মুসলিম সাহিত্য সংসদ জ্ঞান চর্চার বাতিঘর

স্টাফ রিপোর্ট:: || ২০২১-০৪-২৩ ০৪:৫৪:২২

image

বহুতল ভবনের পঞ্চম তলার পুরোটাজুড়ে সারি সারি বইয়ের তাক। এখানে রয়েছে হাজার হাজার বই। মোগল সম্রাট আওরঙ্গজেবের হাতে লেখা কোরআন শরিফ, স্বামী বিবেকানন্দের পত্রাবলি থেকে শুরু করে নাগরী লিপিতে লেখা দুর্লভ অনেক বই ঠাঁই পেয়েছে তাকগুলোতে। তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগেও মুসলিম সাহিত্য সংসদ জ্ঞান চর্চার বাতিঘর।

 

সিলেট নগরীর প্রাণকেন্দ্র দরগাহ গেটে অবস্থিত উপমহাদেশের অন্যতম প্রাচীন সাহিত্য সংগঠন হিসেবেও পরিচিত কেমুসাস। প্রায় প্রতিদিন শতাধিক পাঠকের আগমন ঘটে পাঠাগারে। দুর্লভ বই, ম্যাগাজিন শিলালিপির সবচেয়ে বড় বেসরকারি সংগ্রহশালাও এটি, যার অনেক কিছুই ত্রয়োদশ শতাব্দীর। সিলেটে রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিও উঠেছিল এই সাহিত্য সংসদ থেকে।

১৯৩৬ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর সাবেক মন্ত্রী সৈয়দ আবদুল মজিদ (কাপ্তান মিয়া), প্রখ্যাত সাহিত্য গবেষক মুহাম্মদ নুরুল হক, হজরত শাহজালাল (রহ.) মাজারের তৎকালীন মোতাওয়াল্লি আবু ছাদ মো. আবদুল হাফিজের (ভূমিদাতা) প্রচেষ্টায় গড়ে ওঠে কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদ ও শহীদ সোলেমান হল।

তৎকালীন মুসলিম সমাজে সাহিত্য চর্চার ব্যাপক প্রচলন, বৃহত্তর সিলেটের বাংলা ভাষাভাষী অজ্ঞাতনামা কবি ও সাহিত্যিকদের রচিত পুঁথি সংগ্রহ এবং মুসলিম সাহিত্যসেবীদের সাহিত্য চর্চার সুযোগ করে দিতেই এ সংগঠনের জন্ম হয়। আর সংসদের ভেতরেই গড়ে তোলা হয় পাঠাগার। এখানে রয়েছে ভাষাসৈনিক মতিন উদ্‌দীন আহমদ জাদুঘর। সকাল ১১টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত খোলা থাকে পাঠাগার।

সৈয়দ মুজতবা আলী, দেওয়ান মোহাম্মদ আজরফ, দিলওয়ার খান, চৌধুরী গোলাম আকবর (লোকসাহিত্য গবেষক), দেওয়ান ফরিদ গাজীসহ অনেকেই এ প্রতিষ্ঠানের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে সভাপতি হিসেবে রয়েছেন সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আছেন আবদুল হামিদ মানিক।

ভবনের পঞ্চম তলার বিশাল অংশজুড়ে পাঠাগার। তৃতীয় তলায় বড় পাঠাগার। সেখানে রয়েছে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন ধরনের বই। দ্বিতীয় তলায় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কক্ষ। সেখানে রক্ষিত আছে অধিকাংশ দুর্লভ বই। ৫৫ হাজার বইয়ের মধ্যে প্রায় চার হাজারের মতো দুর্লভ বই আছে সেখানে।

পরিবর্তন সমাজকল্যাণ সংস্থার সভাপতি কবি লুৎফা আহমদ লিলি জানান, জীবনের বেশ কয়েকটি বসন্ত তার এখানেই কেটেছে। বইয়ের সঙ্গে জড়িয়ে আছে তার জীবন। যে বই কোথাও খুঁজে পাওয়া যায় না, সে বই মেলে এই মুসলিম পাঠাগারে। এ কারণেই বই পড়তে মন চাইলে ছুটে যান সেখানে। করোনার কারণে এখন নিয়মিত আসতে পারেন না বলেও জানান তিনি।


কেমুসাসের সাধারণ সম্পাদক আবদুল হামিদ মানিক বলেন, সিলেটের গর্ব এই প্রতিষ্ঠান। এখান থেকেই মূলত সিলেটের গ্রন্থাগার আন্দোলন শুরু হয়। সহসভাপতি সেলিম আউয়াল বলেন, সিলেটে রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবি কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদ থেকেই উঠেছিল। ১৯৪৭ সালের ৯ নভেম্বর পাকিস্তানের ভাষা কী হবে, সে বিষয়ে বৈঠক হয় সাহিত্য সংসদে। ওই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন তৎকালীন অ্যাডিশনাল ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট মতিন উদ্‌দীন আহমদ। রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবি জানিয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন তৎকালীন শিক্ষা কর্মকর্তা মুসলিম চৌধুরী।

 

সিলেট সান/এসএ

Editor Incharge: Faisal Ahmed Bablu

Office : 9-C, 8th Floor, Bluewater Shopping City, Zindabazar, Sylhet-3100

Phone: 01711487556, 01611487556

E-Mail: sylhetsuninfo@gmail.com, newssylhetsun@gmail.com

Publisher: Md. Najmul Hassan Hamid

UK office : 736-740 Romford Road Manor park London  E12 6BT

Email : uksylhetsun@gmail.com

Website : www.sylhetsun.net