বকেয়া গ্যাস বিল আদায়ে কঠোর হচ্ছে সরকার
সিলেট সান ডেস্ক :: ||
২০২৩-০৩-১০ ০৯:১১:৫৭
বকেয়া গ্যাস বিল আদায়ে কঠোর হচ্ছে সরকার। বড় গ্রাহকের ক্ষেত্রে যাদের বিল দীর্ঘদিন ধরে বকেয়া রয়েছে তাদের গ্যাস সরবরাহ লাইন কেটে দেওয়া হবে। এসব গ্রাহকের মধ্যে রয়েছে সরকারি সংস্থা,
স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা এবং বেসরকারি বড় বড় কোম্পানি। গত সপ্তাহে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ সচিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত
নেওয়া হয়েছে। চলতি মাসের যে কোনো দিন থেকে এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে বিতরণ কোম্পানিগুলো মাঠে নামবে। জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা এসব তথ্য জানান।
জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের সচিব ড. মো. খায়রুজ্জামান মজুমদার এ প্রসঙ্গে বলেন, বছরের পর বছর ধরে গ্যাসের বিল বকেয়া থাকবে, এটি হতে পারে না।
বকেয়া বিল আদায়ে বিতরণ কোম্পানিগুলোকে কঠোর হওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
জ্বালানি বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, আর্থিক সংকটের কারণে নানা ধরনের বিল পরিশোধ করতে পারছে না বিতরণ ও অনুসন্ধান কোম্পানিগুলো।
অন্যদিকে নিয়মিত গ্যাস ব্যবহার করলেও দীর্ঘদিন বিল বকেয়া রয়েছে এমন সরকারি-বেসরকারি সংস্থা বা কোম্পানি রয়েছে অনেক। বিভিন্ন সময় এসব কোম্পানিকে বকেয়া গ্যাস বিল পরিশোধের জন্য বলা হলেও কার্যত পরিস্থিতির তেমন কোনো উন্নতি হয়নি।
এ অবস্থায় সরকারি-বেসরকারি যেসব সংস্থা বা কোম্পানির কাছে বকেয়া বিল রয়েছে, তারা নির্দিষ্ট সময়ের ভেতর বিল না দিলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে। এ জন্য বিতরণ কোম্পানিগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন কোম্পানির কাছে এ মুহূর্তে বকেয়া রয়েছে ৭ হাজার ৩১২ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। বকেয়া পাওনা বেশি তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির।
কোম্পানিটি এখনো ৩ হাজার ৩৯৬ কোটি ৯০ লাখ টাকার গ্যাস বিল বকেয়া রয়েছে। এর বেশিরভাগই বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের (পিডিবি) কাছে। এই টাকা আদায়ে পিডিবির বিরুদ্ধে নোটিশ জারি করে তা আদায়ের জ্বালানি বিভাগের অনুমতি চেয়েছে তিতাস।
তিতাসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, তিতাস গ্যাস ২০২২ সালের ডিসেম্বরে সরকারি ও বেসরকারি খাতে ২০৬ জন গ্রাহকের গ্যাস সংযোগের বিপরীতে বকেয়া বিল আদায়ে পরিদর্শন করে।
এর মধ্যে মাত্র সাতটি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে। এসব গ্রাহকের গ্যাস সরবরাহ স্থগিত করেছে। এ ছাড়া সরকারি সংস্থা ঢাকা দুই সিটি করপোরেশন থেকে ৫ কোটি ৮৯ লাখ টাকা,
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) থেকে ৫৮ লাখ টাকা এবং বাংলাদেশ রেলওয়ে থেকে ৬৫ লাখ টাকা আদায় করা হয়।
