আওয়ামী লীগ বলেছে, করোনা-পরবর্তী প্রেক্ষাপট এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বিশ্ব অর্থনীতিতে যে চাপ সৃষ্টি করেছে, তা বিবেচনায় নিয়ে বলা যায় প্রস্তাবিত বাজেটটি সম্পূর্ণ বাস্তবসম্মত ও সময়োপযোগী।
শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে আত্মনির্ভরশীল জাতি গঠনের প্রত্যয় নিয়ে বাংলাদেশের ঘুরে দাঁড়ানোর বাজেট এটা। এ বাজেট সফলভাবে বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে সরকার উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণের পথে আরেক ধাপ অতিক্রম করবে।
শনিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিক বাজেট প্রতিক্রিয়া জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।তিনি বলেন, প্রস্তাবিত বাজেট জনমুখী, জনকল্যাণকর এবং সংকটের মুহূর্তে দেশের সবচেয়ে বড় অঙ্কের বাজেট।
বর্তমান বিশ্ব অর্থনীতির বাস্তবতায় পৌনে ৭ লাখ কোটি টাকার এই বাজেট শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অর্জিত বাংলাদেশের অর্থনীতির সক্ষমতার প্রতিফলন।বিভিন্ন দেশের উচ্চহারে মূল্যস্ফীতির উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, বিশ্বের অনেক উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশেও মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশের ওপর।
সেখানে প্রস্তাবিত বাজেটে মূল্যস্ফীতির হার শতকরা মাত্র ৫.৬ শতাংশ রাখার চ্যালেঞ্জ নিয়েছে শেখ হাসিনার সরকার। এই অর্থবছরে দেশের জনগণের মাথাপিছু আয় দাঁড়াবে ৩ হাজার মার্কিন ডলারে।ওবায়দুল কাদের বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির মধ্যে বাংলাদেশে তা সহনীয় রাখতে বাজেটে ৮৩ হাজার কোটি টাকার ভর্তুকি রাখা হয়েছে।
বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা দৃঢ়তার সঙ্গে বলেছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যবৃদ্ধির চাপ দেশের মানুষের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হবে না। যদিও আন্তর্জাতিক বাজারে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বিবেচনায় এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মূল্য বৃদ্ধিজনিত কারণে সরকারের ব্যয় দিন দিন বাড়ছে।
এ কারণেই এবারের বাজেটের প্রস্তাবনায় বাস্তবতার আলোকে জনগণের দুর্ভোগ লাঘবে সরকার গুরুত্বের সঙ্গে কিছু চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছে।তিনি বলেন, শেখ হাসিনার নিরবচ্ছিন্ন নেতৃত্বের কারণেই বাংলাদেশের অর্থনীতি গত দেড় দশকে একটি শক্তিশালী ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়েছে।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একটি মজবুত অর্থনৈতিক কাঠামো থাকার কারণে কভিড-১৯ মহামারি ও ইউরোপে চলমান যুদ্ধ সত্ত্বেও সরকার দুঃসাহসী চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে সক্ষম হয়েছে। ওবায়দুল কাদের বলেন, সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির বাইরেও বিশ্বব্যাপী নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে 'ফ্যামিলি কার্ড' কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এই কর্মসূচির আওতায় উপকারভোগী ১ কোটি পরিবারের ৫ কোটি সদস্য সরাসরি উপকৃত হবেন।
বিশ্বব্যাপী দ্রব্যমূল্য ক্রমাগত বৃদ্ধির কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে গণমানুষের কথা চিন্তা করেই প্রধানমন্ত্রী এ কর্মসূচি বাস্তবায়নের নির্দেশনা দিয়েছেন।তিনি বলেন, ১৩ বছর ধরে শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে দেশ এক সোনালি অধ্যায় অতিক্রম করে চলেছে। বাংলাদেশ আজ সংকট মোকাবিলায় বিশ্বের যে কোনো দেশের কাছে এক অনুকরণীয় রাষ্ট্র।
