সিলেটে বন্যার কারণে কুরবানির ঈদে পাঠানো প্রবাসী রেমিটেন্সের টাকা দুই ভাগে ভাগ হচ্ছে। কুরবানির পশু কেনার টাকার একটা ভাগ বন্যা দুর্গতদের মাঝে ত্রাণ হিসেবে বিতরণ করা হয়েছে। টাকার অন্য অংশ দিয়ে কেনা হচ্ছে মাঝারি আকারের দেশী গরু। বিগত দুই বছর ধরে করোনার কারণেও লন্ডন থেকে ঈদ উপলক্ষ্যে আসা টাকার পরিমাণ কমেছে। তাই অনেক প্রবাসী পরিবার কুরবানির ঈদেও থাকছেন নিজেদের সামর্থ্যের নিচে।
সরেজমিনে সিলেটের পশুর হাট ঘুরে এই তথ্য পাওয়া গেছে। প্রবাসী পরিবারের সদস্যরা জানান, গত দুই বছর ধরে করোনার ভয়াল থাবায় প্রবাসে থাকা প্রবাসীরা সিলেটে খুব সীমিত টাকা পাঠাচ্ছেন। কুরবানির ঈদে আগে যেখানে একজন লন্ডন প্রবাসী তিন লাখ টাকায় দুটি গরু কিনে কুরবানি দিয়েছেন, তিনি এবার এক লাখ টাকার মাঝে দেশী গরু খুঁজছেন। প্রবাসীরা তাদের পরিবারে পাঠানো টাকা দুটি ভাগ করে দিচ্ছেন। একটি অংশ গরু কিনতে, অপর অংশ যাবে বন্যার্ত মানুষের সহায়তার জন্য। তাই এবার সিলেটের হাটে দেশী গরুর চাহিদা বেড়েছে।
কাজিরবাজার পশুর হাটে গিয়ে জানা গেছে, সিলেটের মাঝে সবচেয়ে বড় হাট হলো কাজিরবাজার পশুর হাট। এই হাটে ভারত ও নেপালের গরুতে ঠাসা থাকে কুরবানির ঈদে। কিন্ত এবার ঘটছে উল্টো। দেশী মাঝারি গরুতে ভরপুর হাটটি। সিলেটের সীমান্ত কানাইঘাট, গোয়াইনঘাট ও জকিগঞ্জ থেকে এবার ভারতের গরু বন্যার কারণে প্রবেশ করতে পারছে না। অন্যদিকে, লন্ডন প্রবাসী পরিবারের চাহিদা দেশী গরু। পাশাপাশি সুনামগঞ্জের হাওর এলাকার বন্যা কবলিত কৃষক পরিবারের গরুগুলো ব্যাপারীরা ঈদকে টার্গেট করেই আগেই কিনে নিয়েছিলেন পানির দামে। সেই দেশী প্রজাতির গরুতে ভরা বাজার। কিন্তু ক্রেতা কম। প্রবাসী ও বড় ব্যাবসায়ী ছাড়া সাধারণ ক্রেতাদের উপস্থিতি কম।
এক লাখ টাকা দিয়ে একটি সাদা মাঝারি দেশী গরু কিনেছেন লন্ডন প্রবাসী হান্নান মিয়া। তিনি বলেন,‘ এবার বন্যায় কুরবানির কিছু টাকা দুর্গত মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণে খরচ করেছি। এক লাখ টাকা দিয়ে একটা দেশী গরু কিনেছি কুরবানির জন্য। অন্য বছর দেড়-দুই লাখের মাঝে কুরবানি দিতাম।’
কাজির বাজার পশুর হাটের ম্যানেজার লুলন মিয়া বলেন,‘ আমাদের হাটে দেশী-বিদেশী প্রচুর গরু উঠেছে। তবে, এখনও বাজার জমেনি। আশা করছি, শুক্রবার –শনিবার জমবে।’
ট্রাক টার্মিনালের গরু ব্যাপারী ছমসুল হক বলেন,‘ ক্রেতাদের চাহিদা বেশি মাঝারি দেশী গরুর দিকে। তাই বাজারে দেশী গরু এসেছে বেশি। দেশী গরুর বিক্রিও মোটামুটি হচ্ছে। তবে অন্য বছরের চেয়ে এবার বন্যার কারণে বিক্রি একটু কম।’