কোম্পানীগঞ্জে ৭টি কালভার্ট ভরাট করে চলছে ধলাই সেতু থেকে দয়ারবাজার পর্যন্ত সড়কের সংস্কার কাজ। ফলে বৃষ্টি হলেই পানির প্রবাহ বন্ধ হয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। জলবদ্ধ পানি আশপাশের বাড়ি-ঘরের আঙ্গিনায় তৈরি করছে নোংরা পরিবেশ। এ অবস্থায় দুর্ভোগে পড়েন স্থানীয় ও পথচারী লোকজন। বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনকে জানিয়েও মিলছে না কোন প্রতিকার।
তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লুসিকান্ত হাজং বলছেন, দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সরেজমিন দেখা যায়, কালভার্টের মুখ বন্ধ থাকায় একমুখী পানির চাপে কলাবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন রাস্তায় একটি বৈদ্যুতিক খুঁটিকে কেন্দ্র করে গভীর গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। যেকোনো সময় খুঁটিটি পড়ে গিয়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে।
এ বিষয়ে কোম্পানীগঞ্জ পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএম মৃণাল কান্তি চৌধুরী জানান, 'এটি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর দেখার কথা। যেহেতু তাদের অধীনে সড়কের সংস্কার কাজ হচ্ছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে উপজেলা প্রকৌশলীকে জানিয়েছি।
তবে, আমরা ওই এলাকার বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দিতে পারি।'
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী (চলতি দায়িত্ব) মোঃ শাহ্ আলম বলেন, 'বৈদ্যুতিক ওই খুঁটিটি রাস্তায় পড়ে নাই। কাজেই আমাদের দেখার কিছু নেই। রাস্তায় যেসব খুঁটি পড়েছে সেগুলো অপসারণের জন্য আবেদন করা হয়েছে।'
কালভার্ট ভরাট করে সড়ক সংস্কার বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী বলেন, 'কালভার্টগুলো আগে থেকেই বন্ধ ছিল। রাস্তা নির্মানের কারণে নতুন করে এগুলো বন্ধ করা হয়নি। মূলত খালগুলো ভরাট হয়ে যাওয়ায় পানি প্রবাহে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছে। এজন্য কালভার্ট পুনঃসংস্কারের পাশাপাশি খালগুলোও খনন করা দরকার।'
জানা গেছে, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার জনগুরুত্বপূর্ণ ভোলাগঞ্জ-কলাবাড়ি-দয়ারবাজার সড়কের উন্নয়ন কাজ চলছে। ৩ দশমিক ৭৫ মিটার দৈর্ঘ্যের সড়কটিতে ছোট-বড় ৭টি কালভার্ট রয়েছে। সড়কের নির্মাণ কাজ করতে গিয়ে কালভার্টগুলো ভরাট করে ফেলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তাতে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা একেবারে বন্ধ হয়ে যায়। ফলে বৃষ্টি হলেই দেখা দেয় জলাবদ্ধতা।
স্থানীয়রা জানান, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান স্থানীয় কিছু ব্যক্তির যোগসাজশে কালভার্টগুলো ভরাট করে নিজেরা সুবিধাভোগ করছেন।
কলাবাড়ি এলাকার বাসিন্দা আব্দুল আলীম জানান, কালভার্টগুলো ভরাট করায় জলাবদ্ধতার কারণে জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে।
সাবেক ইউপি সদস্য আরাফাত আলী বলেন, কালভার্ট ভরাট করে ইতিমধ্যে রাস্তার দুই পাশে ইটের গাঁথুনির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ফলে জনদুর্ভোগ দেখা দিয়েছে।
এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স মমিনুল হক এবং মেসার্স এম রহমান (জেভি) এর পক্ষে নিয়োজিত স্থানীয় ঠিকাদার ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অখিল বিশ্বাস বলেন, কালভার্টগুলোর মুখ আগেই বন্ধ ছিল। রাস্তার কাজে কালভার্টে আমরা হাত দেইনি। পূর্বে যে অবস্থায় ছিল, সেভাবে রেখেই রাস্তায় ইটের গাঁথুনি করা হয়েছে।