বিলগুলো অনেক দিন অনাদায়ী ছিল। এ ছাড়া বাংলাদেশ পুলিশ, সাধারণ বীমা করপোরেশন, ইডেন কলেজ, গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজ, সাধারণ বীমার স্টাফ কোয়ার্টার এবং ঢাকা ওয়াসার
স্টাফ কোয়ার্টার থেকে আরও ৮ কোটি ৩০ লাখ টাকা আদায় করা হয়েছে।
এ ছাড়া জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেমের বকেয়া গ্যাস বিলের পরিমাণ রয়েছে ১ হাজার ২৮১ কোটি ১৫ লাখ টাকা।
কোম্পানিটি সম্প্রতি বকেয়া গ্যাস বিলের জন্য ৫৬টি সরকারি সংস্থাকে নোটিশ দিয়েছে। নোটিশের পর সরকারি সংস্থাগুলো ১২৩ কোটি ৩১ লাখ টাকা বকেয়ার বিপরীতে মাত্র ২৫ কোটি ৪৮ লাখ টাকা পরিশোধ করেছে।
কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির অপরিশোধিত বিল দাঁড়িয়েছে ৭২০ কোটি ৭০ লাখ টাকা। এরই চলতি সপ্তাহের শুরুতে সাত দিনের মধ্যে খেলাপিদের বিল পরিশোধের জন্য এরই মধ্যে নোটিশ জারি করা হয়েছে।
ভোলায় সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডের ৭৯ জন আবাসিক গ্রাহক রয়েছে। এর মধ্যে পুলিশ সুপার (পুলিশ লাইন ব্যারাক হাউস) ১১ মাস, ভোলার জেল সুপার পাঁচ মাস এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) চার মাস গ্যাস বিল দেননি।
কোম্পানিটি ভোলার পুলিশ সুপারকে (এসপি) নোটিশ দিয়েছে।
জানা গেছে, দেশের সিংহভাগ গ্যাস ব্যবহার করেন তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির গ্রাহকরা। সংখ্যার বিচারেও বাকি সবগুলোর চেয়ে এর গ্রাহকসংখ্যা বেশি।
এ কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো. হারুনুর রশীদ মোল্লাহ জানান, গত অক্টোবরে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে ৯৬ কোটি ৭৮ লাখ টাকা মূল্যের গ্যাস বিক্রির ৬০ কোটি ৭৩ লাখ টাকা আদায় করা হয়েছে। আদায়ের হার ৬৩ শতাংশ।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে ১ হাজার ৪৬১ কোটি টাকার বিক্রির বিপরীতে আদায় ১ হাজার ৫৭৬ কোটি টাকা। আদায়ের হার ১০৮ শতাংশ। অর্থাৎ এ সময়ে বেসকারি খাত থেকে পুরোনো বকেয়া বিলও আদায় করা হয়েছে। তবে পুরোনো অনেক বকেয়া বিল রয়েছে বলেও তিনি জানান।
এখানে উল্লেখ্য, দেশে উৎপাদিত-বিক্রীত গ্যাসের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ৪৩ শতাংশ, শিল্প-কারখানায় ১৫ দশমিক ৭৯ শতাংশ, বাসাবাড়িতে ১৫ দশমিক ২৫ শতাংশ, শিল্প কারখানার নিজস্ব বিদ্যুৎকেন্দ্রে (ক্যাপটিভ পাওয়ার) ১৫ দশমিক ১২ শতাংশ,
সার উৎপাদনে ৫ দশমিক ৫৪ শতাংশ, সিএনজি স্টেশনে ৪ দশমিক ১৬ শতাংশ, বাণিজ্যিকে দশমিক ৭৬ শতাংশ ও চা বাগানে দশমিক ১০ শতাংশ ব্যবহৃত হয়।
Editor Incharge: Faisal Ahmed Bablu
Office : 9-C, 8th Floor, Bluewater Shopping City, Zindabazar, Sylhet-3100
Phone: 01711487556, 01611487556
E-Mail: sylhetsuninfo@gmail.com, newssylhetsun@gmail.com
Publisher: Md. Najmul Hassan Hamid
UK office : 736-740 Romford Road Manor park London E12 6BT
Email : uksylhetsun@gmail.com
Website : www.sylhetsun.net