২০২৪-০৫-২৩ ০৯:৫৯:৪০ / Print
চা শিল্পের সংকট নিরসনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ চাইলেন বাগান মালিকরা। বৃহস্পতিবার সিলেট ও মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক বরাবর চা বাগান নিয়ে নানা সমস্যা সম্বলিত স্মারকলিপিতে এ হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়।
সিলেটে স্মারকলিপি গ্রহণ করেন জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান ও মৌলভীবাজারে ড. ঊর্মি বিনতে সালাম। স্মারক লিপিতে উল্লেখ করা হয়, চা শিল্পের সংকটময় সময়ে প্রধানমন্ত্রীর শরণাপন্ন হয়েছি। চা শিল্পের সঙ্গে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
২০২২ সালে শ্রমিক আন্দোলনে যে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল প্রধানমন্ত্রীর বলিষ্ঠ ও দূরদর্শী নেতৃত্বে চা শিল্প, সেই সংকট থেকে উদ্ধার পেয়েছিল। বর্তমানে চায়ের নিলাম মূল্য উৎপাদন খরচের চেয়ে কম হওয়ায় চা শিল্প অনেকটা সঙ্কটাপন্ন।
বর্তমানে নিলাম মূল্য উৎপাদন খরচের চেয়ে কম হওয়ায় অনেক বাগান শ্রমিকদের মজুরী দিতে পারছে না। অথচ কয়েক লক্ষ শ্রমিক এবং কর্মচারী চা শিল্পের উপর নির্ভরশীল। বর্তমানে প্রতি কেজি চায়ের উৎপাদন খরচ প্রায় ২৫০ টাকা। চা বোর্ড, বাংলাদেশীয় চা সংসদ, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ টি ট্রের্ডাস এসোসিয়েশনের সমন্বয়ে চায়ের নিলামমূল্য ৩শ টাকা নির্ধারণ করার দাবি জানানো হয়।
পঞ্চগড়ের চা জাতীয় উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। অথচ সেখানে উৎপাদনের কোন নিয়মনীতি না মেনে নিম্নমানের চা উৎপাদিত হচ্ছে। ফ্যাক্টরি থেকে কোন ট্যাক্স-ভ্যাট পরিশোধ না করে অবৈধভাবে চা বিক্রি হচ্ছে। এই নিম্নমানের চা বৃহত্তর সিলেট, চট্টগ্রাম অঞ্চলের মানসম্মত চায়ের নিলাম বাজারে যথাযথ মূল্য পাওয়া থেকে বাঁধার সৃষ্টি করছে।
ছোট বড় প্রায় সব বাগানই বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক থেকে হাইপোথেটিক লোন নিয়ে থাকে। চায়ের নিলাম মূল্য সরাসরি কৃষি ব্যাংকে জমা দিয়ে তা পরিশোধ করা হয়। অথচ এই ঋণ পরিশোধে সুদের হার ৯ শতাংশ থেকে ১৩ শতাংশ করা হয়েছে।
বিশেষ বিবেচনায় ঋণ পরিশোধের সুদের হার ৯ শতাংশ রেখে ঋণ পরিশোধে শিথিলনীতি, রুগ্ন ও উন্নয়নশীল চা বাগানকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে সহজ শর্তে ঋণ দেওয়া এবং চা বোর্ডের বাধ্যতামুলক ২ দশমিক ৫ শতাংশ সম্প্রসারণ আবাদ কার্যক্রম আপাতত স্থগিত রাখার দাবি জানান।
বিদ্যুৎ সরবরাহ নিরবিচ্ছিন্ন না হওয়ায় ফ্যাক্টরিতে সবুজ কাঁচা চা পাতা (যা পচনশীল) প্রক্রিয়াজাতকরণ ব্যাহত হচ্ছে। এতে চায়ের মান রক্ষা সম্ভব হচ্ছে না। তাই বর্তমান সংকটময় পরিস্থিতিতে চা শিল্পকে ভ্যাট ও ট্যাক্স থেকে সাময়িক অব্যাহতি দিতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়। পাশাপাশি চা শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে আমদানির উপর শুল্ক বৃদ্ধির আহবান জানানো হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, খাদিম চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফজাল রশিদ চৌধুরী, দি সিলেট টি কো. লি. এর মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ আজম আলী, এম আহমেদ টি এন্ড ল্যান্ডস কো. লিমিটেড’র পরিচালক তেহসিন চৌধুরী, ফুলবাড়ী টি এস্টেট লিমিটেড’র মহাব্যবস্থাপক আব্দুস সবুর খান,
ম্যাকসন ব্রাদার্স (বাংলাদেশ) লিমিটেড’র পরিচালক এম এ জামান সোহেল, মাথিউরা টি কো. লিমিটেড’র পরিচালক রুকন উদ্দিন খান, কালিকাবাড়ি চা বাগানের পরিচালক মুফতি মোহাম্মদ হাসান,
জোবেদা টি কো. লিমিটেড’র পরিচালক এম এ মালিক হুমায়ুন, পুর্ব পাহাড় টি কো. লিমিটেড’র মালিক প্রফেসর শফিকুল বারি, লোভাছড়া চা বাগানের পরিচালক ইউসুফ জোসেফ ফারগুসন, আল্লাদাদ চা বাগানের পরিচালক ইফজাল চৌধুরী, মেঘালয় চা বাগানের পরিচালক এম এ ওয়াকিল খান, তারাপুর চা বাগানের ব্যবস্থাপক রিংকু চক্রবর্তী।