সিলেট জুড়ে চোখ ওঠা রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। শহর থেকে গ্রাম প্রায় প্রতিটি ঘরেই কেউ না কেউ এ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন কিংবা হচ্ছেন প্রতিদিন। চিকিৎসকদের মতে গরমে আর বর্ষায় চোখ ওঠার প্রকোপ বাড়ে
চিকিৎসা বিজ্ঞানে এটিকে কনজাংটিভাইটিস বা কনজাংটিভার বলা হলেও সমস্যাটি চোখ ওঠা নামেই পরিচিত। রোগটি ছোঁয়াচে। ফলে দ্রুত অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। সিলেট নগরীর কয়েকটি ঔষধের ফার্মেসিতে কথা বলে জানা গেছে, গত কয়েকদিনে চোখের ড্রপের চাহিদা বেড়েছে। এতে আক্রান্ত ব্যক্তিরা চিকিৎসকের পরামর্শ না নিয়েই চোখের ড্রপ ও অ্যান্টিহিস্টামিন ওষুধ সেবন করছেন।
এসব ওষুধ সেবন করে অনেকেই দুই তিন দিনের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন আবার কেউ ৫-৭ দিন। একটি বেসরকারী কোম্পানিতে কর্মরত আহমদ আলী জানান, চোখ ওঠা সমস্যা নিয়ে গত ৩দিন অফিস থেকে ছুটি নিয়ে বাসায় বিশ্রামে ছিলাম। আজ মঙ্গলবার সুস্থ হয়ে অফিস যাচ্ছি।
ট্রীটমেন্টের কথা জিজ্ঞাসা করাতে তিনি জানান, ফার্মেসি থেকে একটা চোখের ড্রপ নিয়েছিলাম। পরিবারের অন্য সদস্যদের কথা চিন্তা করে বাসায় কালো চশমা ব্যবহার করেছি। এর আগে পরিবারের কয়েক জনের এ সমস্যা হয়েছে। ৪/৫ দিনের মধ্যে সেরেও উঠেছেন তারা। সিএনজি অটোরিক্সা চালক কামরুল ইসলাম জানান, আমার চোখ ওঠেছে গত ২দিন। চোখ ওঠা নিয়েও চালাতে হচ্ছে অটোরিক্সা।
পরিবারে থাকা আরো ৩জন এই রোগে আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগের সংশ্লিষ্টরা জানান, চোখ ওঠা খুবই ছোঁয়াচে রোগ। পরিবারের একজনের থেকে অন্যজনের হতে পারে। সুতরাং এসব ক্ষেত্রে রোগ প্রতিরোধের জন্য পরিবারের সবাই কাপড়, তোয়ালে ও অন্যান্য জিনিস আলাদা ব্যবহার করতে হবে।
আক্রান্তরা উদ্বিগ্ন না হয়ে চক্ষু চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে পাশাপাশি বাসায় আইসোলেশনে থাকতে হবে। এদিকে এ রোগ হলে আতঙ্কিত না হয়ে সতর্কতার অবলম্বন করার পরামর্শ দিচ্ছেন চক্ষু বিশেষজ্ঞরা। চোখ ওঠলে কখনো কখনো এক চোখে অথবা দুই চোখেই জ্বালা করে এবং লাল হয়ে চোখ ফুলে যায়।
চোখ জ্বলা, চুলকানি, খচখচে ভাব থাকা, চোখ থেকে পানি পড়া, চোখে বার বার সাদা ময়লা আসা, কিছু ক্ষেত্রে চোখে তীব্র ব্যথা এ রোগের অন্যতম প্রধান লক্ষণ। চিকিৎসকরা বলছেন, গরমে আর বর্ষায় চোখ ওঠার প্রকোপ বাড়ে, চিকিৎসা বিজ্ঞানে এটিকে কনজাংটিভাইটিস বা কনজাংটিভার বলা হয়। তবে এ সমস্যাটি চোখ ওঠা নামেই বেশি পরিচিত। রোগটি ছোঁয়াচে ফলে দ্রুত অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে।
