স্ত্রী হত্যায় স্বামীর মৃত্যুদন্ড,দুই ধর্ষণ মামলায় দুজনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড

ষ্টাফ রিপোটার, সুনামগঞ্জ || ২০২৩-০৩-৩০ ০৯:৫৫:৩৪

image
সুনামগঞ্জে স্ত্রীকে হত্যায় স্বামীর মৃত্যুদন্ড ও অপর দুটি ধর্ষণ মামলায় দুজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।

বৃহস্পতিবার দুপুরে সুনামগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক জাকির হোসেন এ রায় দেন।

দন্ডপ্রাপ্তরা হলেন,স্ত্রী হত্যার অভিযোগে স্বামী মো রাসেল মিয়াকে মৃত্যুদন্ড দিয়েছে আদালত। তিনি জামালগঞ্জ উপজেলার লক্ষীপুর গ্রামের সফিক মিয়ার ছেলে।

ধর্ষণ মামলায় বিশ্বম্ভপুর উপজেলার খলিল আহমেদকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও অপর একটি,ধর্ষণের দায়ে আব্দুর রহমানকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত।

রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর নান্টু রায়।

আদালত সুত্রে জানা যায়,সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার লক্ষীপুর গ্রামের রেছনা বেগম এর মেয়ে মহনমালা বেগমের সাথে ২০১৫ সালে বিয়ে হয় মো রাসেল মিয়ার সাথে।

বিবাহের পরে আসামী মোঃ রাসেল মিয়া মহনমালা’কে আসামীর বাড়িতে নিয়ে ঘর সংসার করতে থাকে। ঘর-সংসার করাকালে প্রায়ই আসামী মোঃ রাসেল মিয়া স্ত্রীর নিকট যৌতুক দাবী করে তাকে নির্যাতন শুরু করে।

এ নিয়ে স্ত্রী আদালতে একটি মামলাও দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর আসামী মোঃ রাসেল মিয়া আর যৌতুক দাবী করবে না ও নির্যাতন করবে না মর্মে অঙ্গীকার করে আসামীর বাড়িতে নিয়ে যায়।

কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই স্বামী যৌতুক দাবী করে আবারো নির্যাতন শুরু করে। গত ২৮.০৬.২০১৮ইং তারিখ ভিকটিম মহনমালাকে স্বামী ঘর থেকে মৃত উদ্ধার করা হয়।

ভিকটিমের গলায় ও ঠোঁটে জখমের চিহ্ন ছিল এবং নাক দিয়ে রক্ত ও মুখ দিয়ে ফেনা বের হতে থাকে। পরে তার আত্মীয় স্বজন খবর পেয়ে মহনমালার লাশ দেখতে আসামীর বাড়িতে গেলে আসামীগণ পালিয়ে যান।

পরে মহনমালার মা বাদী হয়ে জামালগঞ্জ থানায় আসামীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলার দীর্ঘ বিচারকার্য শেষে স্বামী রাসেল মিয়ার বিরুদ্ধে স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় আদালত স্বামী মো রাসেল মিয়াকে মৃত্যুদন্ড দেন।

এদিকে,জেলার বিশ্বম্ভপুর উপজেলায় এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে পৃথক আরেকটি মামলায় খলিল আহমেদকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন,

২০০০ এর ৯(১) ধারায় যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দেওয়া হয় এবং অতিরিক্ত এক লক্ষ টাকা জরিমানারও আদেশ দেওয়া হয়। জরিমানার টাকা ভিকটিম ক্ষতিপূরণ হিসাবে প্রাপ্ত হবে।

আদালত সূত্রে জানাযায়,জেলার বিশ্বম্ভরপুর থানাধীন চেংবিল গ্রামস্থ নালিশকারী সখিনা খাতুন, স্বামী-মৃত মানিক মিয়া অরফে গেদা মিয়া

গত ২৪.০৯.২০১৬ইং তারিখ আসামী খলিল আহমদ নিকট থেকে পাওনা ১২,০০০/- টাকা নিয়ে তার বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন।

নালিশকারীকে এগিয়ে দেওয়ার কথা বলে আসামী খলিল আহমদ নালিশকারীর সাথে আসতে থাকে। অনুমান রাত ০৮.৩০ ঘটিকার সময় চেংবিল ও ডলুরা গ্রামের মধবর্তী ইক্ষু ক্ষেত নামকস্থানে আসার সাথে সাথে আসামী নালিশকারীকে মাটিতে ফেলে

