সারাদেশেের চা-বাগানগুলোতে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট চলছে

মিঠুন মহালী, চুনারুঘাট || ২০২২-০৮-১৩ ০০:৫৭:০৯

image

বর্তমান বাজারমূল্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দৈনিক মজুরি ৩০০ টাকা করাসহ বিভিন্ন দাবিতে সারাদেশে চা-শ্রমিকদের ধর্মঘট চলছে। আজ শনিবার থেকে একযোগে সারাদেশের সব চা-বাগানে অনির্দিষ্টকালের এই ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়ন।

শ্রমিক নেতারা বলেন, তাদের হাড়ভাঙা খাটুনিতে প্রতি বছর চা শিল্পে রেকর্ড চা উৎপাদন হয়। ২০২১ সালে দেশের ইতিহাসে চা শিল্প রেকর্ড ৯৬ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদন হয়েছে। কিন্তু তাদের ভাগ্যের উন্নয়ন আজও হয়নি। চা শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির দুটি চুক্তি বাস্তবায়ন করা হলেও তারা বার বার মার খাচ্ছেন।

শ্রমিক নেতৃবৃন্দরা বলেন, যদি তারা সিদ্ধান্তে না আসে তাহলে আগামীকাল থেকে এক যুগে -এক ডাকে সমগ্র বাংলাদেশের চা বাগান গুলো অনিদির্ষ্ট কালের জন্য বন্ধ করা হবে। দাবি না মানায় আজ থেকে সারা দেশে একযোগে তারা আন্দোন্লনের ডাক দেন।

এর আগে দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করার দাবিতে গত মঙ্গলবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত টানা চারদিন দুই ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালন করেন সিলেট চট্টগ্রামসহ দেশের ২৩১টি চা-বাগানের শ্রমিকরা।

দাবি না মানায় ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল একযোগে দেশের ১৬৭টি চা বাগানে মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে এই ধর্মঘট ঘোষণা করেন। চা-শ্রমিক নেতৃবৃন্দরা জানান, প্রতি দুই বছর অন্তর চা-শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির চুক্তি হওয়ার কথা। বর্তমানে মজুরি চুক্তির মেয়াদ প্রায় ১৯ মাস উত্তীর্ণ হয়েছে।

চা-শ্রমিক ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন সংগঠন মজুরি বৃদ্ধির দাবি জানিয়ে এলেও সংশ্লিষ্টরা এ বিষয়ে কোনো কর্ণপাত করছেন না। ফলে চা-শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় ও বিভিন্ন ভ্যালী কমিটির উদ্যোগে গত কয়েকদিন ধরে দুই ঘণ্টা করে চা-বাগানগুলোতে কর্মবিরতি ও প্রতিবাদ সমাবেশ পালন করা হয়।

বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়ন মনু-দলই ভ্যালী কমিটির সাধারণ সম্পাদক নির্মল দাস পাইনকা বলেন, ৩০০ টাকা মজুরি, স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশন সুবিধাসহ ১২০টি পয়েন্টে আমরা লিখিত দাবি জানিয়ে আসছি। তবে মালিকপক্ষ এই দাবি না মানার কারণে মজুরি বোর্ডসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বারবার কথা বলেও কোনো কার্যকরী উদ্যোগ পরিলক্ষিত হয়নি।

এদিকে চা-শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ৩০০ টাকা করার দাবিতে আন্দোলনরত শ্রমিক নেতাদের নিয়ে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে সমঝোতা বৈঠক করে শ্রীমঙ্গলস্থ বিভাগীয় শ্রমদপ্তর। সমঝোতা বৈঠকে মালিক পক্ষ না থাকায় আন্দোলন স্থগিত না করার ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়ন।

বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, পেট খালি থাকলে প্রয়োজন পড়লে মানুষ আইনের বাইরে যায়। আমরা সেখানে আইন মেনেই আন্দোলন করছি।

প্রায় ১৯ মাস ধরে মালিক পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করলেও আমাদের দাবি মেনে নেওয়া হয়নি। চা-শ্রমিকরা কী নিদারুণ কষ্টে আছেন তা মালিকপক্ষ ও সরকারকে বোঝা উচিত।

বাধ্য হয়েই শনিবার থেকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য কর্মবিরতি পালন করছি। চা-শ্রমিকদের একটি ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা যায়, ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে আজ চা-বাগান পঞ্চায়েত, চা-শ্রমিক, ছাত্র-যুবকরা হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জসহ বিভিন্ন জায়গায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে পারেন। সে লক্ষ্যে প্রস্তুতি গ্রহণ করছে।

Editor Incharge: Faisal Ahmed Bablu

Office : 9-C, 8th Floor, Bluewater Shopping City, Zindabazar, Sylhet-3100

Phone: 01711487556, 01611487556

E-Mail: sylhetsuninfo@gmail.com, newssylhetsun@gmail.com

Publisher: Md. Najmul Hassan Hamid

UK office : 736-740 Romford Road Manor park London  E12 6BT

Email : uksylhetsun@gmail.com

Website : www.sylhetsun.net