অবিশ্বাস্যভাবে কমেছে তরমুজের দাম, এখন ফেলা হচ্ছে সুরমায়

সুজিত দাশ:: || ২০২২-০৫-১৫ ১৭:৪৬:২৭

image
রমজানে সন্তানকে একটি তরমুজ কিনে দিতে চেয়েছিলেন রিকশা চালক আব্দুস সালাম। তখন তরমুজের দাম শুনে চোখ কপালে উঠে তার। অপেক্ষায় ছিলেন দাম কমার। আর এভাবে কমবে সেটি ছিল তার ধারণার বাইরে। গত কয়েকদিনে তার সন্তানদের জন্য ৫ টি তরমুজ কিনে খাইয়েছেন। শনিবার বিকালে এই প্রতিবেদক তার রিকশা চড়েন। আর তখনই তার দুঃখের কথা জানান এ প্রতিবেদককে। চালক সালাম জানান গত কয়েকদিনে ট্রাক ভর্তি তরমুজ সুরমায় ফেলতে দেখেছেন তিনি। তার বক্তব্যে্র সূত্র ধরে খোজ নিলে প্রমানও মিলে। দেখা যায় বৃষ্টিতে ধস নেমেছে তরমুজের বাজারে। কয়দিন আগেও যে তরমুজ ২০০ থেকে ২৫০ টাকা ছিল সেই তরমুজ এখন বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। অন্যদিকে বৃষ্টির কারণে বাজারে ক্রেতা সমাগম একেবারেই কম থাকায় পঁচে যাচ্ছে শত শত তরমুজ। লসের পাল্লা ভারী করে সুরমা নদীতে পঁচা তরমুজ ফেলছেন ব্যবসায়ীরা। কিছুদিন আগে প্রচন্ড গরম আর রমজান দুই মিলে চড়া দাম ছিল তরমুজের বাজারে। সিলেটে ৪০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে রসালো তরমুজ। কিন্তু মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে এই তরমুজই ব্যবসায়ীদের জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। রোববার সকালে নগরের বৃহত্তম পাইকারি ফলের আড়ৎ কদমতলীতে গিয়ে দেখা যায় বাজারে তরমুজের বিপুল পরিমাণ সরবরাহ রয়েছে। কাঁঠাল, লিচু, আম বা অন্যান্য ফলের তুলনায় তরমুজের ক্রেতা একেবারেই কম। বাজারের মধ্যেই ফাঁকা জায়গায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পরে আছে পঁচা তরমুজ। ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বললে তারাও স্বীকার করেন লোকসানের কথা। আড়তদার ব্যবসায়ী গৌতম পালের সাথে কথা বললে তিনি জানান, বাজারে এখন সবচাইতে সস্তা ফল তরমুজ। বৃষ্টির কারণে খুচরা ব্যবসায়ীরা তরমুজ বিক্রি করতে পারতেছেন না। অনেকে একদিনের তরমুজ পাঁচ দিনে বিক্রি করছেন। কিন্তু বাজারে ঠিকই প্রতিদিন আমদানি হচ্ছে। ফলে মজুদের পরিমাণ বেড়ে তরমুজ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অনেকে তরমুজ ফেলে দিচ্ছেন। এতে ব্যবসায়ীদের লস হচ্ছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিক্রি করতে না পারলে অবশ্যই লস। আবার মজুদের তুলনায় বিক্রি কম হলে অবশিষ্ট থাকা তরমুজগুলো পানির দরে বিক্রি করতে হয়। সেক্ষেত্রেও আমাদের লস গুনতে হচ্ছে। জানা যায়, রমজান মাসে ভালো মানের বড় তরমুজ প্রতি ১০০ পিস পাইকারি বাজারে বিক্রি হয়েছে ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকায়। যার বর্তমান বাজারমূল্য মাত্র ৬ থেকে ৮ হাজার টাকা। অন্যদিকে ছোট বা ক্যাট তরমুজ রমজান মাসে প্রতি ১০০ পিস বিক্রি হয়েছে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকায়। যার বর্তমান বাজারমূল্য মাত্র দেড় থেকে ২ হাজার টাকা। এদিকে খুচরা বাজারেও পানির দামে বিক্রি হচ্ছে তরমুজ। রমজান মাসে যেখানে প্রতিটি বড় তরমুজের দাম ছিল ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা। সে তরমুজ এখন বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১৫০ টায়। ছোট বা ক্যাট তরমুজ যার পূর্ব মূল্য ২০০ থেকে ৩০০ টাকা ছিল, সে তরমুজ এখন বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৮০ টাকা করে। সিলেটের জিন্দাবাজারে ভাসমান ফল বিক্রেতা রাফাত আহমদ জানান, বাজারে তরমুজের অভাব নাই। অভাব শুধুই কাস্টমারের। ক্রেতাদের আনাগোনা বেশি থাকলে এই সিজনে ভালো ব্যবসা করতে পারতাম। বন্দরবাজারের লালদিঘীর পাড় এলাকায় তরমুজ কিনতে আসা দুলাল মিয়ার সাথে কথা বললে তিনি বলেন, রমজানে যে তরমুজ ৫৫০ টাকা দিয়ে কিনেছিলাম, সে একই তরমুজ আজ ১২০ টাকা দিয়ে কিনলাম। এই সব ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারণে হইছে। যাইহোক এখন তরমুজ খাওয়ার সময়। এরচাইতে কম দামে কখনও পাওয়া যায়নি। আর ব্যবসায়ীদের এই লসকে আমি লস বলবো না, এটা তাদের অতি লোভের ফসল।

Editor Incharge: Faisal Ahmed Bablu

Office : 9-C, 8th Floor, Bluewater Shopping City, Zindabazar, Sylhet-3100

Phone: 01711487556, 01611487556

E-Mail: sylhetsuninfo@gmail.com, newssylhetsun@gmail.com

Publisher: Md. Najmul Hassan Hamid

UK office : 736-740 Romford Road Manor park London  E12 6BT

Email : uksylhetsun@gmail.com

Website : www.sylhetsun.net