অনাস্থা ভোটে হেরে যাওয়া প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বিদেশি শক্তি তার ওপর নাখোশ হয়েছে বলে যে অভিযোগ করেছেন, তা একেবারেই সত্য নয় বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর।
ইমরান আগে কয়েকবার বলেছেন, তার স্বাধীন বৈদেশিক নীতি বিদেশি শক্তিদের নাখোশ করেছে। আর এসব শক্তিই তার বিরোধীদের অর্থ দিয়ে অনাস্থা প্রস্তাব আনতে সহযোগিতা করেছে।
গত শুক্রবার রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে ইমরান খান তার ষড়যন্ত্র তত্ত্ব আবার তুলে ধরেন। সরকার পরিবর্তনের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার হুমকির বিষয়টি তিনি তুলে ধরেন।
এর আগে সেই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার নামও প্রকাশ করেন ইমরান খান। তিনি মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ব্যুরো অব সাউথ অ্যান্ড সেন্ট্রাল এশিয়ার অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু। তিনি যুক্তরাষ্ট্রে পাকিস্তানি রাষ্ট্রদূত আসাদ মাজিদ খানকে হুমকি দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ করেন ইমরান খান।
শুক্রবার সন্ধ্যায় মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র জেলিনা পোর্টারের কাছে এ অভিযোগ তুলে ধরা হয়। জবাবে পোর্টার বলেন, আমি আবার নির্দ্বিধায় বলছি, এই অভিযোগের পেছনে কোনো সত্য নেই।
পোর্টার আরও বলেন, অবশ্যই আমরা ঘটনার অগ্রগতির দিকে নজর রাখছি। কারণ আমরা পাকিস্তানের সাংবিধানিক প্রক্রিয়া এবং আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং তাকে সমর্থনও করি। কিন্তু আবারও বলছি, এই অভিযোগের পেছনে কোনো সত্য নেই।
শনিবার মধ্যরাতে পাকিস্তানের পার্লামেন্টের জাতীয় পরিষদে অনাস্থা ভোটে প্রধানমন্ত্রিত্ব হারান ইমরান খান।
অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে অর্থাৎ ইমরানের বিরুদ্ধে ভোট পড়ে ১৭৪টি। ৩৪২ আসনের জাতীয় পরিষদে প্রস্তাবটি পাসের জন্য দরকার ছিল ১৭২টি ভোট।
দেশের আর্থিক দুরবস্থা ও ভুল পররাষ্ট্রনীতির অভিযোগে ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনে বিরোধী দলগুলো। এ অনাস্থা প্রস্তাবকে ‘অসাংবিধানিক’ আখ্যা দিয়ে ৩ এপ্রিল খারিজ করে দেন জাতীয় পরিষদের ডেপুটি স্পিকার কাসিম খান সুরি। ওই দিনই প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেন প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি। এতে চরম রাজনৈতিক সংকটে পড়ে পাকিস্তান।
এ পরিস্থিতিতে স্বতঃপ্রণোদিত নোটিশ দেন সুপ্রিম কোর্ট। বিরোধীরাও আদালতের শরণাপন্ন হন। টানা পাঁচদিনের শুনানি শেষে গত বৃহস্পতিবার অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ ও জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত অসাংবিধানিক ঘোষণা করেন সর্বোচ্চ আদালত। একইসঙ্গে শনিবার অনাস্থা প্রস্তাবের সুরাহার নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বৃহত্তর