দেশের সব সংকটের একমাত্র পরিত্রাণ কর্তা শেখ হাসিনা। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, শেখ হাসিনার নিখাদ দেশপ্রেম, জনগণের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা, দৃঢ় মনোবল, সততা, নিষ্ঠা এবং সাহসী নেতৃত্বে যে কোনো জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র-সংকট মোকাবিলা করা সম্ভব।
প্রস্তাবিত বাজেটে কর প্রদানের মাধ্যমে পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনার সুযোগ রাখায় পাচারকারীরা আরও উৎসাহী হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, এটা ঠিক সেভাবে দেখলে হবে না। দেশের অনেক টাকা পাচার হয়ে গেছে।
করের মাধ্যমে এ টাকা ফেরত আনতে সরকার সুযোগ দিয়েছে। অন্যান্য দেশেও এ ধরনের সুযোগ দেওয়া হয়। আমরাও দিচ্ছি। এর সুফল আমরা পেতে পারি। যদি দেখা যায়, এর সুফল আসছে না তাহলে সুযোগটা উঠিয়ে নেওয়া হবে।এ বিষয়ে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজের সমালোচনার জবাবে তিনি বলেন, মির্জা ফখরুলসহ দেশের একটি মহল ক্রমাগতভাবে বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচার হচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন।
তাদের বক্তব্য যদি সত্য ধরি, তবে ৭ শতাংশ কর দেওয়ার মাধ্যমে কেউ টাকা নিয়ে এলে তো মির্জা ফখরুলদের খুশি হওয়ার কথা। পাচারের অভিযোগ তুলবেন, আর যখন টাকা ফেরত আনার উদ্যোগ নেব, তখনও অভিযোগ করবেন, সেটা তো দ্বিমুখী নীতি।ওবায়দুল কাদের বলেন, ক্ষমতায় থাকতে ৩৪ লাখ টাকা জরিমানা দিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দু'বার কালো টাকা সাদা করেছেন।
বাংলাদেশের মানুষ জানে কারা দেশের টাকা বিদেশে পাচার করেন। পাচারকারী হিসেবে বিএনপিরই বিশ্বরেকর্ড আছে।সরকারি নির্দেশনার পরও কর্মকর্তাদের বিদেশ সফর ঠেকানো যাচ্ছে না। এমন অপচয় রোধে বাজেটেও সুনির্দিষ্ট কোনো নির্দেশনা নেই- এ সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা বাজেটে কেন?
প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়ে সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশে যাওয়া নিষিদ্ধ করেছেন। কথায় কথায় চলে যাবে, যার ইচ্ছা সে বিদেশে চলে যাবে- সেটা মন্ত্রী হোক বা কর্মকর্তা হোক, কারও ব্যাপারে এটাকে উৎসাহিত করা হবে না।আগামী নির্বাচনে দলের বিজয়ের বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'আমরা সুসংগঠিত, সুশৃঙ্খলা, ঐক্যবদ্ধ,
সাহসী, স্মার্টার ও আধুনিক আওয়ামী লীগ নিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আগামী নির্বাচনে বিজয়ের বন্দরে পৌঁছব, ইনশাআল্লাহ।'সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কাজী জাফরউল্লাহ, ড. আব্দুর রাজ্জাক, শাজাহান খান, অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, মাহবুবউল-আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি,
ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, আহমদ হোসেন, এসএম কামাল হোসেন, হাবিবুর রহমান সিরাজ, ফরিদুন্নাহার লাইলী, অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাশ, ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, অসীম কুমার উকিল, সুজিত রায় নন্দী, ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, ড. সেলিম মাহমুদ, সিদ্দিকুর রহমান, শামসুন্নাহার চাঁপা, সায়েম খান, অ্যাডভোকেট এবিএম রিয়াজুল কবির কাওছার, আনোয়ার হোসেন, গোলাম রাব্বানী চিনু প্রমুখ
Editor Incharge: Faisal Ahmed Bablu
Office : 9-C, 8th Floor, Bluewater Shopping City, Zindabazar, Sylhet-3100
Phone: 01711487556, 01611487556
E-Mail: sylhetsuninfo@gmail.com, newssylhetsun@gmail.com
Publisher: Md. Najmul Hassan Hamid
UK office : 736-740 Romford Road Manor park London E12 6BT
Email : uksylhetsun@gmail.com
Website : www.sylhetsun.net