সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশিদের টাকার পাহাড় জমেছে। সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোতে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশিদের আমানত দাঁড়িয়েছে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকা। বাংলাদেশিদের গচ্ছিত অর্থের পরিমাণ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। কালো টাকার বিরুদ্ধে জোরালো অবস্থান নেয়ায় ভারত-পাকিস্তানসহ প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে সুইস ব্যাংকে আমানত অনেক কমলে বাংলাদেশের টাকা সে হারে কমেনি।
বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক (এসএনবি) বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সে প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দেশ থেকে অর্থপাচার রোধে নানা উদ্যোগ নেয়া হলেও পাচার কমছে না। নানাভাবে দেশ থেকে অর্থপাচার হয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ পাচারের অর্থে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গড়ে তুলছেন দৃষ্টিনন্দন বাড়ি, রিসোর্ট। আবার কেউ কেউ জমা রাখছেন সুইস ব্যাংকে।
কিন্তু পাঁচ বছরের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ভারতের নাগরিকদের গচ্ছিত সম্পদের পরিমাণ অর্ধেকে নেমেছে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। আর পাকিস্তানের নাগরিকদের গচ্ছিত অর্থের পরিমাণও পাঁচ বছরের ব্যবধানে কমেছে এক-তৃতীয়াংশ। কিন্তু বাংলাদেশের নাগরিকদের কমেছে মাত্র ১৩০ কোটি টাকা।
প্রতিবেদনের তথ্যমতে, ২০১৮ সালের ডিসেম্বরেও বাংলাদেশিদের আমানত ছিল পাঁচ হাজার ৫৫৩ কোটি টাকা। আর ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে এই আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে পাঁচ হাজার ৪২৭ কোটি টাকা। সে হিসাবে সুইস ব্যাংকগুলো থেকে এক বছরের ব্যবধানে মাত্র ১৩০ কোটি টাকা তুলে নিয়েছেন বাংলাদেশিরা।
একইভাবে ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কাসহ দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলোও কালো টাকার বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছে, যা ভারত-পাকিস্তানে কার্যকর হলেও বাংলাদেশে এই নীতি মোটেই কার্যকর প্রমাণিত হয়নি। অথচ বাংলাদেশ সরকার গত পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দিয়ে আসছে। আগামী ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে বিনা প্রশ্নে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ প্রদানের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। এমনকি শেয়ারবাজার, জমি, ফ্ল্যাটসহ আবাসন খাতে অবাধে বিনিয়োগের সুযোগ দেয়া হয়েছে কালো টাকা। এরপরও দেশ থেকে অর্থপাচার কাঙিক্ষত হারে কমছে না।
সুইস ন্যাশনাল ব্যাংকের প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে সুইজারল্যান্ডে বাংলাদেশিদের আমানত দাঁড়িয়েছে ৬০ কোটি ৩০ লাখ সুইস ফ্রাঁ; বাংলাদেশি মুদ্রায় পাঁচ হাজার ৪২৭ কোটি টাকা। ঠিক এক বছর আগে, এ অঙ্ক ছিল ৬১ কোটি ৭৭ লাখ সুইস ফ্রাঁ বা পাঁচ হাজার ৫৫৩ কোটি টাকা। আগের বছরের তুলনায় বাংলাদেশিদের আমানত মাত্র ১৩০ কোটি টাকা কমলেও দক্ষিণ এশিয়ার অন্য সব দেশের আমানত কমেছে অনেক। পাঁচ বছরে ভারতীয়দের জমা কমেছে অর্ধেক। মাত্র দুই বছরে পাকিস্তানিদের আমানত কমেছে এক-তৃতীয়াংশ।
সুইস ব্যাংকের প্রতিবেদনের তথ্যমতে, বাংলাদেশিদের আমানত বাংলাদেশি মুদ্রায় ২০১৪ সালে ছিল চার হাজার ৫৮ কোটি টাকা, ২০১৫ সালে চার হাজার ৪১৭ কোটি টাকা, ২০১৬ সালে পাঁচ হাজার ৫৬৬ কোটি টাকা, ২০১৭ সালে চার হাজার ৬৯ কোটি টাকা, ২০১৮ সালে পাঁচ হাজার ৫৫৩ কোটি টাকা এবং ২০১৯ সালের ডিসেম্বর শেষে সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের গচ্ছিত অর্থের পরিমাণ কিছুটা কমে দাঁড়িয়েছে পাঁচ হাজার ৪২৭ কোটি টাকা।
আর দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে গচ্ছিত অর্থের পরিমাণ ভারতের সবচেয়ে বেশি- ৮৯ কোটি ২০ লাখ সুইস ফ্রাঁ এবং বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়- ৬০ কোটি ৩০ লাখ সুইস ফ্রাঁ।
বাবু/প্রিন্স
Editor Incharge: Faisal Ahmed Bablu
Office : 9-C, 8th Floor, Bluewater Shopping City, Zindabazar, Sylhet-3100
Phone: 01711487556, 01611487556
E-Mail: sylhetsuninfo@gmail.com, newssylhetsun@gmail.com
Publisher: Md. Najmul Hassan Hamid
UK office : 736-740 Romford Road Manor park London E12 6BT
Email : uksylhetsun@gmail.com
Website : www.sylhetsun.net