ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে উত্তাল সমুদ্র। টানা ৫ দিন ধরে সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হচ্ছে। এতে করে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
রাস্তাঘাটে চলতে যেমন পথচারীদের অসুবিধা হচ্ছে তেমনি ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন ব্যবসায়ীরাও। পদে পদে বাধার মুখে পড়ছেন সাধারণ খেটে-খাওয়া মানুষেরা।
চলমান অবস্থা আরও সপ্তাহখানেক থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। গ্রীষ্মের মধ্যভাগে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে স্থবির হয়ে পড়ে নগরজীবন।
রাস্তাঘাটে ছিল না প্রতিদিনের যান ও জন চলাচলের ব্যস্ততা। টানা বৃষ্টির ফলে সবচেয়ে বেশী বিড়ম্বনার মুখে পড়েন খেটে খাওয়া মানুষেরা।
এছাড়াও রাস্তায় নিয়মিত যান চলাচল কম থাকায় অফিসগামী ও অফিসফেরতসহ প্রয়োজনীয় কাজে বের হওয়া লোকেরা পড়েন বিপাকে।
এছাড়াও, এই বৃষ্টির ফলে নগরীর নিম্নাঞ্চলসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে সৃষ্টি হয় সাময়িক জলাবদ্ধতা। নগরীর বেশীরভাগ নিম্নাঞ্চলে সৃষ্ট জলবদ্ধতায় বেশ দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্থানীয়দের।
নগরীর প্রাণকেন্দ্র জিন্দাবাজার পয়েন্টে সংস্কারের অপেক্ষায় থাকা জল্লারপারগামী রাস্তাটি এমনিতেই চলাচলের অনুপযোগী।
তার উপর এই বৃষ্টির ফলে খানখন্দে ভরা রাস্তায় পানি জমে লোক চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করে। এছাড়া ধোপাদিঘীরপার, নাইওরপুল, মিরাবাজার, পাঠানটুলা, লন্ডনীরোড, সাগরদীঘিরপার, সুবিদবাজার,
শিবগঞ্জ, মেজরটিলা ও উপশহরসহ নগরীর বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে দেখা যায় প্রায় একই চিত্র। সরেজমিনে দেখা গেছে, দক্ষিণ সুরমা উপজেলার লাউয়াই, বঙ্গবীর রোডসহ সেখানকার বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
এই রোডের কোথাও হাঁটু পরিমাণ পানি জমে যায়। অনেক দোকানেও পানি উঠে যায়। জলাবদ্ধতার কারণে যানবাহনের পাশাপাশি পথচারীদেরও দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
সিএনজি অটোরিক্সা চালক মাহমুদ হোসেন জানান, ওই এলাকায় সিলেট সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে নতুন ড্রেন নির্মাণ করা হচ্ছে।
কিন্তু, ড্রেনের নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় ওই এলাকায় প্রচন্ড জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।
সিলেট আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী জানান, ঘূর্ণিঝড় অশনির কারণে বৃষ্টি দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে।
আগামী ১৮-১৯ মে পর্যন্ত এই বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে। শুক্রবার সারাদিন ভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে এবং রাতের দিক তুলনামূলক কম বৃষ্টি হবে। আবার শনিবার দিনে হালকা ও রাতে ভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে। রোববার থেকে আবার থেকে হালকা ও মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাত হবে।
এদিকে বৃষ্টিপাতের কারণে চরম বিপাকে সাধারণ মানুষ। বন্দরবাজারে ভাসমান সবজি বিক্রেতা আব্দুল্লাহ জানান, এই বৃষ্টি আমাদের জন্য কাল হয়ে এসেছে। বিশ্বনাথ থেকে এখানে এসে ব্যবসা করি। প্রতিদিনের সবজি প্রতিদিন বাধ্যতামূলক বিক্রয় করে যেতে হয়, নইলে পচে যায়। কিন্তু কয়েকদিনের বৃষ্টিতে ক্রেতা সমাগম একেবারেই নাই।
দাম দিয়ে সবজি কিনে প্রতিদিন রাতে এসে কমদামে বিক্রয় করে যাচ্ছি। প্রতিদিনই লস গুণতে হচ্ছে আমাকে। জিন্দাবাজারে পড়শী অপটিকসের স্বত্বাধিকারী ইন্দ্রজিৎ দাস জানান, জিন্দাবাজার সিলেটের প্রাণ। এখানে দেশের সকল প্রান্তের লোকজন দেখা যায়।
পর্যটক হোক বা স্থানীয় সবার আনাগোনায় মুখরিত এই এলাকায় কমবেশি ভালই ব্যবসা হয়! কিন্তু কয়েকদিনের বৃষ্টিতে ব্যবসা একেবারে নেই বললেই চলে। একেতো ঈদের শেষ সময় অন্যদিকে বৃষ্টি, সব মিলিয়ে একটা হতাশার মধ্যে দিন কাটাচ্ছি আমরা।
এদিকে টানা বৃষ্টিতে হঠাৎ পরিবর্তন এসেছে তাপমাত্রায়। কয়েকদিন আগের অত্যধিক গরম আর এখনের বৃষ্টিজনিত ঠান্ডার কারণে বাড়ছে জ্বর-সর্দিসহ সাধারণ অসুখ-বিসুখ।
নাপা, প্যারাসিটামল বা হিস্টাসিন জাতীয় ঔষধ কিনতে মানুষ ভিড় জমাচ্ছে পাড়া-মহল্লা বা আশপাশের ফার্মেসীতে।
বুধবার (১২ মে) সন্ধ্যা ৬টার দিকে নগরীর মদিনা মার্কেট এলাকায় মাইক্রো-ল্যাব ডায়াগনস্টিক সেন্টার এন্ড ফার্মেসীতে ঘন্টাখানেকের মধ্যে প্রায় ৮-১০ জন ক্রেতা আসতে দেখা যায়।
তারা সবাই জ্বর, সর্দি, কাশির ঔষধ নিয়ে যান। ফার্মেসীর পরিচালক মিশন দাস জানান, আজ দুদিন ধরে ঠান্ডা জনিত অসুখের ঔষধ তুলনামূলক বেশি বিক্রি হচ্ছে।
বৃষ্টির কারণে জ্বরের পরিমাণ বাড়ছে অন্যদিকে সিজনাল বা আবহাওয়ার পরিবর্তনজনিত কারণতো আছেই।
Editor Incharge: Faisal Ahmed Bablu
Office : 9-C, 8th Floor, Bluewater Shopping City, Zindabazar, Sylhet-3100
Phone: 01711487556, 01611487556
E-Mail: sylhetsuninfo@gmail.com, newssylhetsun@gmail.com
Publisher: Md. Najmul Hassan Hamid
UK office : 736-740 Romford Road Manor park London E12 6BT
Email : uksylhetsun@gmail.com
Website : www.sylhetsun.net