আনন্দনিকেতন জ্ঞানের চারা গাছ। এর ফল ও ফুল সুগন্ধ ছড়াচ্ছে বিশ্বব্যাপী। ইংরেজি মাধ্যমের বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেও এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা তাদের মননে ধারণ করছে বাঙালি সংস্কৃতি।
এটি সত্যি আশাব্যঞ্জক। আনন্দনিকেতন বাংলা সাহিত্য উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এভাবেই নিজের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন লেখক গবেষক ড. আবুল ফতেহ ফাত্তাহ। মঙ্গলবার সকাল ৯ টা থেকে দুপুর ১ টা পর্যন্ত সিলেটের ইংরেজি মাধ্যমের বিদ্যালয় আনন্দনিকেতনে এই বাংলা সাহিত্য উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।
এতে বিদ্যালয়ের প্রথম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা বাংলা সাহিত্যের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিক তাদের উপস্থাপনার মাধ্যমে তুলে ধরে। মাঠভর্তি দর্শক তা প্রাণভরে উপভোগ করেন। পরিবেশনার মধ্যে ছিল নৃত্য, গান,ছড়া, কবিতা আবৃত্তি, সংবাদ পাঠ, নাগরী পুঁথি পাঠ, নাটিকা, স্বরচিত গল্প পাঠ, বাধ্য যন্ত্র পরিচিতি ইত্যাদি।
গারো খাশিয়া, মনিপুরী সহ বিভিন্ন উপজাতির সংস্কৃতি নিয়েও ছিল ভিন্ন ভিন্ন পরিবেশনা। ছিল হারিয়ে যাওয়া খেলা নিয়ে আলাদা পরিবেশনা। কামার, কুমার, জেলে, ডাকপিয়ন, চা শ্রমিক ইত্যাদি বিভিন্ন পেশার মানুষের জীবন নিয়ে ছিল ভিন্নধর্মী পরিবেশনা। সিলেট কালেক্টরস এর আয়োজনে ছিল ডাক টিকেট ও মুদ্রার সংগ্রহের প্রদর্শনী। অরূণোদয় নামে একটি দেয়াল পত্রিকাও প্রকাশিত হয়।
বাংলা সাহিত্য উৎসব উপলক্ষে সুন্দর হাতের লেখা প্রতিযোগিতা শব্দজোট বাংলা সাহিত্য জ্ঞান বিষয়ক বিভিন্ন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন অনুষ্ঠান উৎসবের প্রধান অতিথি ড. আবুল ফতেহ ফাত্তাহ। এ সময়ে উপস্থিত ছিলেন আনন্দ নিকেতনের একাডেমিক হেড শামীম চৌধুরী, প্রশাসনিক প্রধান ফাহমিনা নাহাজ ও সচিব পারভীন সাকিবা।
প্রধান অতিথর বক্তব্যে ড. ফাত্তাহ আরো বলেন, ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের নামকরণ করা হয়েছে আনন্দনিকেতন এতে করেই বোঝা যায় বাংলা ভাষা এবং সংস্কৃতির প্রতি স্কুল কর্তৃপক্ষের মমত্ববোধ কতখানি। আশাকরি আনন্দনিকেতনের শিক্ষার্থীরা বাংলা সাহিত্যের সুধা ছড়িয়ে দিবে বিশ্বময়। উৎসবের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষিকা জিয়ারীন চৌধুরী।
অনুষ্ঠান শেষে সমাপনী বক্তব্য প্রদান করেন সাকি চৌধুরী। অনুষ্ঠানে উপস্থিত অভিভাবকদের মধ্যে সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব অনিমেষ বিজয় চৌধুরী বলেন, বাংলা সাহিত্যের নানা শাখার সাথে শিশুদের পরিচয় করে দিতে এই যে আয়োজন তাতে অভিভাবক হিসেবে যোগদান করতে পেরে আনন্দ বোধ করছি।
শিশুদের চোখে মুখে যে উচ্ছ্বাস, যে খুশি বাংলা সাহিত্য উৎসব ঘিরে প্রত্যক্ষ করলাম তাতে মুগ্ধ হয়েছি। একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলও যে শিকড়ের সাথে আমাদের সন্তানদের যোগসূত্র স্থাপনের জন্য আন্তরিক চেষ্টা করতে পারেন এই আয়োজন তারই সার্থক সুন্দরতম প্রকাশ।প্রতি বছর এরকম একটি চমৎকার শিক্ষামূলক আয়োজন হোক এই শুভকামনা রইল।
রবীন্দ্র সংগীত সম্মিলন পরিষদ, সিলেটের সাধারণ সম্পাদক প্রতীক এন্দ টনি বলেন, একটি ইংরেজী মাধ্যম স্কুল হয়েও বাংলা ভাষা,সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য কে ছেলে মেয়েরা কতটুকু ভালোবাসে এবং অন্তরে ধারণ করে সেটি আজকের এই সাহিত্য উৎসবে উপস্থিত সকলে অনুধাবন করেছেন।
বাংলার হারিয়ে যাওয়া খেলা থেকে শুরু করে বিভিন্ন পার্বন অনুষ্ঠান চমৎকারভাবে উপস্হাপন করে স্কুলের শিক্ষার্থীরা।বাংলার ইতিহাস,সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের সাথে ছাত্রছাত্রীদের পরিচয় ঘটানো এবং তাদের মধ্যে সেটি কে ছড়িয়ে দিচ্ছেন স্কুলের বাংলা বিভাগের শিক্ষকরা। এটি সত্যি আনন্দের এবং গৌরবের বিষয়।
অনুষ্ঠানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন বিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষিকা জিয়ারীন চৌধুরী, মাহজাবীন চৌধুরী কাকন, নন্দিতা দত্ত, সাকি চৌধুরী, আমরিন ইসলাম, নিম্মি চৌধুরী ও সঙ্গীতা এন্দ।
Editor Incharge: Faisal Ahmed Bablu
Office : 9-C, 8th Floor, Bluewater Shopping City, Zindabazar, Sylhet-3100
Phone: 01711487556, 01611487556
E-Mail: sylhetsuninfo@gmail.com, newssylhetsun@gmail.com
Publisher: Md. Najmul Hassan Hamid
UK office : 736-740 Romford Road Manor park London E12 6BT
Email : uksylhetsun@gmail.com
Website : www.sylhetsun.net