
২০২২-০৪-০৭ ১৪:২৩:৫৬ / Print
গত ৩০ এপ্রিল প্রকাশিত হয় ৪০তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফলাফল। এরপর থেকেই আলোচনায় উঠে আসে পুলিশ কনস্টেবল আব্দুল হাকিমের নাম। পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরিতে থাকা অবস্থায় ৪০ তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফলাফলে পুলিশ ক্যাডারে (এএসপি) সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন বলে দাবি করেন নরসিংসীর এই যুবক। এবার জানা গেল, হাকিমের এএসপি হওয়ার খবরটি পুরোপুরি ভুয়া। বিসিএসে উত্তীর্ণ তো দূরের কথা, বিসিএস পরীক্ষাই দেননি তিনি।
বৃহস্পতিবার পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. ফারুক হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
ফারুক হোসেন বলেন, আব্দুল হাকিম নামের ওই কনস্টেবল দাবি করেছেন, তিনি বিসিএস পুলিশ ক্যাডারে সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) পদের জন্য বাছাই হয়েছেন। তার এই দাবি ঠিক নয়, ভুয়া। আব্দুল হাকিমের কথাবার্তা শুনে মনে হচ্ছে, সে মানসিক বিকারগ্রস্ত।
তিনি আরো বলেন, আমরা খবর নিতে শুরু করেছি। সে কেন এমন দাবি করেছে তা খতিয়ে দেখতে হবে। সে কেন এমন তথ্য মিডিয়াকে দিল! শেষ পর্যন্ত যদি প্রমাণ হয় যে এসব সত্যিই মিথ্যাচার, তবে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
হাকিম নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার শ্রীনগর ইউনিয়নের সায়দাবাদ গ্রামের সিরাজ মিয়ার পঞ্চম সন্তান। ২০১৩ সালে কনস্টেবল হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশে যোগদান করেছিলেন তিনি। কনস্টেবল হিসেবে পুলিশে যোগ দেওয়া হাকিম বর্তমানে নায়েক হিসেবে বাহিনীতে কর্মরত রয়েছেন।
এর আগে আব্দুল হাকিম বিসিএস কেন্দ্রিক বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট দিয়ে জানান, পুলিশ কনস্টেবল থেকে ৪০তম বিসিএসের ফলাফলে পুলিশ ক্যাডারে মেধাতালিকায় ৬৭তম স্থান অর্জন করেছেন তিনি।
হাকিমের এমন সাফল্য গাঁথা মুহূর্তের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। একের পর এক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দনের বন্যায় ভাসতে শুরু করেন তিনি। এমনকি দেশের অনেক শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যম হাকিমের এমন অভাবনীয় সাফল্যের গল্প ফলাও করে প্রচার করে।
তবে সপ্তাহ না যেতেই উল্টে গেল দাবার দান। জানা গেল, ওই কনস্টেবল ডাহা মিথ্যাচার করেছেন। প্রচার করেছেন বানানো গল্প। বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি) কর্তৃক প্রকাশিত তালিকায় দেখা যায়, সিলেট অঞ্চল থেকে আবেদন করা সঞ্জীব দেব ৪০তম বিসিএসের পুলিশ ক্যাডারে ৬৭তম স্থান অর্জন করেছেন। তার রোল নম্বর ১৬০০৪৩৯১।
পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হওয়া সঞ্জীব শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ২০১২-১৩ সেশনের শিক্ষার্থী ছিলেন। প্রথম বিসিএসেই পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন তিনি। এমনকি তার প্রবেশপত্রেও ৪০তম বিসিএসে অংশগ্রহণ ও রোল নম্বরের সত্যতা পাওয়া গেছে।