গোলাপগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন: মঞ্জুর কাদির শাফি স্বশিক্ষিত,স্বতন্ত্র সফিক উদ্দিন এইচএসসি পাশ

হারিছ আলী :: || ২০২২-০৫-২৯ ০৪:২৩:৫২

image

আগামী ১৫ জুন বুধবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) অনুষ্ঠিত হবে গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন

ওই নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন আওয়ামী লীগ (নৌকা) মনোনীত প্রার্থী মন্জুর কাদির চৌধুরী শাফি এলিম ও যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী (ঘোড়া) মো. সফিক উদ্দিন।

সম্প্রতি তারা নির্বাচন কমিশনে হলফনামা জমা দিয়েছেন। হলফনামা পর্যালোচনা করে দুই প্রার্থী সম্পর্কে পাওয়া গেছে বেশ কিছু তথ্য। হলফনামা গেটে দেখা যায় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মঞ্জুর কাদির শাফি স্বশিক্ষিত। তার প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. সফিক উদ্দিন এইচএসসি পাশ।

মঞ্জুর কাদির শাফির নিজের নামে ১০ কোটি ২৩ লাখ ৯ হাজার ৮৩০ টাকার অস্থাবর সম্পদ রয়েছে।

অপর দিকে মো. সফিক উদ্দিন সর্বমোট ৩ লাখ ৯০ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদের মালিক। শাফির বার্ষিক মোট আয়ের পরিমাণ ১ কোটি ৩৫ লাখ ৬ হাজার ৮১১ টাকা।

অপর প্রার্থী সফিকের বার্ষিক আয় ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা। শাফি ব্যবসা, শেয়ার-ব্যাংক, চাকুরিসহ অন্যান্য খাত থেকে এই টাকা আয় করেন।

আর পেশায় হাউজিং ব্যবসায়ী সফিক আয় করেন কৃষি ও অন্যান্য খাত থেকে। হলফনামা পর্যালোচনায় দেখা গেছে, নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শাফি ব্যবসা থেকে নিজে বছরে ১১ লাখ ৬৭ হাজার ৭৬৮ টাকা, শেয়ার-সঞ্চয়পত্র ও ব্যাংক আমানত থেকে ৪১ লাখ ৫৪ হাজার ২৯৩ টাকা আয় করেন।

চাকরির সম্মানী থেকে আয় করেন ৭৭ লাখ ৫৪ হাজার ৭৫০ টাকা। এছাড়াও অন্যান্য খাত থেকে ৪ লাখ ৩০ হাজার টাকা আয় করেন। তার বর্তমান পেশা ব্যবসা।

তিনি বিদ্যুৎ উৎপাদক ও রপ্তানীমুখি তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক। অস্থাবর সম্পদ হিসেবে নিজের নামে রয়েছে নগদ ১১ লাখ ৭ হাজার ৬৮৩ টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা রয়েছে ৫১ লাখ ১ হাজার ৯২৪ টাকা, স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত ও তালিকাভুক্ত নয় এমন কোম্পানির ৯ কোটি ১৭ লাখ ৩৫ হাজার ৪১২ টাকার শেয়ার রয়েছে।

এছাড়াও তার নিজের নামে রয়েছে-২২ লাখ ২৫ হাজার ২ টাকার সঞ্চয়পত্র বা স্থায়ী আমানত, ১০ লাখ ২৫ হাজার টাকা মূল্যের যানবাহন, ৬ লাখ টাকার স্বর্ণালংকার, ১ লাখ ৯০ হাজার ৭০০ টাকার ইলেকট্রনিক সামগ্রী, ১ লাখ ১৫ হাজার টাকার আসবাবপত্র ও ৩৭ লাখ ১৯ হাজার ১০৯ টাকার ব্যবসায়িক মূলধন।

তার স্ত্রীর নামে অস্থাবর সম্পদ রয়েছে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ৩৫ লাখ ২৬ হাজার ৭০০ টাকা, স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত ও তালিকাভুক্ত নয় এমন কোম্পানির ৫৭ লাখ ২৮ হাজার ১৩৮ টাকার শেয়ার, ৫ লাখ টাকার স্বর্ণালংকার, ৭৯ হাজার টাকার ইলেকট্রনিক সামগ্রী, ৫৫ হাজার টাকার আসবাবপত্র ও ৪ লাখ ২২ হাজার ৫৬৫ টাকা।

