কপালে টিপ পরা নিয়ে রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় শিক্ষক লতা সমাদ্দারকে লাঞ্ছনা ও অশালীন আচরণের অভিযোগে আটক পুলিশ কনস্টেবল নাজমুল তারেককে চাকরি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। সোমবার (৪ এপ্রিল) বিকেল ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এর আগে সকালে প্রবাসী বিভাগের পুলিশ কনস্টেবল নাজমুলকে শনাক্ত করে হেফাজতে নেওয়া হয়। ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
এদিন ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার ওই কনস্টেবলকে শনাক্তের বিষয়ে বলেন, ওই কনস্টেবলের নাম নাজমুল তারেক। ঘটনার সঙ্গে জড়িত হিসেবে তাকে চিহ্নিত করেছি আমরা। শিক্ষক যে জিডি করেছিলেন, তার যথাযথ তদন্ত হবে।
শনিবার (২ এপ্রিল) রাজধানীর গ্রিন রোডের বাসা থেকে কলেজে যাওয়ার পথে উত্ত্যক্তের শিকার হন তেজগাঁও কলেজের প্রভাষক ড. লতা সমাদ্দার। তিনি অভিযোগ করেন, ‘হেঁটে কলেজের দিকে যাওয়ার সময় হুট করে পাশ থেকে মধ্যবয়সী, লম্বা দাড়িওয়ালা একজন ‘টিপ পরছোস কেন’ বলেই বাজে গালি দেন তাকে। ওই মধ্যবয়সী ব্যক্তির গায়ে পুলিশের পোশাক ছিল।
ঘটনার প্রতিবাদ জানালে এক পর্যায়ে তার পায়ের ওপর দিয়েই বাইক চালিয়ে চলে যান সেই ব্যক্তি।’ পরবর্তী সময়ে এ ঘটনায় শেরেবাংলা নগর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এর প্রতিবাদ জানিয়ে বিচার দাবি করছেন অনেকেই।
শিক্ষককে ‘বাজে গালি দেওয়ার’ পর তার গায়ে মোটরসাইকেলের চাকা তুলে হেনস্তার অভিযোগ ওঠা পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠেছে সংসদেও। রবিবার (৩ এপ্রিল) সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় সরকারি দলের সংরক্ষিত আসনের সুবর্ণা মুস্তাফা এ দাবি তোলেন।
সংসদে সুবর্ণা মুস্তাফা বলেন, দেশের কোন আইন, কোন সংবিধানে লেখা আছে যে টিপ পরা যাবে না? দল-মত নির্বিশেষে বিশেষ করে নারী সমাজের জন্য অত্যন্ত ঘৃণিত একটি ঘটনা এটি। ইভটিজিং আমরা শুনে এসেছি। বখাটে ছেলেরা স্কুলের বাচ্চাবাচ্চা মেয়েদের ইভ টিজ করে। সেই পরিস্থিতি এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রিত। কিন্তু আমি যখন দেশের আইনরক্ষাকারী কাউকে ইভটিজিংয়ের ভূমিকায় দেখি, তখন সেটা আমাদের সবার জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক।’
সিলেটসানডটকম -এবিসি