হবিগঞ্জে চা বাগান শ্রমিকদের অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি
মিঠুন মহালী, চুনারুঘাট ||
২০২২-০৮-১৩ ০৬:১৩:১২
সারাদেশের ন্যায় হবিগঞ্জ জেলার ২৪টি বাগানে মজুরী বৃদ্ধি করে ৩শ টাকা করার দাবীতে ফুঁসে উঠেছেন চা-শ্রমিকরা। ইতিমধ্যে দাবী না মানায় আজ শনিবার থেকে মহা-বিক্ষোভসহ অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছে চা-শ্রমিক ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দ। তাছাড়া এ ঘটনায় আজ মহাসড়ক অবরোধের হুশিয়ারী দেয়া হয়েছে।
জানা যায়, সারাদেশে চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরী ১শ ২০ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ৩শ টাকা করার দাবী জানিয়েছে চা-শ্রমিক ইউনিয়ন। এর পর থেকে এ দাবী আদায়ে সারাদেশের ন্যায় আন্দোলনে নেমেছে হবিগঞ্জের চানপুর, নালুয়া, আমু, ছন্ডি, লস্করপুর, লালচান, জুয়াল ভাঙ্গা, বেলাবিল, রামগঙ্গা, সাতছড়ি, চাকলা, দেউন্দি, কাপাই, বেগমখাল, বৈকণ্ঠপুর, নোয়াপাড়া, তেলিয়াপাড়া. সুরমা, জগদিশপুর, শ্রী বাড়ি, দারা গাও, কামাইছড়া, রশিদপুর ও শিকলা চা বাগানে কর্মরত শ্রমিকরা। তারা গত ৩ দিন দুই ঘন্টা করে প্রতিদিন কর্মবিরতি পালন করেছেন। তবে তাদের দাবী এ কর্মবিরতিতে মন গলেনি বাগান কর্তৃপক্ষের। যে কারনে ফুসে উঠেছেন বাগানগুলোর চা শ্রমিকরা। তাছাড়া আজ শনিবার থেকে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি ও সমাবেশের আহবান করেছে বাংলাদেশ চা-বাগান শ্রমিক ইউনিয়ন। ফলে হবিগঞ্জের ২৪টি চা বাগান নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে আজ সকাল ১১টায় এক বিশাল কর্মসুচির আহবান করেছে শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ। তাছাড়া মহাসড়ক অবরোধের হুশিয়ারীসহ অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি পালন করবে বলে জানিয়েছে জেলার ২৪টি বাগানের শ্রমিকরা।
গত বৃহস্পতিবার গভীর রাত পর্যন্ত শ্রীমঙ্গলে শ্রম অধিদপ্তরে চা শ্রমিক ১০ নেতার সঙ্গে শ্রম দপ্তরের আলোচনা ব্যর্থ হলে শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল এ কর্মবিরতির ঘোষণা দেন।
এর আগে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ডাকে ৯ আগস্ট থেকে ১১ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিন দুই ঘণ্টা এ কর্মবিরতি পালন করে হবিগঞ্জের ২৪টি বাগানসহ সারাদেশের চা বাগান শ্রমিকরা। বাগান মালিকদের তিন দিনের সময় দিয়ে তারা এ কর্মবিরতি শুরু করেছিলেন। এর পর বৃহস্পতিবার শ্রম দপ্তরের উপপরিচালক নাহিদুল ইসলামের দপ্তরে জেলার ২৪টি চা বাগানের ১০ প্রতিনিধি আলোচনায় বসেন। শ্রমিক নেতাদের নিয়ে আলোচনা করে মজুরি বাড়ানোর জন্য আগামী ২৮ আগস্ট পুনরায় আলোচনায় বসার সময় চান শ্রম অধিদপ্তর। কিন্তু সেখানে কোনো মালিকপক্ষ ছিলেন না। ফলে আলোচনা ব্যর্থ হয়।
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, ‘শ্রম অধিদপ্তর আলোচনার নামে সময়ক্ষেপণ করেছে। তারা আগামী ২৯ আগস্ট ত্রিপক্ষীয় আলোচনার সময় চেয়েছে। কিন্তু আমরা তাতে রাজি হইনি। গতকাল শুক্রবার উপজেলার সব চা বাগানে ২ ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন শেষে এক সমাবেশে তিনি সব চা বাগান একযোগে বন্ধের ঘোষণা করেছি’। তিনি, ‘যদি কর্তৃপক্ষ দাবী না মানে তাহলে শায়েস্তাগঞ্জ নতুনব্রিজ মহাসড়ক অবরোধ করে দেয়ার হুশিয়ারী দেন।
চা সংসদের আহ্বায়ক তাহসিন আহমেদ বলেন, ‘তাদের অযৌক্তিক আন্দোলনে চা-উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। চা-শ্রমিকদের সাথে বাগান কর্তৃপক্ষের কোন ধরনের ঝামেলা নেই, অথচ তারা অযৌক্তিকভাবে আন্দোলন করছেন’। তিনি জানান, তাদের দাবি নিয়ে আলোচনা চলমান থাকাকালীন তারা হঠাৎ করে এ কর্ম বিরতি ঘোষণা দিয়েছে, সেটা অবৈধ কর্ম বিরতি যা শ্রম আইনের পরিপন্থী।
চানপুর চাবাগানের ম্যানাজার মোঃ শামীম হুদা বলেন, ‘হঠাৎ করে কর্ম বিরতী দিয়ে চা উৎপাদনে ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। যেকানে প্রতিদিন ৩০ থেকে ৩৫ হাজার পাতা তোলা হত এখন কমে প্রায় দাড়িয়েছে ২০ হাজার। আর যদি লাগাতার কর্ম বিরতী হয় তাহলে চা উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাবে’। উৎপাদন মৌসুমে শ্রমিকদের এ আন্দোলন কাম্য নয়।
Editor Incharge: Faisal Ahmed Bablu
Office : 9-C, 8th Floor, Bluewater Shopping City, Zindabazar, Sylhet-3100
Phone: 01711487556, 01611487556
E-Mail: sylhetsuninfo@gmail.com, newssylhetsun@gmail.com
Publisher: Md. Najmul Hassan Hamid
UK office : 736-740 Romford Road Manor park London E12 6BT
Email : uksylhetsun@gmail.com
Website : www.sylhetsun.net