চোখের একেবারে বাইরের স্বচ্ছ অংশটির ডাক্তারি নাম ‘কনজাংকটিভা’। ভাইরাসের সংক্রমণে সেখানে তৈরি হয় প্রদাহ, ফুলে যায় চোখের ছোট ছোট রক্তনালি। ফুলে থাকা রক্তনালিগুলোর কারণেই চোখের রং লালচে হয়ে যায়, যেটাকে চোখ ওঠা বা ‘কনজাংকটিভাইটিস’ বলা হয়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিলেট নগরী থেকে শুরু করে বিভাগের বেশিরভাগ ঘরেই এখন চোখ ওঠা রোগী।
হাসপাতালগুলোর বহির্বিভাগে বেড়েছে আক্রান্তের সংখ্যা। রোগী বাড়ায় দেখা দিয়েছে চোখের ড্রপের সংকট। আক্রান্তদের উল্লেখযোগ্য অংশই শিশু। সাধারণত এক সপ্তাহের মধ্যেই এই রোগ সেরে যায়। তবে জটিল রূপ ধারণ করলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়ার ওপর জোর দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।
কনজাংটিভাইটিস রোগটি আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শ থেকে ছড়ায়। রোগীর ব্যবহার্য বস্তু যেমন- রুমাল, তোয়ালে, বালিশ, টিস্যু অন্যরা ব্যবহার করলে অন্যরাও এতে আক্রান্ত হয়। এছাড়া কনজাংটিভাইটিসের জন্য দায়ী ভাইরাস বাতাসের মাধ্যমেও ছড়ায়।
আক্রান্ত ব্যক্তির আশপাশে যারা থাকে, তারাও এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই আক্রান্ত ব্যক্তিকে নিরাপদ থাকতে হবে। সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক ডা: এম এ গাফফার বলেন, প্রতি বছরের এই সময়টাতে চোখ ওঠার রোগ কিছুটা বেড়ে থাকে। ওসমানী হাসপাতালের বহির্বিভাগে সাধারণত দুয়েকজন চোখ ওঠার রোগী এসে থাকেন।
সেই জায়গায় এখন প্রতিদিন ১৫/২০ জন চোখ ওঠার রোগী বহির্বিভাগে ট্রিটমেন্ট নিচ্ছেন। তিনি বলেন, এই ধরনের রোগ নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। ড্রপার ব্যবহারের ফলে ২/৩ দিনের মধ্যে ভালো হয়ে যায়। তবে যেহেতু বিষয়টা চোখ সম্পর্কিত তাই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ড্রপার ব্যবহার করা উচিৎ।
এ বিষয়ে সিলেটের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. জন্মে াজয় শংকর দত্ত বলেন, চোখ ওঠা একটি মওসুমী ভাইরাসজনিত রোগ। তবে ড্রপার ব্যবহারের আগে এর মান ও মেয়াদ সম্পর্কে অবগত থাকতে হবে।
সরকারী হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গুলোতে যোগাযোগ করতে হবে। সারাদেশের ন্যায় সিলেটেও চোখ ওঠার রোগী বেড়ে যাওয়ায় জেলার সকল সরকারী হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পর্যাপ্ত ড্রপার সরবরাহ করা হয়েছে।
Editor Incharge: Faisal Ahmed Bablu
Office : 9-C, 8th Floor, Bluewater Shopping City, Zindabazar, Sylhet-3100
Phone: 01711487556, 01611487556
E-Mail: sylhetsuninfo@gmail.com, newssylhetsun@gmail.com
Publisher: Md. Najmul Hassan Hamid
UK office : 736-740 Romford Road Manor park London E12 6BT
Email : uksylhetsun@gmail.com
Website : www.sylhetsun.net