২০২২-০৫-২৮ ১০:২২:০৪ / Print
বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কলাম লেখক আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
শনিবার বিকেল পৌনে ৬টায় রাজধানীর মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে স্ত্রী সেলিমা আফরোজ চৌধুরীর কবরের পাশে তাকে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়।
এসময় মিরপুর-১৪ আসনের সংসদ সদস্য আগা খান মিন্টু, ঢাকা উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচিসহ বিভিন্ন স্তরের মানুষজন উপস্থিত ছিলেন।
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সভাপতি নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু এ তথ্য জানিয়েছেন।
এর আগে বিকেল ৪টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের টেনিস গ্রাউন্ডে আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর দ্বিতীয় জানাজা সম্পন্ন হয়।
শনিবার বিমানবন্দরে উপস্থিত থেকে আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর মরদেহ আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করেন মন্ত্রিসভার জ্যেষ্ঠ সদস্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজম্মেল হক।
বাংলাদেশ হাইকমিশন লন্ডনের তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে শনিবার সকাল ১১টার দিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায় আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর মরদেহ।
সেখানে আরও উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন, বিমান প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, আওয়ামী লীগ নেতা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী বিপ্লব বড়ুয়া।
সেখানে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান তারা। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বিকেল ৩টা ১০মিনিটে আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর মরদেহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে আনা হয়।
এরপর বেলা ৩টা ২২ মিনিটে সেখানে জানাজা সম্পন্ন হয়। কালজয়ী গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’-এর রচয়িতা আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী লন্ডনের বার্নেট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
সেখানেই তার মৃত্যু হয়। তার বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর। ভাষা সৈনিক গাফ্ফার চৌধুরী সমকালে ‘কালের আয়নায়’ শিরোনামে নিয়মিত কলাম লিখতেন।
১৯৩৪ সালে বরিশালে জন্ম নেওয়া গাফ্ফার চৌধুরী ১৯৫৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ অনার্স পাস করে ইত্তেফাক সম্পাদক তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার রাজনৈতিক পত্রিকা ‘চাবুক’ এর দায়িত্ব নেন।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রবাসী সরকারের মুখপাত্র ‘জয়বাংলা’য় কাজ করেন গাফ্ফার চৌধুরী। ১৯৭৪ সালে অসুস্থ স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যে চলে যান তিনি। এরপর সেখানেই স্থায়ী হন।
লন্ডন থেকে দেশের সংবাদপত্রে নিয়মিত কলাম লেখেন তিনি। কলাম ছাড়াও কবি, নাট্যকার ও ঔপন্যাসিক হিসেবে পরিচিত তিনি। বঙ্গবন্ধু হত্যার ওপর লেখা 'পলাশী থেকে ধানমণ্ডি' তার বিখ্যাত নাটক।
১৯৫০-এর দশকে সাংবাদিকতার মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন তিনি। পেশাগত কাজে সফলতার স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলা একাডেমি পুরস্কার, একুশে পদক, স্বাধীনতা পদক, ইউনেস্কো পুরস্কার, বঙ্গবন্ধু পুরস্কার, মানিক মিয়া পদকসহ দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক অসংখ্য পদক ও পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।