লাহর নেতৃত্বেই ইন্টার্ন চিকিৎসককে লাঞ্ছিত ও মঙ্গলবার দুই শিক্ষার্থীর উপর হামলা করা হয়।