দেশের সবচেয়ে বেশি বাল্যবিবাহের প্রবনতা চাঁপাইনবাবগঞ্জে (৭২ শতাংশ) এবং সবচেয়ে কম সিলেটে (২৫ শতাংশ)।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক সায়মা হক বিদিশার নেতৃত্বে ‘অ্যানালাইসিস অব পাবলিক বাজেট অ্যালোকেশন ফর দ্য ইফেকটিভ ইমপ্লিমেন্টেশন অব দ্য ন্যাশনাল অ্যাকশন প্ল্যান টু এন্ড চাইল্ড ম্যারেজ’ (বাল্যবিবাহ নির্মূলে জাতীয় কর্মপরিকল্পনার কার্যকর বাস্তবায়নের জন্য বরাদ্দ করা জাতীয় বাজেট বিশ্লেষণ) শিরোনামে একটি গবেষণায় এমন চিত্র পাওয়া গেছে।
গবেষণায় ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে অক্টোবরে ২১ জেলার ৮৪টি উপজেলায় ‘র্যাপিড অ্যানালাইসিস অব চাইল্ড ম্যারেজ সিচুয়েশন ডিউরিং কোভিড-১৯ ইন বাংলাদেশ’ শিরোনামের জরিপে ১৩ হাজার ৮৮৬টি বাল্যবিবাহের তথ্য পাওয়া যায়। মেয়েদের মধ্যে ৫০ শতাংশের বয়স ১৬-১৭ বছর, ৪৮ শতাংশের ১৩-১৫ বছর এবং ২ শতাংশের বয়স ১০-১২ বছর ছিল। চাপাইনবাবগঞ্জ ছাড়াও বাল্যবিবাহ বেশি হয়েছে বরগুনা, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী ও লক্ষ্মীপুরে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো ও ইউনিসেফের মাল্টিপল ইন্ডিকেটর ক্লাস্টার সার্ভে ২০১৯ অনুসারে, ২০ থেকে ২৪ বছর বয়সী নারীদের ৫১ শতাংশের ১৮ বছরের আগে বিয়ে হয়। ১৫ বছর বয়স হওয়ার আগে বিয়ে হয় ১৫ শতাংশের।
জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এর তথ্য অনুসারে, করোনাকালে ২০২০ সালের মার্চ থেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত ফোন পেয়ে ৮ হাজার ২৫৪টি বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ করা হয়েছে।
মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের জরিপ অনুসারে, প্রায় ১৪ হাজার বাল্যবিবাহের মধ্যে ৫ হাজার ৮৯টি মেয়ে অপরিকল্পিত গর্ভধারণের শিকার হয়েছে।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাল্যবিবাহ না হলে মাতৃমৃত্যু, নবজাতক মৃত্যু ও শিশুমৃত্যু কমবে, স্বাস্থ্যঝুঁকি কমে কাজ করতে সক্ষমতা বাড়বে, হাসপাতালের খরচ কমবে। এসব বিবেচনায় একটি বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে আর্থিক ক্ষতি কমানো সম্ভব আনুমানিক ৩ লাখ ৭৪ হাজার টাকা।
উন্নয়ন সংস্থা, অধিকারকর্মী ও গবেষকদের মতে, মন্ত্রণালয়গুলোর মধ্যে সমন্বয়হীনতা, প্রস্তাবিত কার্যক্রমের সঙ্গে বাজেট বরাদ্দের ফারাক, সময় গড়িয়ে গেলেও প্রস্তাব বাস্তবায়নে উদ্যোগ না নেওয়া, সর্বোপরি তথ্য-উপাত্তের ঘাটতি স্পষ্ট করছে, বাল্যবিবাহ নির্মূলের বিষয়টি সরকারের অগ্রাধিকারের তালিকায় নেই।
বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন, ২০১৭ অনুসারে, ১৮ বছরের কম বয়সী মেয়ে এবং ২১ বছরের কম বয়সী ছেলেদের বিয়ের জন্য অপ্রাপ্তবয়স্ক ধরা হয়েছে।
সিলেটসানডটকম -এবিসি