তাহিরপুরে এসিড মামলা থেকে বেকসুর খালাস পেলেন সাংবাদিক মোজাম্মেল

ষ্টাফ রিপোটার, সুনামগঞ্জ || ২০২৩-০৩-১১ ১০:০১:১৩

image
সাজানো মিথ্যা এসিড মামলা থেকে বেকসুর খালাস পেলেন সাংবাদিক মোজাম্মেল আলম ভূঁইয়া। তিনি মাইটিভি ও দৈনিক মানবকণ্ঠের সাবেক সুনামগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

বিজ্ঞ বিচারক দীর্ঘ ৯ বছর এই মামলাটি বিশ্লেষন করে মামলার একমাত্র আসামী সাংবাদিক মোজাম্মেল আলম ভূঁইয়াকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন।

বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) দুপুরে সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মহিউদ্দিন মুরাদ বিচারাধীন এসিড ১/২০১৪ নং মামলার রায়ে তাকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন।

গত ৫/৪/১৪ইং তারিখে তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের কামড়াবন্ধ গ্রাম মৃত বধ্য মিয়ার ছেলে হাবিব সারোয়ার আজাদ তার নিজ ছেলেকে ভিক্টিম করে মামলাটি দায়ের করে।

আদালত ও মামলা সূত্রে জানা যায়,সীমান্ত চোরাচালান, চাঁদাবাজি ও জুয়ার বোর্ড নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জেরে ২০১২ সালের ৫ জানুয়ারী মাইটিভি ও দৈনিক মানবকণ্ঠের সাবেক সুনামগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি মোজাম্মেল আলম ভূঁইয়ার ওপর হামলার ঘটনা ঘটে।

তারা মোজাম্মেলের সাথে থাকা নগদ টাকা ও ক্যামেরা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এঘটনার প্রেক্ষিতে থানায় এজাহার দিলে পুলিশ মামলা নেয়নি। পরে নির্যাতিত সাংবাদিক মোজাম্মেল ন্যায় বিচারের আশায় হাবিব সারোয়ার আজাদ ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে আদালতে একটি সিআর মামলা করেন।

সেই মামলা থেকে রেহাই পেতে তাহিরপুর থানায় আজাদ তার নিজের ছেলে শিহাব সারোয়ার শিপুকে ২০১৪ সালের ২৯ মার্চ রাত অনুমান সাড়ে ৭-৮টার সময় আগুন দিয়ে পুড়িয়ে আহত করে।

তাহিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আনিসুর রহমান হাসপাতালে গিয়ে আহত শিপু ও কর্তব্যরত ডাক্তারদের সাথে কথা বলার এবং কর্মস্থলে উপস্থিত থাকার পরও মামলা এফআইআর করা থেকে বিরত থাকেন।

পরে সাজানো এ ঘটনার মিথ্যা অভিযোগ প্রস্তুত করে এসআই জামাল ও আজাদ একে অপরের সহায়তায় নিরপরাধ সাংবাদিক মোজাম্মেল আলম ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে থানায় এসিড অপরাধ দমন আইন ২০০২ এর ৫ (ক) ধারায় মামলা করেন।

ক্ষমতার অপব্যবহার করে এসআই মোঃ জামাল উদ্দিন নিজেই মামলাটি তদন্ত করেন। কথিত তদন্তের নামে বিজ্ঞ আদালতে উদ্দেশ্যমূলকভাবে মিথ্যা অভিযোগপত্র নং ৫৬ তাং ৩০/৫/১৪ দাখিল করেন তিনি।

এসআই জামাল উদ্দিনের কথিত অভিযোগপত্রের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ এর কাছে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন সুনামগঞ্জ জেলা শাখার উদ্যোগে গঠিত তদন্ত কমিটির সঙ্গে জড়িত ৯

জন সদস্য জেলা ব্র্যাকের মানবাধিকার ও আইন সহায়তা কর্মসুচির কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা,তাহিরপুর উপজেলার সাংবাদিকরা সরেজমিনে তদন্ত করে নূন্যতম সম্পৃক্ততা মিলেনি।

অন্যদিকে কথিত ঘটনার পরপরই অগ্নিদগ্ধ শিপুকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এরপর হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটের মেডিকেল অফিসার আফসার উদ্দিন দগ্ধ শিপুর চিকিৎসা করেন। সেই সাথে আদালতে এসে ওই চিকিৎসক সাক্ষী দেন এই ঘটনাটি এসিডের ঘটনা নয়।

আহত শিপু আগুন জাতীয় পদার্থ দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে। তার মুখে এসিডের কোন জখম নেই।

এছাড়াও এই মামলায় ২২জন আদালতে এসে স্বাক্ষি দিয়েছেন। ২২ জন সাক্ষীর মধ্যে ১০ জন সাক্ষীর কেউই সাংবাদিক মোজাম্মেলকে কথিত ঘটনায় জড়িত মর্মে সাক্ষ্য দেননি।

সাংবাদিক মোজাম্মেলের পক্ষে আদালতে মামলাটি পরিচালনা করেন এডভোকেট মিজানুর রহমান মিজান।

বিভিন্ন সময় তাকে সহযোগীতা করেন সিনিয়র আইনজীবি হুমায়ুন মঞ্জুর চৌধুরী, এডভোকেট পীর মতিউর রহমান, এডভোকেট প্রদীপ কুমার নাগ হারু ও নজরুল ইসলাম শেফুসহ আরো একাধিক আইনজীবি।

এ ব্যাপারে এডভোকেট মিজানুর রহমান মিজান বলেন, এই মামলাটি ছিল সম্পূর্ণ সাজানো মিথ্যা মামলা।

মামলা-মোকদ্দমা ও পূর্ব বিরোধের জের ধরে হাবিব সারোয়ার আজাদ তার নিজের ছেলেকে আগুনে পুড়িয়ে নিরপরাধ সাংবাদিক মোজাম্মেলকে পরিকল্পিত ভাবে ফাঁসিয়েছিল।

সাক্ষী-প্রমাণ দ্বারা আমরা বিজ্ঞ আদালতে প্রমাণ করতে পেরেছি এটি একটি সাজানো মিথ্যা মামলা।

এই রায়ের মাধ্যমে সত্য ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্টিত হয়েছে। এজন্য আমরা আদালতের বিজ্ঞ বিচারকের প্রতি সন্তুষ্ট।

Editor Incharge: Faisal Ahmed Bablu

Office : 9-C, 8th Floor, Bluewater Shopping City, Zindabazar, Sylhet-3100

Phone: 01711487556, 01611487556

E-Mail: sylhetsuninfo@gmail.com, newssylhetsun@gmail.com

Publisher: Md. Najmul Hassan Hamid

UK office : 736-740 Romford Road Manor park London  E12 6BT

Email : uksylhetsun@gmail.com

Website : www.sylhetsun.net