নিজের নামে স্থাবর সম্পদ হিসেবে কৃষি জমি ৫ একর, ১০ লাখ ৪৭ হাজার ৫০০ টাকা মূল্যের ৪ দশমিক ৬৬ শতকের একটি প্লট ও উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত ২ তলা বিল্ডিং রয়েছে।

মঞ্জুর কাদির শাফির বাড়ি উপজেলার রফিপুর গ্রামে। তার পিতার নাম মহিবুর রহমান শাফি। তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। তার কোনো ব্যাংক ঋণও নেই। তিনি সদ্য প্রয়াত গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট ইকবাল আহমদ চৌধুরীর ছোট ভাই।

অপর প্রার্থী মো. সফিক উদ্দিন উপজেলার ঢাকা দক্ষিণের মেসার্স সফিক প্রোপার্টি নামের হাউজিং ব্যবসায়ী। কিন্তু, তার হাউজিং ব্যবসা থেকে কোনো আয়ের তথ্য নেই। তিনি কৃষি খাত থেকে বার্ষিক ৫০ হাজার টাকা ও অন্যান্য খাত থেকে ৩ লাখ টাকা আয় করেন।

অস্থাবর সম্পদ হিসেবে নিজের নামে নগদ ২ লাখ টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ১ লাখ টাকা ও অন্যান্য হিসেবে ৯০ হাজার টাকা রয়েছে। তার স্ত্রীর নামে ১৫ ভরি স্বর্ণ রয়েছে বলে হলফনামায় উল্লেখ করেছেন।

স্থাবর সম্পদ হিসেবে নিজের নামে ৪ শতক কৃষি জমি এবং ১৬ লাখ ৯০ হাজার টাকা মূল্যের ১৬৪ শতক অকৃষি জমি রয়েছে। মো. সফিক উদ্দিন উপজেলার কানিশাইল গ্রামের বাসিন্দা।

তার বাবার নাম মো. মহিব উদ্দিন। তিনি দন্ডবিধি ৩০২ ধারায় হত্যা মামলার আসামি ছিলেন। সিলেট দায়রা মামলা নম্বর ২০/০৪। এ মামলায় তিনি বেকসুর খালাস পেয়েছেন। বর্তমানে তার নামে কোনো মামলা নেই।

তার নামে কোনো ঋণও নেই। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজন’র সিলেট বিভাগীয় সমন্বয়ক ফারুক মাহমুদ চৌধুরী বলেন, নির্বাচন কমিশনের আইনে বলা আছে, হলফনামায় তথ্য গোপন করা বা মিথ্যা তথ্য দিলে এবং নির্বাচনের পরে তা প্রমাণিত হলে ওই প্রার্থীর প্রার্থীতা বাতিল হয়ে যাবে।

এজন্যে হলফনামায় দেওয়া তথ্যগুলো নির্বাচন কমিশন থেকে যাচাই বাছাই করা প্রয়োজন। এটি করা গেলে এক্ষেত্রে স্বচ্ছতা বাড়বে।

নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৪০ হাজার ১০০ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ২২ হাজার ৯৭ জন ও ১ লাখ ১৮ হাজার ৩ জন নারী ভোটার রয়েছেন। মোট ভোট কেন্দ্র ১০২টি এবং ভোট কক্ষ সংখ্যা ৬২৫টি।

সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও গোলাপগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. সাইদুর রহমান জানান, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহণে নির্বাচন কমিশন প্রস্তুত রয়েছে।

প্রসঙ্গত, গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট ইকবাল আহমদ চৌধুরী গত ২৯ জানুয়ারি মারা যান। তার মৃত্যুতে গোলাপগঞ্জ উপজেলার চেয়ারম্যান পদের উপ-নির্বাচনের জন্যে গেল ২৫ এপ্রিল তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।

Editor Incharge: Faisal Ahmed Bablu

Office : 9-C, 8th Floor, Bluewater Shopping City, Zindabazar, Sylhet-3100

Phone: 01711487556, 01611487556

E-Mail: sylhetsuninfo@gmail.com, newssylhetsun@gmail.com

Publisher: Md. Najmul Hassan Hamid

UK office : 736-740 Romford Road Manor park London  E12 6BT

Email : uksylhetsun@gmail.com

Website : www.sylhetsun.net