খেয়াঘাটের ভোগান্তি শেষ : স্বপ্নের রানীগঞ্জ সেতুর উদ্বোধন

স্টাফ রিপোর্টার, সুনামগঞ্জ || ২০২২-১১-০৭ ০৩:৪১:০০

image

এপারে সুনামগঞ্জ ওপারে হবিগঞ্জ। মাঝখানে কুশিয়ার নদী। সেই নদী পার হতে খেয়াঘাটের ভোগান্তির শেষ ছিল না।

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর দীর্ঘদিনের খেয়াঘাটের ভোগান্তি শেষে বহুল প্রতীক্ষিত জেলাবাসীর স্বপ্নের রানীগঞ্জ সেতুটি সোমবার (৭ নভেম্বর) সকালে জগন্নাথপুর উপজেলার রানীগঞ্জে কুশিয়ারা নদীর ওপর নির্মিত সেতুটিসহ ১০০ সেতু উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেশের সাত বিভাগে এসব সেতুর উদ্বোধন করেন সরকারপ্রধান। সেতুটি উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে হাওর অধ্যুষিত জেলাটির যোগাযোগব্যবস্থায় যুক্ত হয়েছে নতুন মাইলফলক।

এই সেতুর ফলে সুনামগঞ্জ থেকে রাজধানী ঢাকায় আসতে হলে আর সিলেট ঘুরে নয়, সরাসরি হবিগঞ্জ হয়ে আসা যাবে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে এতে সুনামগঞ্জের দূরত্ব কমেছে ৫৫ কিলোমিটার।

এরফলে হবিগঞ্জ হয়ে কম সময়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গা যাতায়াত করতে পারবে সুনামগঞ্জ জেলার বাসিন্দারা। এছাড়া জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে হাওরাঞ্চলবাসীর জন্য পদ্মা সেতু খ্যাত সুনামগঞ্জের সম্ভাবনায় সিলেটের দীর্ঘতম রানীগঞ্জ সেতু।

জেলা ছাত্রলীগে সাবেক অর্থ বিষয়ক সম্পাদক মামুনুর রশীদ সালমানসহ জেলাবাসী বলছেন,রাজধানী ঢাকার সঙ্গে বাড়বে ব্যবসায়িক সম্পর্ক। উন্নয়নের মাপকাঠিতে আরেক ধাপ এগিয়ে যাবে পিছিয়ে থাকা সুনামগঞ্জবাসী।

জগন্নাথপুর উপজেলার রানিগঞ্জ সেতুটি জেলার সড়ক যোগাযোগে ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে। প্রায় ৬ বছরের অধিক সময়ে চলতে থাকা কাজ সরকারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় হাওর অঞ্চলে নতুর দ্বার উন্মোচিত হয়েছে।

সেতুটি বাংলাদেশের সঙ্গে সুনামগঞ্জ, জগন্নাথপুর, দিরাইসহ অত্র অঞ্চলের নতুন যোগাযোগের মাইলফলক সৃষ্টি করছে। আমিন উদ্দিন,জহির আহমেদসহ সেতুর দু-পাড়ের স্থানীয় এলাকাবাসী জানায়,কুশিয়ার নদীর জন্য এতদিন সীমাহীন কষ্ট করতে হয়েছে জেলার বাসিন্দাদের।

 

নৌকা কিংবা ফেরি দিয়ে নদী পারাপারের ব্যবস্থা থাকলেও সীমাহীন কষ্ট সহ্য করে ঘন্টার পর ঘন্টা দূর্ভোগের শিকার হয়ে যোগাযোগ করতে হয়েছে দুই পারের কয়েক লাখ মানুষ।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়,১৯৯৬ সালে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রয়াত জাতীয় নেতা আলহাজ আবদুস সামাদ আজাদের প্রচেষ্টায় শান্তিগঞ্জ উপজেলার ডাবর পয়েন্ট থেকে জগন্নাথপুর হয়ে আউশকান্দি পর্যন্ত আঞ্চলিক মহাসড়ক নির্মাণ করলেও কুশিয়ারা নদীর ওপর রাণীগঞ্জ সেতুটি করতে পারেননি।

২০১৬ সালের আগস্টে কার্যাদেশ দেয়ার পর ২০১৭ সালের ১৪ জানুয়ারি দীর্ঘ এই সেতুর নির্মাণকাজ যৌথভাবে উদ্বোধন করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এম মান্নান।

২০১৬ সালের আগস্টে ১৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রায় আড়াই কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সেই স্বপ্নের রাণীগঞ্জ সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ৭০২ মিটার সেতু নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ৯১ কোটি টাকা। বাকি ব্যয় ধরা হয়, অ্যাপ্রোচ সড়ক, আধুনিক টোলপ্লাজা, কালভার্ট ও স্থানীয় ইটাখলা নদীর ওপর আরেকটি ছোট সেতু নির্মাণে।

শাকিল মিয়া,রফিক উদ্দিনসহ ব্যবসায়ীও Hide quoted text সেতুটি দু পাড়ের স্থানীয়রা জানান,সেতুটিতে যানবাহন চলাচলে সুনামগঞ্জ জেলা শহর থেকে রাজধানী ঢাকাতে পৌঁছাতে প্রায় ৫৫ কিলোমিটার পথ কমে আসবে। সময় বাঁচবে কমপক্ষে ২ ঘণ্টা।।

সেতুটি ঘিরে নতুন স্বপ্ন ও সম্ভাবনায় বিভোর এলাকাবাসী। পাশাপাশি সেতুটি সুনামগঞ্জের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে মাইলফলক হিসেবে ভূমিকা রাখবে। এছাড়াও যানবাহন চলাচলের মধ্যে দিয়ে জীবন জীবিকার অবলম্বন খোঁজ পাবে। সুনামগঞ্জ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আশরাফুল ইসলাম প্রাং বলেন,সুনামগঞ্জ জেলাবাসীর দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি ছিল কুশিয়ারা নদীর ওপর রানীগঞ্জ সেতু নির্মাণের।

যা দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর বাস্তবায়ন হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের জেলায় সিলেট বিভাগের সবচেয়ে বড় রাণীগঞ্জ সেতুসহ আরো ১৭টি সেতু উদ্বোধন করেছেন। এ সেতুগুলো নির্মাণের ফলে এই অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থার বৈপ্লবিক পরিবর্তন শুরু হয়েছে। যাতায়াতের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্যও সম্প্রসারিত হবে।

Editor Incharge: Faisal Ahmed Bablu

Office : 9-C, 8th Floor, Bluewater Shopping City, Zindabazar, Sylhet-3100

Phone: 01711487556, 01611487556

E-Mail: sylhetsuninfo@gmail.com, newssylhetsun@gmail.com

Publisher: Md. Najmul Hassan Hamid

UK office : 736-740 Romford Road Manor park London  E12 6BT

Email : uksylhetsun@gmail.com

Website : www.sylhetsun.net