সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ার্ড বয়-এর উপর হামলার
ঘটনায় যমুনা সিকিউরিটি কোম্পানীর মালিক (প্রোপাইটর) জাহাঙ্গীর
আলমকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার দিবাগত রাতে কাজশাহ
বাগবাড়িস্থ বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গত ২৩ মে রাতে ওসমানী
মেডিকেল রোডের আল-মামুন রেস্টেুরেন্টের সামনে হামলার এ ঘটনা ঘটে।
আহত ওয়ার্ড বয়কে ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করে তার অস্ত্রোপচার করা হয়।
এ ঘটনায় গুরুতর আহত ওয়ার্ড বয় দুলাল মিয়া’র ভাই এখলাছুর রহমান বাদী
হয়ে গত ২৮ মে সিলেট কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি মামলা করেন।
মালায় যমুনা সিকিউরিটি কোম্পানীর মালিক জাহাঙ্গীর
আলম ও তার ছেলেসহ ৩ জনকে এজাহারভুক্ত আসামী করা হয়। যার মামলা নং
৬৪(৫)২২।
সিলেট কোতোয়ালি মডেল থানা ও হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, সিলেট
ওসমানী হাসপাতালে বুশরা সিকিউরিটি প্রাইভেট লিঃ ও যমুনা
সিকিউরিটি সার্ভিসের লোকজন চুক্তিমূলে ওয়ার্ড বয় ও সিকিউটির
কাজ করে থাকে। গত ২৩ মে যমুনা সিকিউরিটির ওয়ার্ড বয় রইছ উদ্দিন ও
বুশরা সিকিউরিটির ওয়ার্ড বয় দুলাল মিয়ার মধ্যে ডিউটিসহ বিভিন্ন
অনিয়ম নিয়ে কথা কটাকাটি হয়। এসময় যমুনা কোম্পানীর নিযুক্ত
ওয়ার্ড বয় রইছ উদ্দিন প্রতিপক্ষ দুলাল মিয়াকে হত্যার হুমকি দেয়। এতে দুলাল
মিয়া যমুনা সিকিউরিটি’র প্রোপাইটর জাহাঙ্গীর আলমের কাছে বিচার
প্রার্থী হন। বিচারপ্রার্থী হওয়ায় যমুনা সিকিউরিটির ওয়ার্ড বয় রইছ
উদ্দিন ও প্রোপাইটর জাহাঙ্গীর আলম এবং জাহাঙ্গীরের ছেলে রাকিব আহমদ
ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। তারা দুলাল মিয়াকে ওসমানী হাসপাতাল রোডস্থ আল-মামুন
রেস্টেুরেন্টের সামনে পেয়ে ধারলো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে। উপস্থিত লোকজন মুমুর্ষ
অবস্থায় দুলাল মিয়াকে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করেন। অবস্থা
গুরুতর হওয়ায় দুলাল মিয়ার শরীরে অস্ত্রোপচার (সার্জারী) করা হয়। পরে দুলাল
মিয়া ওসমানী হাসপাতালের ৩য় তলাস্থ ১১ নং ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন।
এ ঘটনার মামলায় যমুনা সিকিউরিটি কোম্পানীর প্রোপাইটর জাহাঙ্গীরকে
গ্রেফতার করা হলে মঙ্গলবার তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়। আদালতের
জেনারেল রেজিস্ট্রার অফিসার (জিআরও) গ্রেফতারকৃত জাহাঙ্গীরকে জেল
হাজতে প্রেরণের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
অভিযোগে প্রকাশ, যমুনা সিকিউরিটি কোম্পানীর মালিক জাহাঙ্গীর আলম ওসমানী হাসপাতালে সবেতনে সিকিউরিটি
গার্ড ও ওয়ার্ড বয় দেওয়ার চুক্তি করে হাসপাতাল থেকে তাদের বেতন ও সেবা বাবদ টাকা গ্রহণ করেন। বর্তমানে হাসপাতালে যমুনা
সিকিউরিটি কোম্পানীর ৭০ জন সিকিউরিটি গার্ড ও ৪০ জন ওয়ার্ড
বয় কর্মরত রয়েছেন। মূলত যমুনা’র মালিক জাহাঙ্গীর তাদেরকে কোন বেতনই
দেন না। উল্টো প্রতিদিনই তাদের কাছ থেকে ২২০ টাকা করে আদায় করে
থাকেন। ফলে ওই সব গার্ড ও বয় প্রত্যহ ডিউটিকালে রোগী ও তাদের স্বজন
এবং দর্শনার্থীদের কাছ থেকে বিভিন্নভাবে টাকা আদায় করে
কোম্পানীকে দৈনিক টাকা দেন। যমুনা
কোম্পানীর স্টাফদের চাঁদাবাজির কারণেই বদনাম হচ্ছে ওসমানী
মেডিকেলসহ সমগ্র সিলেটের।