লেখক ও শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালকে হত্যাচেষ্টা মামলায় একজনের যাবজ্জীবন
৩০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারা কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আরেক আসামির চার বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বাকি চার আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার সিলেট বিভাগীয় সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালের বিচারক নুরুল আমীন বিপ্লব এ রায় ঘোষণা করেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, হামলাকারী ফয়জুল হাসান ফয়েজকে যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ফয়জুলের বন্ধু সোহাগ মিয়াকে চার বছরের কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন মাস কারাদন্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ফয়েজ সুনামগঞ্জের দিরাই থানার কালিয়াকাপন গ্রামের মাওলানা আতিকুর রহমানের ছেলে। তার বন্ধু সোহাগ একই থানার উমেদনগর গ্রামের সাদেকুর রহমানের ছেলে।
এ মামলার ছয় আসামির বাকি চারজনকে খালাস দিয়েছেন আদালত। এই চারজন হলেন, ফয়েজের বাবা আতিকুর রহমান, মা মিনারা বেগম, মামা ফজলুল হক ও ভাই এনামুল হাসান।
সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মমিনুর রহমান টিটু বলেন, রায়ে খালাসপ্রাপ্ত চারজনের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে কিনা, সে সিদ্ধান্তও রায়ের কপি দেখেই নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
এ মামলার আসামিপক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট মোতাহের আলী। তিনি বলেন, রায়ের কপি হাতে পাওয়ার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
গত ২২ মার্চ উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে সিলেট বিভাগীয় সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালের বিচারক নুরুল আমীন বিপ্লব রায় ঘোষণার এ দিন নির্ধারণ করেন। মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আসামিদের আদালতে হাজির করা হয়।
গত ১০ মার্চ চাঞ্চল্যকর এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়। এই মামলায় মোট ৫৬ জন সাক্ষীর মধ্যে ৩৫ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়। এরপর ২১ ও ২২ মার্চ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। এই মামলার প্রধান আসামি ফয়েজ ছাড়া বাকি পাঁচজন জামিনে ছিলেন। যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের দিন তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক।
২০১৮ সালের ৩ মার্চ বিকেলে শাবি ক্যাম্পাসের মুক্তমঞ্চে একটি অনুষ্ঠান চলাকালে ড. জাফর ইকবালের ওপর হামলা হয়। মাদ্রাসাছাত্র ফয়েজ ছুরি দিয়ে জাফর ইকবালের মাথা ও ঘাড়ে উপর্যুপরি আঘাত করেন। এ সময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছাত্র-শিক্ষকরা হামলাকারীকে হাতেহাতে ধরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করেন। এদিকে জাফর ইকবালকে আহত অবস্থায় প্রথমে নগরীর এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং পরে ঢাকায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
এ ঘটনার পর শাবির রেজিস্ট্রার ইশফাকুল হোসেন বাদী হয়ে মহানগর পুলিশের জালালাবাদ থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করেন। ২০১৮ সালের ১৬ জুলাই ফয়েজসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জালালাবাদ থানার তৎকালীণ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম।
সিলেটসানডটকম-এওয়াইটি