বৃষ্টির দেখা নেই, চা শিল্পে বিপর্যয়ের শঙ্কা

সিলেট সান ডেস্ক :: || ২০২৩-০৩-১২ ০৬:২৬:১৪

image

: অনাবৃষ্টির কারণে বোরো ধানের ফলন নিয়ে এমনিতেই শঙ্কিত কৃষক। এবার অনাবৃষ্টির প্রভাব চা বাগানে। বৃষ্টির অভাবে চা-উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়। এতে কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে চা বাগান মালিকদের।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে সিলেট অঞ্চলে চা এর মৌসুম চলছে। অথচ মৌসুমের শুরুতে চা বাগানগুলোতে চলছে পানির সংকট। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য মতে, গত মাসে সিলেটে ২৫-৩০ মিলিমিটার বৃষ্টি হলেও মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ, কুলাউড়া ও শ্রীমঙ্গল এলাকার বাগানগুলোর অবস্থা খুবই খারাপ। প্রয়োজনীয় বৃষ্টি না হওয়ায় উদ্বেগের মধ্য দিন কাটাচ্ছে বাগান কর্তৃপক্ষ।

এদিকে পর্যাপ্ত বৃষ্টির অভাবে রেড স্পাইডারসহ নানা ধরনের পোকামাকড়ের আক্রমণও শুরু হয়েছে। এতে চায়ের উৎপাদন কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারী মাসে পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

চা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, গত বছর দেশে ৯৩.৮২৯ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদন হয়েছে। গত মৌসুমে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১০০ মিলিয়ন কেজি। চলতি মৌসুমে ১০২ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত আগস্টে মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে কর্মবিরতি করেন চা শ্রমিকরা। এ কারণে গত আগস্ট মাসে উৎপাদন কম হওয়ায় মূলত ২০২২ মৌসুমে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি, এমন ধারণা তাদের।

তবে এখন যেহেতু শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি পেয়েছে, এ কারণে চা উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার প্রত্যাশা করা হচ্ছে। চা বোর্ডের হিসাব অনুযায়ী জানা গেছে, দেশে নিবন্ধন করা ১৬৭টি টি-অ্যাস্টেট ও চা বাগান রয়েছে। এতে ২ লাখ ৭৯ হাজার ৫০৬.৮৮ একরে চা উৎপাদন হয়ে আসছে।

এর মধ্যে মৌলভীবাজারে ৭৬টি অ্যাস্টেট ও ১৫টি চা বাগান, হবিগঞ্জে ২২টি টি-অ্যাস্টেট ও ৩টি চা বাগান, সিলেটে ১২টি টি-অ্যাস্টেট ও ৭টি চা বাগান, চট্টগ্রামে ১৮টি টি-অ্যাস্টেট ও ৩টি চা বাগান, রাঙামাটিতে একটি টি-অ্যাস্টেট ও একটি চা বাগান, পঞ্চগড়ে ৮টি চা বাগান এবং ঠাকুরগাঁওয়ে রয়েছে একটি চা বাগান। বাগান-সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, পর্যাপ্ত বৃষ্টির অভাবে মারাত্মক খরার মধ্যে চা-বাগানগুলো। অথচ বাগানগুলো এখন সবুজে ঢেকে থাকার কথা। কিন্তু ধুলায় ধূসরিত শতাধিক চা বাগানে। নতুন পাতা ছাড়ছে না চা-গাছগুলো। নগরীর তারাপুর চা বাগান-এর ব্যবস্থাপক রিংকু চক্রবর্তী বলেন, চা উৎপাদন নিয়ে আমরা খুবই চিন্তায় আছি। একই তো টানা অনাবৃষ্টি। এর উপর বিভিন্ন ধরনের পোকার আক্রমণ।

সব মিলিয়ে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে আমরা শঙ্কায় আছি। এদিকে সিলেটের অপর একটি চা বাগানের জেনারেল ম্যানেজার জানান, চা বাগানগুলোর খুব বাজে অবস্থা যাচ্ছে। বৃষ্টির দেখা নেই। এরই মধ্যে আমাদের প্রোনিং (চা-গাছ ছেঁটে দেওয়া) শেষ হয়েছে। খাল, লেবার শেড সংস্কার হয়েছে।

বৃষ্টি হলে চা-গাছ কুড়ি ছাড়বে। আর মার্চের প্রথম সপ্তাহে ‘চা চয়ন’ (পাতি তোলা) শুরু হলেও পুরো দমে কাজ হচ্ছে না। সিলেট, শ্রীমঙ্গল, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজারের চা-বাগানের ব্যবস্থাপক, শ্রমিক ও মালিক এখন বৃষ্টির অপেক্ষায় আছেন।

বাংলাদেশ চা বোর্ডের (বিটিবি) চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. আশরাফুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, ২০২৩ সালে দেশে চা উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত হয়েছে ১০০ মিলিয়ন কেজির বেশি। ২০২২ সালেও লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১০০ মিলিয়ন কেজি। বন্যা ও চা-শ্রমিকদের আন্দোলনসহ নানা কারণে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। তাই এ বছর অনেক আশা নিয়ে বাগান-সংশ্লিষ্টরা উৎপাদনে নামেন। কিন্তু খরার কারণে সমস্যা দেখা দিয়েছে।

অন্যদিকে ২০২৫ সালের মধ্যে দেশে ১৪০ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদনের পরিকল্পনা করেছে সরকার। এর মধ্যে ১৩০ মিলিয়ন কেজি চা দিয়ে দেশের চাহিদা পূরণ করা হবে এবং বাকি ১০ মিলিয়ন কেজি চা বিদেশে রপ্তানি করা হবে।

Editor Incharge: Faisal Ahmed Bablu

Office : 9-C, 8th Floor, Bluewater Shopping City, Zindabazar, Sylhet-3100

Phone: 01711487556, 01611487556

E-Mail: sylhetsuninfo@gmail.com, newssylhetsun@gmail.com

Publisher: Md. Najmul Hassan Hamid

UK office : 736-740 Romford Road Manor park London  E12 6BT

Email : uksylhetsun@gmail.com

Website : www.sylhetsun.net