সমাজে নানা পারস্পরিক দ্বন্দ্ব, খোঁচাখুঁচি রয়েছে উল্লেখ করে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান গবেষকদের এসবের আর্থিক মূল্য নির্ধারণের আহ্বান জানিয়েছেন। আজ পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই) আয়োজিত এক ওয়েবিনারে তিনি এই আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘আপনারা এখানে অনেক পণ্ডিত মানুষ আছেন। অনেক জ্ঞানী মানুষ আছেন। আপনারা অনেক কিছু নিয়ে গবেষণা করেন। আমি আপনাদের আহ্বান জানাব, সামাজিক ও রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব, একে অন্যের সঙ্গে খোঁচাখুঁচির আর্থিক মূল্য কত তা খুঁজে বের করেন। নিশ্চয়ই তার আর্থিক ক্ষতি আছে। তা বের করে আমাদেরকে বলেন, এই যে আপনারা যে খোঁচাখুঁচি করেন তার আর্থিক ক্ষতি এত টাকা।’
করোনাপরবর্তী সময়ে অর্থনীতির পুনরুদ্ধার এবং ভবিষ্যৎ করণীয় শীর্ষক আয়োজিত এই ওয়েবিনারে অন্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন পিআরআইয়ের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর, বাংলাদেশ পোশাক রপ্তানিকারক ও মালিক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসান প্রমুখ।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, 'বাংলাদেশের উন্নয়ন আজ সর্বত্র স্বীকৃত। বিশেষ করে করোনাকালীন আমাদের অর্থনীতির উন্নয়ন সারা বিশ্বের চোখে পড়ার মতো। আইএমএফও তা-ই বলছে। আর আপনোদের উপস্থাপনায় আজ এ বিষয়গুলো উঠে এসেছে। দারিদ্র্য একসময় আমাদের অনেক ভুগিয়েছে কিন্তু আমরা এখন সে জায়গায় নেই। তবে আমাদের উন্নয়নকে অনেকেই ম্যাজিক বলে, প্যারাডকস বলে।
আমি মনে করি, এই শব্দগুলো অপমানকর। এই শব্দগুলো ব্যবহার করে আমাদের দেশের মানুষের শ্রমকে অপমান করা হয়।'
প্রবাস আয়, রপ্তানি ও কৃষির ওপর বাংলাদেশের অর্থনীতি দাঁড়িয়ে আছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, 'এই তিন খাতেই সরকারের অবদান রয়েছে। করোনাকালীন আমরা প্রবাসীদের আয়ের ওপর প্রণোদনা দিয়েছি। যার কারণে তারা বৈধ পথে দেশের টাকা পাঠিয়েছে এবং তারাই দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রেখেছে। আর কৃষিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর কৃষির জন্য কৃষকের জন্য ভর্তুকি দিয়ে যাচ্ছে। যার কারণে আমরা আমাদের কৃষিকে সচ্ছল রাখতে পেরেছি।'
তিনি আরো বলেন, 'করোনাকালীন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সবচেয়ে বড় কৌশল ছিল সর্বাত্মক লকডাউন না দেওয়া। এতে যেটা হয়েছে তা অর্থনীতির জন্য সুখকর। ফলশ্রুতিতে দেখতে পারছি এখন রপ্তানি আয় বাড়ছে, বিশেষ করে পোশাক খাতে। তবে সামনের দিনে ওমিক্রনের কিছু চ্যালেঞ্জ আসতে পারে আশা করি আমরা পূর্বের অভিঙ্গতা কাজে লাগিয়ে তা মোকাবেলা করতে পারব।'
এ সময় সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা বলেন, 'আমরা দেখছি অর্থনীতি পুনরুদ্ধার হচ্ছে। তবে এই পুনরুদ্ধার সবার জন্য এক না। কেউ কেউ তার আগের অবস্থানে এখনাে ফিরে যেতে পারেনি। বিশেষ করে যারা দিনমজুর, নিম্ন আয়ের মানুষ। শিক্ষায় আমাদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। বাল্যবিবাহ বেড়েছে। এসব দিকে আগে আমাদের নজর দিতে হবে। সামনে বাজেট আসছে, সেই বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর পাশাপাশি বিশেষ অঞ্চলকে গুরুত্ব দিতে হবে। সিলেট সান/এফবি