জোরপূর্বক তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণ করতে থাকে। নালিশকারীর চিৎকার শুনে আশে পাশে থাকা সাক্ষীগণ দৌড়ে এসে আসামীকে হাতে নাতে আটক করত স্থানীয় পঞ্চায়েতের নিকট সোপর্দ করেন।

পঞ্চায়েতে মীমাংসা না হওয়ায় নালিশকারী আদালতে এসে এই মামলা করেন। ইতোমধ্যে নালিশকারী গর্ভবতী হয়ে একটি ছেলে সন্তান জন্ম নেয় যার নাম রাখা হয় ফাহিম।

আসামী, ভিকটিম ও ধর্ষণের ফলে জন্ম নেওয়ার শিশুর ডিএনএ পরীক্ষা করা হয়। ডিএনএ পরীক্ষায়ও প্রমাণিত হয় ধর্ষণের ফলে জন্ম নেওয়ার শিশুর পিতা আসামী খলিল আহমদ।

মামলার পরে দীর্ঘ তদন্ত শেষে পুলিশ তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করে। তৎপরবর্তীতে রাষ্ট্রপক্ষ ০৪ জন সাক্ষীকে আদালতে উপস্থাপন করে। সাক্ষ্য প্রমাণাদি পর্যালোচনা করে আদালত অদ্য আসামী খলিল আহমদকে সাজা প্রদান করেন। রায় ঘোষণার সময় আসামী উপস্থিত ছিল।

অপর একটি,ধর্ষণের দায়ে আসামী আব্দুর রহমানকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ এর ৯(১) ধারায় যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দেওয়া

হয় এবং অতিরিক্ত এক লক্ষ টাকা জরিমানারও আদেশ দেওয়া হয়। জরিমানার টাকা ভিকটিম ক্ষতিপূরণ হিসাবে প্রাপ্ত হবে।

আদালত সূত্রে জানাযায়,সদর থানাধীন কৃষ্ণনগর গ্রামের মো আলীনুর মিয়ার মেয়ে রুমা খাতুন গত ১২.০১.২০১৩ইং তারিখ সৈয়দপুর গ্রাম ও কৃষ্ণনগর গ্রামের মধ্যবর্তী মাঠে অনুষ্ঠিত মেলায়

ঘোড়া দৌড় দেখে বাড়িতে ফিরছিল। অনুমান বিকাল ০৫.৩০ ঘটিকার সময় একই গ্রামের জনৈক ফিরোজ মিয়ার বাড়ির সামনের সরকারী খালের পাড়ে আসামাত্র

আসামী আব্দুর রহমান তার মেয়েকে ডেকে নিয়ে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। কান্নাকাটি করে মেয়ে বাড়িতে ফিরলে মেয়েকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখে তিনি জিজ্ঞাসা করলে মেয়ে তাকে বলে আসামী আব্দুর রহমান তাকে ঘটনাস্থলে নিয়ে ধর্ষণ করেছে।

পরে এজাহারকারী থানায় গিয়ে এই মামলা করেন। মামলার পরে আসামী ১৬৪ ধারায় দোষ স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করে। মামলার পরে দীর্ঘ তদন্ত শেষে পুলিশ তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করে।

তৎপরবর্তীতে রাষ্ট্রপক্ষ মোট ০৮ জন সাক্ষীকে আদালতে উপস্থাপন করে। সাক্ষ্য প্রমাণাদি পর্যালোচনা করে আদালত অদ্য আসামী আব্দুর রহমান অরফে আব্দুলকে সাজা প্রদান করেন। রায় ঘোষণার সময় আসামী উপস্থিত ছিল।

Editor Incharge: Faisal Ahmed Bablu

Office : 9-C, 8th Floor, Bluewater Shopping City, Zindabazar, Sylhet-3100

Phone: 01711487556, 01611487556

E-Mail: sylhetsuninfo@gmail.com, newssylhetsun@gmail.com

Publisher: Md. Najmul Hassan Hamid

UK office : 736-740 Romford Road Manor park London  E12 6BT

Email : uksylhetsun@gmail.com

Website : www.sylhetsun.net