কোথাও দোকানকোঠা, কোথাও তৈরী করা হয়েছে স্থায়ী দালান। জালালাবাদ গ্যাসের উচ্চচাপ বিশিষ্ট সঞ্চালন লাইনের উপর নির্মিত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে একাধিকবার নোটিশ দেওয়া হয়।
কিন্তু কোন কাজ হয়নি। এ অবস্থায় অভিযান শুরু করে কর্তৃপক্ষ। বুধবার থেকে শুরু হয় ৬ষ্ট দফা উচ্ছেদ অভিযান। ৬ষ্ঠ দফা উচ্ছেদ অভিযানে প্রায় ৮ কিলোমিটার এলাকায় লাইনের উপর নির্মিত স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। এ নিয়ে ৬ দফা অভিযানে মোট ৩৪ কিলোমিটার পাইপ লাইনের ভূমি উদ্ধার করা হয়।
অভিযানকালে অবৈধভাবে নির্মিত সীমানা প্রাচীর, দোতলা-তিনতলা বিশিষ্ট বাড়ি, টিনসেড ঘর, দোকান কোঠা উচ্ছেদ করা হয়।
বুধবার সিলেট-ফেঞ্চুগঞ্জ রোডের মোগলাবাজার এলাকা থেকে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন এ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম লিমিটেড।
পরবর্তীতে মোগলাবাজার রোডের খালেরমুখ এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়।
উচ্ছেদ অভিযানে নেতৃত্ব দেন দক্ষিণ সুরমা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাখন চন্দ্র সূত্রধর ও জালালাবাদ গ্যাসের টাস্ক ফোর্স এর সদস্য সচিব মো. আমিরুল ইসলাম।
এদিকে, ফেঞ্চুগঞ্জ-দেবপুর উচ্চচাপ বিশিষ্ট ৪০ কি: মি: গ্যাস পাইপ লাইনের পাশাপাশি আবাসিক এলাকায় জালালাবাদ গ্যাসের অধিগ্রহণকৃত কয়েক শত একর ভূমি রয়েছে।
জালালাবাদ গ্যাসের অধিগ্রহণকৃত ভূমির ৩৪ কিমি: পাইপ লাইনের উপর অবৈধভাবে সীমানা প্রাচীর, বাড়ি, দোকান কোঠা সহ বিভিন্ন স্থাপনা ছিল। এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের লক্ষ্যে গত বছর ৫ দফা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানের মাধ্যমে ২৬ কিমি: পাইপলাইনের ভূমি অবৈধ পাইপ লাইন দখলমুক্ত করা হয়।
সর্বশেষ বুধবার পরিচালিত অভিযানে আরো ৮ কিলোমিটার এলাকায় পাইপ লাইনের উপর নির্মিত বিভিন্ন স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়।
জালালাবাদ গ্যাসের অধিগ্রহণকৃত ভূমিতে স্থাপিত বসত বাড়ি উচ্ছেদ সম্পর্কিত টাস্কফোর্স কমিটির সদস্য সচিব ডিজিএম আমিরুল ইসলাম বলেন, গ্যাস নিরাপত্তা আইনে রয়েছে উচ্চচাপ বিশিষ্ট গ্যাস পাইপলাইনের উভয় পাশে ন্যূনতম ১০ ফুট করে মোট ২০ ফুটের মধ্যে কোন ধরনের স্থাপনা নির্মাণ করা বিধিবহির্ভূত।
কিন্তু দীর্ঘ দিন থেকে পাইপ লাইনের উপর অবৈধ স্থাপনা গড়ে তুলেছেন স্থানীয়রা। বার বার নোটিশ দিয়েও স্থাপনা সরিয়ে না নেওয়ায় অভিযান পরিচালিত হচ্ছে।
জালালাবাদ গ্যাস সূত্র জানায়, প্রথম দফায় শাহপরাণ থানার ইসলামপুরের মোহাম্মদপুর ও নুরপুর আবাসিক এলাকা থেকে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়। দ্বিতীয় দফায় বালুচর এলাকা থেকে, ৩য় দফা বটেশ^র এলাকায়, ৪র্থ ও ৫ম দফা আখালিয়া করেরপাড়াসহ মোট ৫ টি অভিযান চালানো হয়।
সর্বশেষ মোগলাবাজার এলাকায়। এসব অভিযানের আগে অনেকে নিজ উদ্যোগে ১৭৫ টি সীমানা প্রাচীর, দোতলা-তিনতলা বিশিষ্ট দালান, টিনসেড ঘর, দোকান কোঠাসহ বিভিন্ন স্থাপনা ভেঙ্গে ফেলেন।
যারা নির্দেশনা শুনেও অপসরাণ করেননি জালালাবাদ গ্যাস কর্তৃপক্ষ আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে তাদের স্থাপনা উচ্ছেদ করে । সর্বমোট ২৩৫ টি অবৈধ স্থাপনা অপসারণ করা হয়।
উদ্ধার অভিযানে অন্যান্যের মধ্যে অংশ নেন জালালাবাদ গ্যাসের অধিগ্রহণকৃত ভূমিতে বসতবাড়ী স্থাপিত উচ্ছেদ সংক্রান্ত টাস্কফোর্স কমিটির সদস্য মহাব্যবস্থাপক মন্জুর আহমদ চৌধুরী, মহাব্যবস্থাপক এবিএম শরীফ, মহাব্যবস্থাপক মো: শহিদুল ইসলাম, মহাব্যবস্থাপক খান মোহাম্মদ জাকির, ডিজিএম মো. আব্দুল মুকিত, ডিজিএম নাজমুল ইসলাম চৌধুরী, ব্যবস্থাপক মনোয়ার হোসেন, ব্যবস্থাপক নিতাই চন্দ্র পাল, ব্যবস্থাপক ফজলুল হক, ব্যবস্থাপক ওয়েছ আহমদ, উপ-ব্যবস্থাপক মোনায়েম সরকার,
উপ-ব্যবস্থাপক মো. সুহেদুর রহমান,সহকারী কারিগরী কর্মকর্তা, রেজাউর রহমান চৌধুরী,আইন কর্মকর্তা ছাদেকুন নুর চৌধুরী, সহকারী সমন্বয় কর্মকর্তা সুমন চক্রবর্তী, মো. আ: সহিদসহ পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সদস্যরা।
সার্বিক অভিযানটি জালালাবাদ গ্যাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো. শোয়েব আহমদ মতিন-এর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হচ্ছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
সিলেটসানডটকম-এডিসি